আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আকাশের গল্প

তুমি আমার পাশে বন্ধু হে বসিয়া থাকো, একটু বসিয়া থাকো... ♫ ♫♫ ♫ ♫

আমি আকাশ ছুঁইনি অনেক দিন, দু'বছর আগেও নিয়ম করে প্রতি সন্ধ্যায় অন্তত: একবার আকাশ ছুঁতাম। আমাদের সম্পর্ক ছিলো বন্ধুত্বপূর্ণ, সূর্যাস্তের পর আকাশ ছাদের খুব কাছাকাছি চলে আসতো হাঁটতে হাঁটতে পাশাপাশি দুই বন্ধুর মত আমি আকাশের হাত ধরে মৃদু ঝাঁকুনি দিতাম। দু'বছর আগেও দুপুরবেলা রোদ গাঢ় হলে পর ঘর্মাক্ত গায়ে আকাশকে ডেকে নরম বকুনি দিতাম। নরম ধমকেই কাজ হতো, আকাশ আমার কথা শুনতো, কখনো পাঠিয়ে দিতো ছায়ার মত যাযাবর মেঘদল, কখনো বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলে হামলে পড়তো ঠান্ডা হাওয়া। উদাসী হাওয়ায় স্বস্তি পেয়ে ফুরফুরে মেজাজে মোল্লার চা দোকানে বসে এককাপ গরম চা, সাথে সদ্য প্যাকেট ভাঙা তাজা তামাক... সন্ধ্যায়, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়টাতে আড়াইতলার খোলা বারান্দায় আকাশের সাথে জমজমাট আড্ডা হতো, আকাশের বন্ধুরা-- মিল্কিওয়ে, অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্রপুঞ্জ, আরো যতো খটোমটো নামের অজানা অচেনা মহাজাগতিক বন্ধুরাও সাথী হতো।

আড্ডার অন্তরঙ্গতায় তোমার কথাও হতো; আকাশ সবই জানতো-- প্রথম দেখাদেখির সলাজ দৌড়, ফোনে খুনসুটির নানান সূত্র ধরে হাসি ঠাট্টাও চলতো। এমনকি কখনো কখনো আকাশ আমাদের সম্মানে উপহার দিতো তারা খসার দৃশ্য- ভবিষ্যত সুখ কল্পনায় সংস্কারাচ্ছ্‌ন আমরা মোনাজাতের ভঙ্গিতে মুখে হাত বুলিয়ে নিতাম। শত মাইল দূর থেকেও মহাজাগতিক ঘটনাগুলো দু'জনে মিলে উপভোগ করা যেতো-- যেমন পূর্ণিমা দেখতাম দু'জনে একই সাথে - যদিও মধ্যিখানে একবেলার পথ! আমি আকাশকে নিয়ে সদ্য লিখিত কোন কবিতা উৎসর্গ করবো বলে মনে মনে ঠিক করেছিলাম, একদিন তুমুল আড্ডার ফাঁকে তাকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলাম। আমি কথা রাখতে পারিনি, যেমন তুমি রাখোনি; আকাশকে নিয়ে কোন কবিতা লেখা হয়নি আর। তুমি চলে যাওয়ার পর গত দু'বছর ধরে আমি তাই একটিবারও আকাশের মুখোমুখি হইনি।

২ নভেম্বর, ২০০৮

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।