আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ৬

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ৬ Click This Link রায়হান আত্মা : প্রথমত, ‘আত্মা’ বা ‘সোল’ বলে কোন শব্দই হয়ত বৈজ্ঞানিক জার্নালে খুঁজে পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত, আত্মাকে যেহেতু ধরা, ছোঁয়া, দেখা, বা এমনকি অনুভব পর্যন্ত করা যায় না সেহেতু তাকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সঙ্গায়িত করাও সম্ভব নয়। ফলে ‘আত্মা’ বিষয়টি কোনভাবেই বিজ্ঞানের আওতাভুক্ত বা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। এর পরও যারা বিজ্ঞানের নামে আত্মার ‘অনস্তিত্ব’ প্রমাণ করার দাবি করেন তারা অপবিজ্ঞানী। জীবিত ও মৃত মানুষের মধ্যে যে সুস্পষ্ট একটা পার্থক্য আছে সেটা সবাই একবাক্যে স্বীকার করতে বাধ্য।

এই পার্থক্যকেই হয়ত আত্মা বা সোল বলা হয়। এটি একটি লজিক্যাল ও রাশনাল বিশ্বাস। এবার ধর্মগ্রন্থের ক্ষেত্রে আসা যাক। অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে আত্মাকে কীভাবে সঙ্গায়িত করা হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে কোরানে আত্মাকে “ক্রিয়েটরের কম্যান্ডমেন্ট” হিসেবে সঙ্গায়িত করা হয়েছে (১৭:৮৫)।

এও বলা হয়েছে যে, আত্মা সম্বন্ধে মানুষকে খুব সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে। ফলে কোরানে বর্ণিত আত্মা তথা ক্রিয়েটরের কম্যান্ডমেন্টকে যারা ‘অবৈজ্ঞানিক’ প্রমাণ করার চেষ্টা করেন তারা যেমন অপবিজ্ঞানী তেমনি আবার তারা বোকার স্বর্গেও বাস করেন! “তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। আপনি বলে দিন : রূহ হচ্ছে আমার রবের পক্ষ থেকে আসা একটি আদেশ। তবে এ বিষয়ে তোমাদের খুব সামান্যই জ্ঞান দান করা হয়েছে। ” (কোরআন ১৭:৮৫) এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, মানুষ মারা যাওয়ার পর ‘আত্মা’ বলে স্বতন্ত্র কিছু থাকে কি-না তাতে কিছু যায় আসে না।

কারণ কোরান অনুযায়ী এই মহাবিশ্বকে একদিন ধ্বংস করে আবারো নতুন করে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করা হবে এবং সেই সাথে মানুষকেও পুনরায় জীবিত করা হবে (২১:১০৪, ২৩:১২-১৬, ১৪:৪৮)। কিছু কিছু ধর্মে “ট্র্যান্স মাইগ্রেশন অফ সোল” এ বিশ্বাস করা হয়। অর্থাৎ তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী একজন মানুষ বা যে কোন জীবের মৃত্যুর পর তার আত্মা অন্য কোন জীবের দেহে স্থানান্তরিত হয়। যার জন্য এই ধর্মগুলোতে আত্মার উপর অনেক বেশী গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু কোরানে আত্মার উপর সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।

আদম-হাওয়া মিথ : বিগত কয়েক বছর ধরে একটি কমন বুলি দেখা যাচ্ছে। আর সেটি হচ্ছে, “বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে আদম-হাওয়া মিথকে অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করেছেন। কিন্তু মুসলিমরা বিজ্ঞানকে মেনে নিতে পারছে না! অতএব তারা ব্যাকডেটেড! ফান্ডামেন্টালিস্ট! ইত্যাদি! ইত্যাদি!” (নোট : যারা ‘ফান্ডামেন্টালিস্ট’ শব্দের প্রকৃত অর্থ বোঝেন তাদের কাছে এটি কিন্তু মোটেও খারাপ বা হিউমিলিয়েটিং কোন শব্দ নয়। ) কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, যখনই কোরান থেকে প্রমাণ সহ ‘আদম-হাওয়া মিথ’ দেখাতে বলা হয় এবং বিজ্ঞানীরা কীভাবে সেই মিথকে অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করেছেন তার প্রমাণ হাজির করতে বলা হয় তখনই পিছুটান দেওয়া হয়! কোরানে আসলে ‘হাওয়া’ বলে কোন নাম বা শব্দই নেই। আর ‘আদম’ শব্দের অর্থ হচ্ছে মানুষ, মাটি, ইত্যাদি।

কোরান অনুযায়ী প্রথম মানুষকে যেহেতু মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে সেহেতু তাকে হয়ত আদম বলা হয়েছে। যাহোক, এ পর্যন্ত দু-তিন বার কোরান পড়েও ‘আদম-হাওয়া মিথ’ যে কোরানের কোন্‌ চিপায় লুকিয়ে আছে সেটা এখন পর্যন্তও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি! আরো মজার বিষয় হচ্ছে, একদিকে বলা হচ্ছে কোরানে ‘আদম-হাওয়া মিথ’ আছে অন্যদিকে আবার বলা হচ্ছে বিজ্ঞানীরা সেই মিথকে অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করেছেন! লে-এ হালুয়া! মিথকে কি অবৈজ্ঞানিক বা ভুল প্রমাণ করা যায়!?! ইডা আবার কোন্‌ বিজ্ঞান! খায় নাকি পিন্দে! হ্যাঁ, ইডা হচ্ছে একটি অপবিজ্ঞান। কোরানকে একই সাথে ‘মিথ’ ও ‘অবৈজ্ঞানিক’ দুটোই প্রমাণ করার চেষ্টা চলছে! যাকে বলে, গাছেরও খাইতে চাই আবার তলারও কুড়াইতে চাই (I want to have my cake and eat it too!)। মুসলিমরা যে কত্তবড় অজ্ঞ ও মহা-বেকুব সেটা প্রমাণ করাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। একটি অপবিজ্ঞান বা মিথ দিয়ে আরেকটি ‘অপবিজ্ঞান’ বা ‘মিথ’কে ‘অবৈজ্ঞানিক’ প্রমাণ করে মুসলিমদেরকেই উল্টোদিকে অপবিজ্ঞানী, ব্যাকডেটেড, ফান্ডামেন্টালিস্ট, ইত্যাদি বলে হাসি-তামাসা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে! হায়রে (অপ)বিজ্ঞান! ৯/১১ নাটকের পর তোর মূল্য মিলিয়ন গুণ বেড়ে গেছে! ৯/১১ নাটক ও সি.আই.এ সৃষ্ট বিন লাদেনের বদৌলতে টম-ডিক-হ্যারিদের আজ ঈদের দিন! যাকে-তাকে কথায় কথায় বিন লাদেন ও টেররিজমের সাথে লিঙ্ক করার চেষ্টা চলছে।

হাব-ভাব দেখে মনে হচ্ছে বিন লাদেনের সাথে কাউকে কোনভাবে লিঙ্ক করতে পারলেই কেল্লা ফতে! এমনকি কোন কিছুকে বিন লাদেনের সাথে লিঙ্ক করলেই সেটা অটোমেটিক্যালি অবৈজ্ঞানিক বা ভুল প্রমাণিতও হবে! হায়রে (কু)যুক্তিবাদী! তাহলে তো মনে হচ্ছে বিন লাদেনকে সৃষ্টি করার আসলেই দরকার ছিল, কী বলেন পাঠক? (চলবে …)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.