আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ৮

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ৮ Click This Link রায়হান শব সমাধিস্থকরণ বনাম শবদাহ : একটা সময় ছিল যখন লোকসংখ্যা ছিল অনেক কম কিন্তু সেই তুলনায় গাছ-পালা তথা জ্বালানি ছিল অনেক বেশী। কিন্তু বর্তমানে লোকসংখ্যা যেমন অনেক বেশী তেমনি আবার দিন দিন গাছ-পালা ও জ্বালানিও হ্রাস পাচ্ছে। এখানে লজিক্যাল, রাশনাল, মানবিক, ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে শব সমাধিস্থকরণ ও শবদাহ এর সুবিধা-অসুবিধা সংক্ষেপে তুলে ধরা হবে। - ব্যতিক্রম কেস ছাড়া খুব অল্প খরচে একটি মৃতদেহকে সমাধিস্থ করা যায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে খরচ লাগে না বললেই চলে।

অন্যদিকে একটি মৃতদেহকে আগুনে পুড়িয়ে ছাইভস্ম করতে প্রচুর জ্বালানীর দরকার হয়। - মাটিতে যে জৈবিক উপাদান আছে সেগুলো মানুষের দেহেও আছে। ফলে মৃতদেহকে সমাধিস্থ করলে মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। আফটার অল, কাদা-পানি থেকেই নাকি মানুষের সৃষ্টি। অন্যদিকে মৃতদেহকে আগুনে পুড়িয়ে ছাইভস্ম করলে জৈবিক উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

- মৃতদেহকে সমাধিস্থ করলে পরিবেশের কোন ক্ষতিসাধন হয় না। অন্যদিকে মৃতদেহকে আগুনে পুড়িয়ে ফেললে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। - মৃতদেহকে সমাধিস্থকরণ একটি মানবিক ও বিনাইন প্রক্রিয়া। অন্যদিকে মৃতদেহকে আগুনে পোড়ানো একটি অমানবিক ও ভয়ঙ্কর প্রক্রিয়া। শিশু বাচ্চাদের উপর এর বিরূপ প্রভাবও পড়তে পারে।

- বৃষ্টি-বাদলের দিনেও মৃতদেহকে সমাধিস্থ করা যায়। কিন্তু বৃষ্টি-বাদলের দিনে মৃতদেহকে আগুনে পোড়ানো খুবই কঠিন কাজ। - সর্বোপরি, মৃতদেহকে সমাধিস্থকরণের ক্ষতিকর কোন দিক নেই। সমাধিস্থকরণের জন্য জায়গা লাগলেও পরবর্তীতে সেই জায়গাকে আবার রিসায়ক্লিং করা যায়। তাছাড়া কবরস্থান ছাড়াও তো অনেক পতিত জায়গা-জমি পড়ে আছে, তাই না।

ফলে এটি মোটেও কোন সমস্যা নয়। অন্যদিকে মৃতদেহকে পোড়ানোর সবগুলো দিকই ক্ষতিকর। এরকম একটি অবৈজ্ঞানিক, ও ক্ষতিকর প্রথাকে এড়িয়ে গিয়ে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করার উদ্দেশ্যে মৃতদেহকে কাটা-ছেঁড়ার জন্য হাসপাতালে দেওয়ার কথা বলে ‘প্রগ্রেসিভ’ প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। ওয়েল, মৃতদেহকে কাটা-ছেঁড়ার জন্য হাসপাতালে দিতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা থেকে যায়।

যেমন : (১) কাটা-ছেঁড়া করার পর মৃতদেহকে কিন্তু সৎকার করতেই হবে। হাসপাতালের মধ্যে তো আর কাটা-ছেঁড়া দেহ ফেলে রাখা যায় না বা বাতাসে উড়িয়েও দেওয়া যায় না! (২) প্রতিদিন পৃথিবীতে হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। সবাইকে যদি কাটা-ছেঁড়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে হাসপাতালের অবস্থাটা একবার ভেবে দেখুন! তাছাড়া গ্রাম-গঞ্জ ও দূর-দূরান্ত থেকে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যেয়ে সেখানে থেকে আবার নিয়ে আসা প্রচুর ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার, যেটা বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে একদমই অসম্ভব। শহর এলাকার ও হাসপাতালের আশে-পাশে থেকে মাঝে-মধ্যে দু-একটি মৃতদেহকে হয়ত কাটা-ছেঁড়ার জন্য হাসপাতালে পাঠানো যেতে পারে। অতএব, বাস্তবতাকে এড়িয়ে গিয়ে আবেগ ও কৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রগ্রেসিভ প্রমাণ করতে চাইলেই তো আর প্রকৃত প্রগ্রেসিভ হওয়া যায় না।

