আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিস্কুট খেকো

তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।

দোস্ত দেশ থেকে আসার সময় কি নিয়ে আসবে বলতে বলতে মাথা ঝালাপালা। কিছুই নিয়ে আসার নেই শুনে দু:খ পাইলো। আমি বলি মাত্র তো দেশ থেকে আসলাম। অনেকক্ষন জিঞ্জেস করার পর বল্লাম টাঙ্গাইলের চমচম আর কিছু বেকারী বিস্কুট নিয়ে আসতে।

বন্ধুর বাড়ি টাঙ্গাইলে তাই দেশে থাকতে যখন মিষ্টির দরকার হতো শুধু আওয়াজ দিতাম। স্বয়ং পোড়াবাড়ির চমচম হাজির। কিন্তু আমি ঐ চিজ একটার বেশি খাইতে পারি না। এতো মিষ্টি। এক্কেবারে সুগার বম্ব।

মা যখন শুনেছে মিষ্টি নিয়ে আসার কথা বলেছি তখন একটা ঝাড়ি খাইলাম। ফ্রিজে নাকি এখনো ২ কিলো মিষ্টি আছে। যদিও আমি নিজে জানি তারপরও না জানার ভান করলাম। এত্তোগুলো নিয়ে আসছে দেখে মায়ের কড়া মুখের দিকে থাকালাম। উনি কিছুই বল্লেন না।

আমি কিছু বন্ধুকে মিষ্টি খাওয়ার দাওয়াত দিলাম। কিন্তু সব বেটাই এতো বেশি স্বাস্হ্য সচেতন সেইটা জানতাম না। ছাত্রাবস্হায় থেকে সবাই এখন কামলা দেয় তাই নাকি মোটা হওয়া ঠেকাতে হবে। ছোট ভাইকে কিছু গছাতে পারবো। তাবলিগ মানুষ তো একটু মিষ্টি পছন্দ করে বিস্কুটের প্রতি দুর্বলতা জন্মের পর থেকেই।

ভাত না খেয়ে বিস্কুট দিয়ে দিলেই আমি আর ছোটভাই খুশি। যখন হোস্টেলবাসি হলাম। কিছু কাচা টাকা হাতে আসতে লাগলো। নিজে জমিয়ে রাখতাম। ছুটির সময় বাড়িতে গেলেই ছোটভাই স্হানীয় বেকারীর দোকানের বিরাট বাকির খাতা নিয়ে হাজির।

আমি টাকা না দিলে মায়ের হাতের মাইর বরাদ্দ। কি আর করার নিজেও কয়েক পাউন্ড খেয়ে দোকানের বাকি মিটিয়ে আসতাম এখানে আসার পরও একই অভ্যাস। ইউনিতে দুই বন্ধু একটি ফ্লাট নিয়ে থাকতাম। মার্কেটে গেলেই আমি হরেক রকমের বিস্কুট নিয়ে হাজির। এক টুকরো খেয়ে যদি ভালো লাগে তো প‌্যাকেট সাবাড়।

অন্যথায় পুরো প‌্যাকেটই কিচেনে। বন্ধু মাঝে মাঝে ঝাড়ি দেয় এতোগুলো বিস্কুট নষ্ট করার জন্য। পরে একটা বুদ্ধি বের করলাম। আমার ক্লাসের কিছু এশিয়ান বন্ধু আছে। ওদের মাঝে মাঝে চায়ের দাওয়াত দিতাম।

হরেক রকমের বিস্কুট দিয়ে আপ‌্যায়ন। সবাই খুব খুশি। আমিও চামে অপচয় থেকে বেচে যেতাম। সাথে কিছু প্রশংসা বাণী উপরি পাওয়া কয়েকদিন থেকেই জার্মান টি.ভি তে একটি বিস্কুটের বিঙ্গাপন দিচ্ছিলো। বিস্কুটের উপর চিনির প্রলেপ তার উপর বাদাম।

দেখেই লোভ হলো। কিনবো কিনবো করে আর কেনা হয়নি। অনেকদিন অবশ্য সুপারমার্কেটও যাওয়া হয়নি। গত সপ্তাহে মার্কেটে গিয়েই কিনেছিলাম। মার্কেট থেকে বের হয়ে প‌্যাকেট খুলে একটা মুখে দিতেই পুরো হতাশ।

চুপি চুপি পুরো প‌্যাকেট পেছনের ব্যাগে চালান করে দিলাম। বাসায় রেখে খাওয়া হবে না উল্টো কিনে এনে না খাওয়ার জন্য মায়ের বকা খেতে হবে। এর থেকে অফিসে এনে রাখাই ভালো। পরেরদিন চা খেতে বসে দেখি মা একই বিস্কুট দুই প‌্যাকেট কিনে এনেছে। নতুন বিস্কুট দেখে অবাক হওয়ার ভান করলাম।

মা বলে তুই না বিস্কুট পছন্দ করিস। তাই নিয়ে আসলাম। বল্লাম- হ্যা। দাও তো খেয়ে দেখি কেমন (আমি তো আগেই টেষ্ট করে ফেলেছিলাম সেইটা তো এখানে বলা যাবে না) ইংল্যান্ডে গিয়ে আমার বিস্কুট খাওয়া দেখে পাবলিক পুরো হা। তবে ইংল্যান্ডের বিস্কুটগুলো এখানের তুলনায় বেশি সুস্বাদু।

সবচে বেশি দেশেরটা। মাঝে মাঝে শুনি ঐগুলোতে নাকি পচা ডিম দেয়(ভাইয়াও তাই বলে)। মনে মনে বলি ঐগুলো দুষ্টলোকের কথা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।