আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাগরিক গান : যন্ত্রের ঘোড়ায় শিল্পের মড়া

ছোট্ট একটি স্বপ্ন; হয়তো আকাশ ছোঁবে একদিন...

মিলার কোমড়ের প্রতিভা অসাধারন! টেলিভিশন বাক্স অন করলে আমরা এখন সঙ্গীতকলা আর শিল্পকলার পার্থক্য এলোমেলো করে ফেলি! ডিজুস নির্মিত সোনার ছেলেরা যেমন খাঁটি সরিষার তেল ছেড়ে হেয়ার-জেলে উত্তরণ ঘটিয়েছেন নিজেদের; তেমনি সুরসাধক/গায়ক পদবিকে ক্ষ্যান্ত দিয়ে রকস্টার বনে গেছেন। আর এই উত্তরণের উত্তেজনায় আমাদের রকহিরোরা সঙ্গীতকলার সমস্ত সংগা নতুন করে দাঁড় করিয়েছেন। সম্ভবত ওনাদের কাছে চিল্লাচিল্লি আর যন্ত্রের দাপাদাপিই হলো বিশুদ্ধ সঙ্গীত সাধনা! একদা আমরা চিত্তের সুখে গান শুনতাম। গানকে ভাবতাম জীবন, জীবনকে গান। সে সময়ে গান ছিল জেলে-মাঝি-বাউল আর গাড়িয়ালের জীবন অভিজ্ঞতার শিল্পিত উপস্থাপন।

জলের সাথে, জমিনের সাথে, জেলের দুঃখের সাথে শব্দের মিতালিতে জন্ম নিত গান। আর এখন ভারী ভারী যন্ত্রের সাহায্যে তৈরী হচ্ছে সব গান। যে গানে থাকছে না গ্রামীণ শুভ্রতা আর সরলতার কথা। নাগরিক কথকতার তপ্ততায় হারিয়ে যাচ্ছ গ্রামীণ গানের নদী। যন্ত্র নিভর্র এই সব গান নপ্রভার মতো এসে মিলিয়ে যাচ্ছে ।

মিলিয়ে যেতে যেতে চারপাশে অজস্র গান হচ্ছে। ব্যবসা হচ্ছে। কোজ আপ ওয়ান হচ্ছে। । বিজ্ঞাপন হচ্ছে।

সঙ্গীত কলার নতুন নতুন বোদ্ধার উৎপাদন ঘটছে। বোদ্ধারা চৌর্যবৃত্তিতে হাত পাকাচ্ছেন (কিছু ব্যতিক্রমকে শ্রদ্ধা আর স্বীকার করে নেয়ার সাপেক্ষেই অস্বীকার করছি)। পুরান গানের তালে নতুন মালেরা কোমড় দুলিয়ে নাচছেন। শিল্পসংশ্লিষ্ঠ প্রযুক্তির সঠিক, ইতিবাচক ও উৎপাদনশীল ব্যবহারের ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণে যন্ত্র হয়ে উঠছে সঙ্গীতের শিল্পোত্তীর্ন হওয়ার পথে প্রধান বাঁধা। গানের শিল্পমানের প্রতি প্রতিশ্র“তিহীন যন্ত্রমানুষগুলোর উত্তেজিত বাক্য আর যন্ত্রায়িত শব্দের মিশেলে গড়ছে গানের মুখোশে চটুল বিনোদনের পন্য।

মইনউদ্দীন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.