আইডল ওয়ার্শিপ : অনেকে আইডল ওয়ার্শিপকে স্রেফ ‘বিনাইন’ একটি রিচুয়াল বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। দাবিটা সত্য হলে আমার কিছু বলার ছিল না। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই অংশে লজিক্যাল, রাশনাল, মানবিক, ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আইডল ওয়ার্শিপের উপর অতি সংক্ষেপে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরা হবে : (১) প্রতি বছর সারা পৃথিবী জুড়ে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে কাদা, পানি, রঙ, ও কেমিক্যালস্‌ দিয়ে আইডল বানিয়ে কয়েকদিন ওয়ার্শিপ করে সেই আইডলগুলোকে আবার পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়! তার মানে প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার স্রেফ পানিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে! অথচ সেই ধর্মেরই মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করছে। এই রিচুয়াল তাহলে কতটা বিনাইন ও মানবিক? এমনকি আইডলগুলো বানাতে প্রচুর শ্রমেরও দরকার হয়। (২) বিভিন্ন রঙ ও কেমিক্যালস্‌ দিয়ে আইডল বানিয়ে পানিতে ডুবানোর ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

যেমন : পানি দুষিত হয়; মাছের ক্ষতি হয়; শষ্যের ক্ষতি হয়; মানুষ সেই পানি ব্যবহার করলে তাদেরও ক্ষতি হয়; ইত্যাদি। এরকম একটি অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক, ও ক্ষতিকর রিচুয়ালকেও পাশ কেটে হজের পয়সা গণনা করে মুসলিমদেরকে উল্টোদিকে অমানবিক বানানোর চেষ্টা করা হয়! ওয়েল, প্রথমত, পিলগ্রিমেজ রিচুয়াল প্রায় সবগুলো ধর্মেই কম-বেশী আছে। ফলে হজ্জ্ব ব্যতিক্রম কিছু নয়। দ্বিতীয়ত, কোরান অনুযায়ী হজ্জ্ব হচ্ছে এই মহাবিশ্বের ক্রিয়েটরের তরফ থেকে নির্দেশিত একটি রিচুয়াল। সেভাবেই বিশ্বাস করা হয়।

তৃতীয়ত, হজে যেয়ে কেহ একটি পয়সাও পানিতে ফেলে দেয় না। হজের ক্ষেত্রে পয়সা সার্কুলেট করে মাত্র। কারো না কারো কাছে সেই পয়সা থেকেই যায়। প্রয়োজনে সেই পয়সাকে মানুষের জন্যই আবার ব্যবহার করা হয়, যদিও সেটা সঠিকভাবে হয়ত হয় না। কিন্তু মোদ্দা কথা হচ্ছে, এক্ষেত্রে পয়সা এক হাত থেকে অন্য হাতে সার্কুলেট করে মাত্র।

এমনকি কোরবানীর পশুর মাংসও মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গরীব-মিসকীনদের মাঝে বিতরণও করা হয়। পশুর চামড়া ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার করা হয়। হাড়-হাড্ডি থেকে জৈব সার তৈরী করা হয়। ফলে হজের ক্ষেত্রে পয়সা একদম পানিতে ফেলে দেওয়ার কোন ব্যাপার-স্যাপারই নেই।

সারা পৃথিবী থেকে বিল গেটস্‌ ও কিছু মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানির পকেটেও তো প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার যাচ্ছে। এমনকি প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে শুধুমাত্র মজা লোটার জন্য বিভিন্ন দেশ ভ্রমণও করছে। তাহলে কি এই পয়সাগুলো স্রেফ পানিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে? না, তা কিন্তু মোটেও নয়। তবে হজের কনসেপ্ট সম্পূর্ণ আলাদা। হজের অন্যতম একটি লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের মন থেকে উঁচু-নীচু, ধনী-গরীব, বর্ণবাদ, জাতিভেদ, ইত্যাদি রোগ-ব্যধি দূর করা।

