আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব-২

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব-২ Click This Link রায়হান “তাদের অধিকাংশই অনুমানের অনুসরণ করে চলে। সত্যের ব্যাপারে অনুমান কোন কাজেই আসে না। ” (কোরআন ১০:৩৬) সমতল পৃথিবী সুস্পষ্ট কোন যুক্তি-প্রমাণ ছাড়াই কিছু ভদ্দরলোক বছরের পর বছর ধরে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন এই বলে যে, কোরানের আলোকে পৃথিবী অবশ্যই সমতল ও অনড়। এই ধরণের বুলিকে যুক্তিবাদী মহলে হাজির করা হলে চোখ বন্ধ করে গার্বেজে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে। সৈয়দ মিয়ার প্যাগান নজিক Argument from flat earth: The Qur'an says, "Who hath appointed the earth as a bed and hath threaded roads for you therein and hath sent down water from the sky and thereby We have brought forth divers kinds of vegetation." (20:53) Therefore, the Qur'anic God thought that the earth is flat as the earth has been compared with bed! LOL! But wait a moment! Although the 'shape' of the earth appears to be 'circular' (i.e. flat circle) but my bed is 'rectangular' (i.e. flat rectangle)! So, the Qur'anic God didn't intend to compare the 'shape and size of the earth' with the 'shape and size of my bed' in the first place! Therefore, the Qur'an cannot be the revelation from God! Otherwise I will be proven wrong, unless I have already made a 'circular bed' in my room secretly! Moreover, I never read the verse 84:3-4 that talks about the Last Day, "And when the earth is flattened out, and casts forth what is in it and becomes empty." So, if the earth is already flat, according to verse 20:53, for example, then how would it be flattened out again and becomes empty? What a nogical person I am, you see! পাঠক, সমতল পৃথিবীকে আবার সমতল বানানো এবং সেই সাথে খালি করার প্রশ্ন কিন্তু অবান্তর (দেখুন ৮৪:৩-৪)।

কোরানের আলোকে পৃথিবীর আকার যদি সমতলই হত তবে তাকে প্রলয়দিনে আবার সমতল করার প্রশ্ন আসবে কেন, তাই না? পৃথিবীকে সমতল (Flat) ও খালি (Empty) করার প্রশ্ন তখনই আসবে যখন পৃথিবীর আকার স্ফেরিক্যাল হবে। অতএব কোরানের আলোকে পৃথিবীর আকার আসলে স্ফেরিক্যাল, কোনভাবেই সমতল নয়। আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য কোরানে অসঙ্গতি ও বৈজ্ঞানিক ভ্রম লেখাটি পড়ে নেওয়া যেতে পারে। সেখানে অনেক আগেই এই অভিযোগের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সৈয়দ মিয়া সারা জীবন ধরে চতুর্ভুজাকৃতির বেডে শুয়ে থেকেও কোরান পড়তে যেয়ে কোরানের পৃথিবীকে জোর করে সমতল বানানোর জন্য সেই বেডকেই আবার ‘বৃত্তাকার’ কল্পনা করেন! লে-এ হালুয়া! তাছাড়া সৈয়দ মিয়া হয়ত ‘বেড’ বলতে কাঠ অথবা লোহার তৈরী চতুর্ভুজাকৃতির ফ্রেমকে বুঝে থাকেন! ওয়েল, তা-ই যদি হয় তাহলে বেড এর চার পা ও স্ট্যান্ড থাকলেও কোরানের কোথাও কিন্তু বলা হয়নি যে, পৃথিবীর চার পা ও স্ট্যান্ড আছে! অধিকন্তু যাদের বাড়িতে কাঠ অথবা লোহার তৈরী বেড নেই তারা কিন্তু মেঝেতেই শুয়ে থাকে।

ফলে তাদের কাছে এই পৃথিবীটাই একটি ‘বেড’। যাহোক, ‘বেড’ বলতে সাধারণত (নরম) গদিকে বুঝানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ ‘বেড’ তাকেই বলা হয় যেখানে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বিশ্রাম নেওয়া যায়। বেডে মানুষ যতটা আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বিশ্রাম নিতে পারে, মরুভূমির উত্তপ্ত বালুচরে ততটা আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বিশ্রাম নিতে পারে না। এমনকি মরুভূমির উত্তপ্ত বালুচরে বেশীক্ষণ থাকলে মানুষ মারাও যেতে পারে।

ফলে মরুভূমির বালুচরকে কিন্তু কোনভাবেই বেড বলা যাবে না। বেড এর সাথে মরুভূমির পার্থক্য ইতোমধ্যে নিশ্চয় পরিস্কার। তাছাড়া বেড সাধারণত প্রটেকটিভ জায়গার মধ্যে রাখা হয় যাতে করে সূর্যের তাপ ও ক্ষতিকর রশ্মি, ঝড়-বৃষ্টি, হিংস্র জন্তু, ও বিষাক্ত কীট-পতঙ্গের হাত থেকে জীবন বাঁচানো যায়। এবার আসা যাক কোরানের ক্ষেত্রে। কোরানে পৃথিবীকে ‘বেড/কার্পেট’ এর সাথে তুলনা করে পৃথিবীর আকার-আকৃতিকে বুঝানো হয়নি।

