আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ রায় আমি চাইনি

সতর্ক করন " জামাত শিবির , যে কোন রকমের মৌলবাদী, ধর্ম ব্যাবসাই ও বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত সকল জানয়ারের প্রবেশ নিষেধ" ‘আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। এই রায় আমি চাইনি। ’ আজ মঙ্গলবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২-এ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় শুনে টেলিফোনে এমন মন্তব্যই করেন শহীদ কবি মেহেরুননিসার বন্ধু ও কবি কাজী রোজী। কথা বলতে গিয়ে কান্নায় তাঁর গলা ভেঙে আসছিল। রায় ঘোষণার পর কেবল কাজী রোজী নন, রাজনীতিক-লেখক-সংস্কৃতিকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের কণ্ঠে হতাশা ও ক্ষোভ লক্ষ করা গেছে।

তাঁদের কথা হলো, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে গণহত্যা ও ধর্ষণসহ অনেকগুলো গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাঁকে এমন লঘু শাস্তি দেওয়ার কী কারণ থাকতে পারে? একাত্তরে রাজাকার-আলবদরেরা যে নৃশংস গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য অপরাধ করেছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে তুলনামূলক কম অভিযোগ ছিল। তাঁর মৃত্যুদণ্ড হলেও কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত এই রায়ের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আপিল করা।

আজ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় ছিল টানটান উত্তেজনা। কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ অনেকেই ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিল নিয়ে সেখানে এসেছিল। কিন্তু ফিরে গেছে ব্যানার গুটিয়ে। এমনকি মামলার বাদী নিজেই রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রায়ে হতাশা ব্যক্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। তাহলে এ ধরনের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের এখন করণীয় কী? রায় ঘোষণার আগেই জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির সারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। গতকাল তারা একদিকে পুলিশকে রজনীগন্ধা দিয়ে বরণ করেছে, অন্যদিকে বাসে আগুন জ্বালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখনই প্রতিহত করতে হবে। অফিসে, রাজপথে সর্বত্র রায় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনীত ছয় অভিযোগের পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল অভিমত প্রকাশ করেছেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর আরও কঠিন শাস্তি হওয়ার কথা। তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ: তিনি একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন। দ্বিতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ২৭ মার্চ তিনি সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন। তৃতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ২৯ মার্চ বিকেলে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে আরামবাগ থেকে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন। চতুর্থ অভিযোগ: ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটারচরে (শহীদনগর) শতাধিক নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে হত্যা করেন।

পঞ্চম অভিযোগ: একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন। ষষ্ঠ অভিযোগ: একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যান। কাদের মোল্লার নির্দেশে হযরত, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হন এক মেয়ে। এত দিন সরকারি দলের নেতারা দাবি করে আসছিলেন, তাঁরা যুদ্ধাপরাধের বিচার করে জাতিকে দায়মুক্ত করবেন।

কিন্তু কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছেন, তাতে দায়মুক্ত হয়নি; বরং দায় যুক্ত হলো। আদালত থেকে গাড়িতে ওঠার মুহূর্তে যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লা হাতে ভি চিহ্ন দেখিয়েছেন। আর সর্বশেষ খবর, জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল আরেকটি হরতাল ডেকেছে। তাহলে কি জামায়াতে ইসলামী রায়ে খুশি হয়েই দেশবাসীর ওপর আরেকটি হরতাল চাপিয়ে দিল? আসুন, আমরা এই হরতাল ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিহত করি Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.