আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আকাশের কাছাকাছি...

ঘুমিয়ে পড়ার আগে......

তখন মাএ স্কুলে ভর্তি হয়েছি। আমি ,আব্বা,রাশেদ আর বড় ভাই সকাল বেলা রিকশা করে স্কুলে আসছিলাম, ঠিক মহসিন কলেজের মাঠ টার সমানে একটা গাড়ীর নিচে চাপা পড়তে গিয়েও কেমন করে জানি চাপা পড়লাম না। কিন্তু রাস্তার উপরে গাড়ী টার কড়া ব্রেক করার কালো দাগ পড়ে গিয়েছিল। তখন ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সবাইকে খুব আগ্রহ নিয়ে দাগ টা দেখাতাম। হঠাৎ অনেক দিন পরে ঐ কালো দাগ টার কথা মনে পড়ল।

দাগ টা সে কবেই মুছে গিয়েছে। আর মুছে যেতে চলেছে রাশেদ। কারণ সে তো ঘুমিয়ে পড়েছে বিশ বছর আগে। সেই ছোট্ট রাশেদ ছোটই রয়ে গিয়েছে........... দেবপাহাড় এলাকায় আছি প্রায় একুশ বছর হতে চলল। একসময় সবাই এই এলাকায় আসতে খুব ভয় পেত।

বড় ভাই তো বাসার বাঁধার কারণে ক্লাবের মাঠে খেলতে যেতে পরেনি,কিন্তু আমি ঠিকই ক্লাবের মাঠে যাওয়ার ব্যাবস্থা করে নিয়েছিলাম। ফোর-ফাইভে যখন পড়ি তখন এলাকার মেট্রিক-ইন্টারের ছেলেরা "‍জেমস" নামের একটা গ্রুপ খুলেছিল। পরবর্তিতে জেমস গ্রুপের টগবগে তরুণ রানা ভাইকে মেরে ফেলল তারা....। জেমস গ্রুপের আরো অনেকেই ঝড়ে পড়েছিল। তখন দেবপাহাড়ে প্রতি বছর একজন না একজন ঝড়ে পড়তই।

আর এখন আমাদের দেবপাহাড়ের ওজন খুব বেড়ে গিয়েছে। ছয়টা এপার্টমেন্ট হয়েছে। আমাদের এলাকায় মানুষ জন আসতে আর ভয় পাই না। তবে আমার রুমের জানালাটা দিয়ে আর আকাশ টা ও দেখা যায় না... আমাদের এলাকার ছেলেরা আবার ক্রিকেট খুব ভাল খেলে। শহীদ ভাই তো বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলল।

পরবর্তিতে মাসুম ভাই,তারেক ভাই,সাবীব,রাব্বী আর সবাইর শেষ হিসেবে এই বছর বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পেল আশরাফুল হোসেন রবীন। কিন্তু ক্রিকেটার তৈরী হওয়ার মাঠটা ও তারা দখল করে ফেলেছে। কত দিন ক্লাবের মাঠে ক্রিকেট খেলা হয় না..... আমি,আবেদ,হিটু,রোকন,মাসুদ,নাজমুল মেট্রিক দিলাম এক সাথেই। দেবপাহাড়ের সবচাইতে পুরান ছিল হিটুরা। তিরিশ বছরের দেবপাহাড়ের মায়া ছেড়ে হিটুরা এখন সুগন্ধাতে।

আমার সবচাইতে কাছে ছিল রোকন । পাশের বাসাই থাকত তো। এখন সে দেবপাহাড়ে না থাকলেও প্রায় সময় দেখা হয়। মসুদ ঢাকা আর নাজমুল অস্ট্রেলিয়া। আমাদের আড্ডা চলত আবেদ দের বিড়াট বাসাটাতে।

ঐ দিন দেখলাম আবেদ দের বাসাটা ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে,এপার্টমেন্ট হবে তার জন্য। প্রথম যেদিন বাড়ি টা ভাঙ্গা হচ্ছিল মনে কেন জানি কষ্ট লাগছিল খুব... তবে আমি এখনো দেবপাহাড়েই আছি। হয়ত আল্লাহর ইচ্ছায় আর ছয় মাস পরেই উড়াল দিব বা ছয় বছরেও না। তবে আকাশের কাছাকাছি থাকি বলে রাতের তারা গুলো কে একটু কাছ থেকেই দেখি...... .................... আবার আশেপাশের মানুষগুলো কে ফেলে ছুটে চলার সময় হয়ে গিয়েছে। কেন জানি মনটা খারাপ হয়ে যায়।

এইভাবে মন খারাপ হলো তো পৃথিবীকে বিদায়(মরতে) জানাতে কষ্ট হবে। .................... পোস্ট টা ঝড়ো হাওয়া কে .......। কেন জানি মানুষ টার সাথে দেখা হতে হতে ও হচ্ছে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।