আয়াতগুলো পড়লেই বুঝা যায়। বরঞ্চ এই তুলনাটা অত্যন্ত যৌক্তিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা সবাই জানি যে, এ পর্যন্ত যতগুলো গ্রহ-উপগ্রহ আবিষ্কার করা হয়েছে তার মধ্যে পৃথিবী একটি ব্যতিক্রমধর্মী গ্রহ, যেখানে পানি, বাতাস, ও জীবের অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ পৃথিবী নামক গ্রহে মানুষ ও অন্যান্য জীব-জন্তু-উদ্ভিদ যত সহজে বসবাস করতে পারে, যত সহজে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে বিশ্রাম নিতে পারে, সর্বোপরি যত সহজে বেঁচে থাকতে পারে; অন্য কোন গ্রহ বা উপগ্রহে যেয়ে তত সহজে বসবাস করা অসম্ভব। বেড এর সাথে উত্তপ্ত মরুভূমির যেমন সম্পর্ক – পৃথিবী নামক গ্রহের সাথে অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহেরও অনুরূপ সম্পর্ক।

আর এ কারণেই কোরানে পৃথিবীকে ‘বেড/কার্পেট’ এর সাথে তুলনা করা হয়েছে। অর্থাৎ কোরানে পৃথিবীকে ‘বেড/কার্পেট’ এর সাথে তুলনা করে পৃথিবীকে বসবাস ও জীবন ধারণের উপযোগী বুঝানো হয়েছে। বেডকে যেমন প্রটেকটিভ জায়গার মধ্যে রাখা হয় তেমনি পৃথিবীকেও প্রটেকটিভ আবরণের মধ্যে রাখা হয়েছে (২১:৩২)। নোট : কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন আনুবাদক বিভিন্ন রকম টার্ম ব্যবহার করেছেন। যেমন আয়াত ২০:৫৩ এর বিভিন্ন অনুবাদ লক্ষ্য করুন : Qaribullah et al.: It is He who has made for you the earth as a cradle. Rashad Khalifa: He is the One who made the earth habitable for you. YUSUFALI: He Who has, made for you the earth like a carpet. PICKTHAL: Who hath appointed the earth as a bed. SHAKIR: Who made the earth for you an expanse. তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, পাঁচজন অনুবাদক পাঁচ রকম টার্ম ব্যবহার করেছেন এবং সবগুলোই আসলে যৌক্তিক, যার ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু অন্ধ-অজ্ঞ সমালোচকদের ‘কনফিউশন’ এড়ানোর জন্য ক্বারিবুল্লাহ্‌ ও রাশাদ খলিফা যথাক্রমে ‘ক্রেডল’ ও ‘হ্যাবিটেবল’ ব্যবহার করেছেন। কেস ডিসমিস। অনুবাদের ক্ষেত্রে বিশ্বাসীরা ‘পিক এন্ড চুজ’ মেথড ব্যবহার করে যে অনুবাদকে সবচেয়ে বেশী যৌক্তিক মনে হবে সেটা গ্রহণ করাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু বিভিন্ন অনুবাদ থেকে ‘পিক এন্ড চুজ’ মেথড ব্যবহার করে একটি গ্রন্থকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করা অযৌক্তিক। কারণ অনুবাদের ক্ষেত্রে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ কোরান বা যে কোন গ্রন্থকেই দিতে হবে।

স্থির তথা অনড় পৃথিবী কোরানে ‘স্থির’ বা ‘অনড়’ পৃথিবীর অভিযোগকেও কোরানে অসঙ্গতি ও বৈজ্ঞানিক ভ্রম লেখাটিতে অনেক আগেই খন্ডন করা হয়েছে। কোরানের আলোকে পৃথিবী আসলে ঘূর্ণায়মান, স্থির বা অনড় নয়। যদিও পৃথিবী তার নিজ অক্ষের উপর ঘন্টায় প্রায় এক হাজার মাইল বেগে ঘুরছে তথাপি সাদা চোখে পৃথিবীকে স্থির তথা অনড় মনে হয়। পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগ ফুটবল বা বেলুনের মত মসৃণ হলে পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে হয়ত ঝাঁকুনির সৃষ্টি হত। কোরানে বলা হয়েছে যে, পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগে পর্বতমালা স্থাপন করে ঝাঁকুনিকে প্রতিরোধ করা হয়েছে (৩১:১০, ১৬:১৫, ২১:৩১)।

ফলে কোরানে যদি পৃথিবীকে ‘স্থির’ তথা ‘অনড়’ মনে করা হত তাহলে পৃথিবীতে পর্বতমালা স্থাপন করে ঝাঁকুনি প্রতিরোধের কথা কোনভাবেই আসতো না। বরঞ্চ এই আয়াতগুলো পৃথিবীর ঘূর্ণনের স্বপক্ষেই দিক নির্দেশ করে। অথচ এই আয়াতগুলো নিয়ে (বোকার মত!) বেশ হাসি-তামাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং উল্টোদিকে কোরানের পৃথিবীকে ‘স্থির’ তথা ‘অনড়’ বানিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। কিছু নমুনা দেখুন : 31.10: He created the heavens without any pillars that ye can see; He set on the earth mountains standing firm, lest it (the earth) should shake with you. 16.15: And He has set up on the earth mountains standing firm, lest it (the earth) should shake with you. “তবে কি তারা কোরআন সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করে না, না তাদের অন্তরে তালা লাগানো আছে? নিশ্চয় যারা নিজেদের কাছে সৎপথ পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত হওয়ার পর তার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে সরে পড়ে, শয়তান তাদের জন্য এ কাজকে শোভন করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়। ” (কোরআন ৪৭:২৪-২৫) (চলবে …)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.