পাশাপাশি আরো কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও আছে। অতএব, হজ্জ্ব পিলগ্রিমেজ একটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও মানবিক রিচুয়াল; অমানবিক, ক্ষতিকর, বা অন্ধ কোন রিচুয়াল নয়। ফিমেল ইনফ্যান্টিসাইড : বিজ্ঞানের অভাবে একটা সময় পর্যন্ত ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নারী শিশুদেরকে জীবন্ত হত্যা করা হত। কিন্তু আজ বিজ্ঞানের বদৌলতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। এ-ই যা পার্থক্য! কোন কোন জাতির মধ্যে ধর্মের প্রভাবে এবং কোন কোন জাতির মধ্যে ওয়ান চাইল্ড পলিসির কারণে প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন নারী শিশুকে নীরবে-নিভৃতে হত্যা করা হচ্ছে - যাকে বলে নীরব টেররিজম ও গণহত্যা।

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, কারো কারো জন্য মডার্ন বিজ্ঞান একটি অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে! "And when the female infant buried alive is asked: For what crime she was killed?" (Qur'an 81:8-9) "When one of them gets a baby girl, his face becomes darkened with overwhelming grief. Ashamed, he hides from the people, because of the bad news given to him. He even ponders: should he keep the baby grudgingly, or bury her in the dust. Miserable indeed is their judgment." (Qur'an 16:58-59) "Do not kill your children for fear of poverty; We give them sustenance and yourselves (too); Verily the killing of them is a great sin." (Qur'an 17:31) দেখলেন তো, চৌদ্দশ’ বছর পরও কোরান একদম লিভিং মিরাকল হয়ে আছে। এই পৃথিবীর বুকে কোরানই সম্ভবত একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে নারী শিশু হত্যাকে সরাসরি কনডেম করা হয়েছে। অথচ এই দিনের আলোর মত একটি সত্যকেও কিছু অন্ধ বাইগট অস্বীকার করে। এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, সেই সময় ছিল ট্রাইবালিজমের যুগ। ফলে অনেক ট্রাইবের মধ্যে হয়ত কিছু কিছু ট্রাইবের লোকজন নারী শিশুকে হত্যা করত।

তাছাড়া শতভাগ নারী শিশুকে হত্যা করা হত না নিশ্চয়। জন্মান্তরবাদ : কিছু কিছু ধর্মে পুনঃ পুনঃ জন্ম-মৃত্যু তথা জন্মান্তরবাদ নামক ফিলসফিতে বিশ্বাস করা হয়। এই ফিলসফি অনুযায়ী কর্মফলের উপর ভিত্তি করে একজন মানুষের আত্মা অন্য কোন জীবের দেহে স্থানান্তরিত হয়। এই আত্মার স্থানান্তরকে পূর্ববর্তী জীবনের পাপ বা অপরাধের ফলস্বরূপ শাস্তি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। অর্থাৎ একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগী, সাপ, কেঁচো, ইঁদুর, কুকুর, বিড়াল, শূকর, বাঘ, ভালুক, হায়েনা, কীট-পতঙ্গ, উদ্ভিদ, বা অন্য যে কোন মানুষ অথবা জীবের দেহে স্থানান্তরিত হতে পারে; এবং এর বিপরীতটাও সত্য।

এই ফিলসফি অনুযায়ী প্রত্যেক জীব-জন্তু কোন না কোন ভাবে ইভিল মানুষের পাপ বা অপরাধের বোঝা বহন করছে! তার মানে ইভিল মানুষের পাপ বা অপরাধের শাস্তি নিরীহ পশু-পাখি ও উদ্ভিদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে! যে অপরাধ করেছে তাকে কিন্তু শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না! শাস্তি দেওয়া হচ্ছে অন্য কাউকে! এই ফিলসফি তাহলে কতটুকু লজিক্যাল, রাশনাল, ও মানবিক? একজনের অপরাধের শাস্তি অন্য কারো উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে কেন! তাহলে কি মানুষকে অবাধে অপরাধ করার লাইসেন্স দেওয়া হল না? আর এ জন্যই মনে হয় ইসলামিক হেল’কে অমানবিক ও ভয়ঙ্কর বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে কোন কোন ধর্মকে ‘লাভিং’ ও ‘কাইন্ড’ বানানোর চেষ্টা করা হয়! মজার বিষয় হচ্ছে, একজন মানুষকে বলা হচ্ছে যে, সে তার পূর্ববর্তী জীবনের পাপ বা অপরাধের ফলস্বরূপ ‘এই-সেই’ ঘরে জন্ম নিয়েছে কিন্তু তাকে কোন প্রমাণ দেওয়া হচ্ছে না। ওয়েল, সকল প্রকার বিশ্বাসের স্বপক্ষে প্রমাণ দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু দেখতে হবে সেই বিশ্বাসটি অমানবিক বা ক্ষতিকর কি-না। যে কোন যুক্তিবাদী ও সচেতন মানুষ স্বীকার করবেন যে, জন্মান্তরবাদ একটি সম্পূর্ণ ইরাশনাল ও অমানবিক ডকট্রিন।

কারণ এই ডকট্রিনের উপর ভিত্তি করে হাজার হাজার বছর ধরে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে কিছু সুবিধাবাদী মানুষের দাস-দাসী (Sub-human) বানিয়ে রাখা হয়েছে। এদেরকে বলা হয়, তোমরা পূর্ববর্তী জীবনের পাপ বা অপরাধের ফলস্বরূপ ‘এই-সেই’ ঘরে জন্ম নিয়েছ। আর ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী তোমরা আমাদের দাস-দাসী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য। তোমরা যদি এই জীবনে ভালভাবে দাস-দাসীর কাজ কর তাহলে পরবর্তী জীবনে ‘বিশেষ’ একটি ঘরে জন্ম হবে। আর সেই ‘বিশেষ’ ঘরে জন্ম নিলে তোমাদেরকে আর দাস-দাসীর কাজ করতে হবে না।

কিন্তু বেচারাদের আর কখনোই সেই ‘বিশেষ’ ঘরে জন্ম নেওয়া হয় না! সেই ‘বিশেষ’ ঘরের সুবিধাবাদী লোকজনও কখনো তাদের পাপ বা অপরাধের ফলস্বরূপ ‘এই-সেই’ ঘরে জন্ম নেয় না! অধিকন্তু, এই ফিলসফি অনুযায়ী প্রত্যেক নিরীহ জীব-জন্তু ও উদ্ভিদ কোন না কোন ভাবে ইভিল মানুষের পাপ বা অপরাধের বোঝা বহন করছে! নিরীহ জীব-জন্তু ও উদ্ভিদদের প্রতি চরম ইনসাল্ট নয় কি! এর চেয়ে অমানবিক ও ইরাশনাল ডকট্রিন পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি আছে কি-না সন্দেহ। অথচ এটিই আবার কোন কোন ধর্মের একদম মৌলিক ফিলসফি বা বিশ্বাস! আচ্ছা পাঠক, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ, ও উদ্ভিদদের দেখে কি কোন যুক্তিবাদী মানুষের ক্ষণিকের জন্যও মনে হতে পারে যে, তারা ইভিল মানুষের পাপ বা অপরাধের বোঝা বহন করছে! তারা ইভিল মানুষের আত্মা বহন করছে! আদৌ কি বিশ্বাসযোগ্য! হিটলার-স্ট্যালিনের আত্মা আবার কোন্‌ পশু-পাখি বা উদ্ভিদ বহন করছে, কে জানে! বিন লাদেন, ঠেররিস্ট, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, ও সুইসাইড বোম্বারদের আত্মাই বা কোন্‌ পশু-পাখি বা উদ্ভিদ বহন করব, সেটাই বা কে জানে! কাউ গড : কোন কোন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে গাভীকে গড হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। কিন্তু গড বলতে সবাই এই মহাবিশ্বের ক্রিয়েটরকে বুঝে থাকে। এবার তাদেরকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তোমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী গাভী কি তাহলে এই মহাবিশ্বের ক্রিয়েটর? তখন তারা থত-মত খেয়ে নড়ে-চড়ে বসে হয়ত বলবে, “না! না! না! আমরা গাভীকে এই মহাবিশ্বের ক্রিয়েটর হিসেবে বিশ্বাস করি না!” ওয়েল, তোমরা তাহলে গাভীকে গড বল কেন? গাভীকে গাভী বলতে সমস্যাটা কোথায়? আবারো কিছুটা নড়ে-চড়ে বসে হয়ত বলবে, “আমরা গাভীকে আসলে দেবতা হিসেবে বিশ্বাস করি, গড হিসেবে নয়। ” ভাল কথা, তাহলে গড ও দেবতার মধ্যে পার্থক্য কী এবং এতগুলো প্রাণী থাকতে গাভীকে দেবতা বানানোর কারণটা কী? তখন তারা হয়ত বলবে, “গাভী মানুষের অনেক উপকারে আসে।

যেমন গাভী দিয়ে জমি চাষ করে ফসল ফলানো যায়। ” ওয়েল, মহিষ দিয়েও তো একই কাজ করা যায়। তাছাড়া বিজ্ঞান ও টেকনোলজির যুগে কলের লাঙ্গল তো তোমাদের দেবতাদেরকে প্রতিস্থাপন করে ফেলেছে! এই প্রশ্নগুলোর যৌক্তিক কোন উত্তর না দিতে পেরে অবশেষে হয়ত বলবে, “আমরা গাভীকে আসলে ‘মা’ হিসেবে বিশ্বাস করি। ” কিন্তু কেন? “ওয়েল, মা যেমন দুধ দেয় তেমনি গাভীও দুধ দেয়। আর দুধ হচ্ছে একটি পুষ্টিকর খাবার।

” তা গাভী ছাড়া অন্যান্য প্রাণীরাও তো দুধ দেয়! হাঁস-মুরগীরা ডিম দেয়! ডিমও একটি পুষ্টিকর খাবার! তাছাড়া তোমরা তোমাদের মায়ের বাছুরকে অর্ধাহারে-অনাহারে রেখে সেই মায়ের দুধ চুরি করে নিজেরা খাও এবং বিক্রি করে পয়সাও কামাও। এমনকি তোমরা তোমাদের মায়ের ঘাড়ে জোর করে লাঙ্গল-জোঁয়াল চাপিয়ে দিয়ে জমি চাষ করে নাও! মায়ের প্রতি এ ক্যামন দরদ! হাজার হাজার বছর ধরে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে পায়ের নীচে দলিত-মথিত করে রেখে বিশেষ একটি পশুর প্রতি দরদকে যে কী বলা যেতে পারে কে জানে! এই বিষয়টা উত্থাপন করার পেছনে আরেকটি কারণ হচ্ছে, বিশেষ কিছু ধর্মাবলম্বী যারা গরুর মাংস খায় তাদের বিরুদ্ধে একটি দেশে হেইট ম্যানুফ্যাকচার করা হয়। চিন্তা করুন, আগামীকাল থেকে সবাই যদি যার যার ইচ্ছেমত শতভাগ পশু-পাখিকে গড-দেবতা-মা-বাবা হিসেবে বিশ্বাস করা শুরু করে তাহলে বাস্তব অবস্থাটা কেমন দাঁড়াবে! পৃথিবীটা অতি সত্ত্বর কুরুক্ষেত্রে পরিণত হয়ে যাবে না! যারা গরুর দুধ চুরি করে বা গরুকে হত্যা করে তাদের সম্পর্কে বেদে কী লিখা আছে দেখুন : "The fiend who steals the milch-cow's milk away, O Agni, tear off the heads of such with fiery fury…. If one would glut him with the biesting, Agni, pierce with thy flame his vitals as he meets thee. Let the fiends drink the poison of the cattle; may Aditi cast off the evildoers. May the God Savitar give them up to ruin, and be their share of plants and herbs denied them." (Rig-Veda 10.87.16) "If thou destroy a cow of ours… We pierce thee with this piece of lead…" (Atharva-Veda I.16.4) এখানে গরুর দুধ ‘চুরি’ করা বলতে যে ঠিক কী বুঝানো হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। কারণ গরুকে জিজ্ঞেস করে তো আর তার থেকে দুধ নেওয়া হয় না! তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, বেদ অনুযায়ী যারা গরুর দুধ চুরি করে ও গরুকে হত্যা করে তাদের মাথাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন (Beheading) করা সহ বিভিন্নভাবে শাস্তির কথা লিখা আছে এবং সেই সাথে তাদেরকে অভিশাপও দেওয়া হয়েছে। গোমাংস ভক্ষণকারীদের বিরুদ্ধে কি এমনি এমনি হেইট ম্যানুফ্যাকচার করা হয়! পাঁচ বিলিয়নেরও বেশী মানুষ সম্ভবত গরুর মাংস খায়।

বেদ অনুযায়ী তাদের অবস্থাটা একবার ভেবে দেখুন! মজার বিষয় হচ্ছে, গোমাংস ভক্ষণের জন্য বিশেষ কিছু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে হেইট ম্যানুফ্যাকচার করা হলেও সেই ধর্মেরই কিছু ফলোয়ার যে গোমাংস খায় এবং এমনকি সেই ধর্মেরই কিছু গড-দেবতারাও যে মাংস ও গোমাংস ভক্ষণ করতেন সেটা একদম চেপে যাওয়া হয়! বিশ্বাস না হলে দু-একটি প্রমাণ দেখুন (Rig-Veda 10:28:3, 10:86:14; Ramayana 2:20)। নোট : লেখাতে তথ্যগত কোন ভুল-ভ্রান্তি ধরিয়ে দিলে সংশোধন করে নেওয়া হবে। (চলবে …)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.