আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দারিদ্র বিমোচনে অংশ নেয়ার গল্প



বিশ্বের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বের লোকসংখ্যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে । যদিও কিছু উন্নত দেশ ও অঞ্চলের জনগণ বিলাসী জীবন উপভোগ করছে । কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে অনেক লোকচরম দরিদ্র অবস্থায় জীবনযাপন ধরে । বর্তমানে দারিদ্র বিমোচন জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পরিণত হয়েছে । আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের জন্য চীন সরকারের আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচনে অংশ নেয়ার গল্প বলবো।

এবারের সেমিনারের অনেক তাত্পর্য রয়েছে । চীনের দারিদ্র বিমোচনের অভিজ্ঞতা শেখা আমাদের শ্রীলংকার দারিদ্র বিমোচন কাজের জন্য অনেক সহায়ক হবে । আপনারা শুনতে পাচ্ছেন শ্রীলংকার অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার দক্ষিণ এশিয় দারিদ্র বিমোচন নীতি ও কার্যকরী কর্মকর্তাদের সেমিনারের সময় সংবাদদাতাদের জানানো বক্তব্য । চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের উদ্যোগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল , শ্রীলংকা এবং আফগানিস্তানসহ ৫টি দেশ থেকে আসা ২০ জন কর্মকর্তা এবারের সেমিনারে অংশ নিয়েছেন । ২০০৪ সালে শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব দারিদ্র বিমোচন সম্মেলনে চীন সরকার বিশ্বের দারিদ্র বিমোচন ও উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং নিজদেশের দারিদ্র বিমোচন সমস্যা সমাধান করার পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে আঞ্চলিক ও বিশ্বের দারিদ্র বিমোচন কাজে অংশ নিয়েছে ।

চীন সরকার এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন পরিকল্পনা কার্যালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ২০০৫ সালের ১৬ মে চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় । সেমিনার চলাকালে সেমিনারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ,আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের গবেষক ডক্টর হুয়াং ছেং ওয়েই সাংবাদিকদের কাছে এ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরেছেন । তিনি বলেছেন, আমাদের কেন্দ্র পরিষদের প্রশাসন পদ্ধিতে চালু হয় । এর সদস্য চীন সরকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটি , জাতিসংঘের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা কার্যালয় এবং বিশ্ব ব্যাংক । আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের দায়িত্ব হচ্ছে : দারিদ্র বিমোচনে প্রশিক্ষণ দেয়া, দেশের মধ্যে দারিদ্র বিমোচনের অভিজ্ঞতা বিনিময় করা এবং দারিদ্র বিমোচন বাস্তবায়নে গবেষণা করা ।

উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে আফ্রিকা ও এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো আমাদের সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে । কারণ এ দু'টি অঞ্চলের দরিদ্র লোকসংখ্যা বেশি এবং দারিদ্র বিমোচন কাজের কার্যকর অবস্থা দুর্বল । আশা করি আমাদের সেমিনারের মাধ্যমে চীনের সফল দারিদ্র বিমোচন অভিজ্ঞতা প্রচারিত হবে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে অভিন্ন দারিদ্র বিমোচন সামর্থ্য উন্নত হতে সক্ষম হবে । জানা গেছে, এ পর্যন্ত চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশের ১৬০জন উচ্চ ও মাঝারি পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে । তাঁদের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের কর্মকর্তা ৭ জন ।

বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা সেমিনারের প্রশংসা করেছেন । ৩ জন মন্ত্রীসহ অনেক কর্মকর্তা স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পর দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের কাছে ধন্যবাদপত্র পাঠিয়েছেন এবং চীন সরকার ও দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের সেমিনারের উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন । এবারের সেমিনার ১৫দিনব্যাপী। সেমিনারে বিষয় ছিল চীনের মৌলিক অবস্থা ,অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন নীতি, চীনের দারিদ্র বিমোচনের সফল অভিজ্ঞতা এবং দারিদ্র বিমোচন নীতি ও বাস্তবতা তুলে ধরা । প্রশিক্ষণের পদ্ধতি হল তত্ত্বের ব্যাখ্যা, অভিজ্ঞতার বর্ণনা, ঘটনার বিশ্লেষণ এবং আলোচনা ।

সেমিনার চলাকালে সকল কর্মকর্তা চীনের ছোংছিং গিয়ে স্থানীয় দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করেন এবং দরিদ্র অঞ্চলের শ্রমিক শক্তির হস্তান্তর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যান । ছোংছিংয়ে পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে ডঃ হুয়াং বলেছেন, বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের চীনের দরিদ্র লোকসংখ্যা বেশি থাকা প্রদেশ পরিদর্শন করানোর উদ্দেশ্য হল তাঁদের ভালভাবে স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন বোঝানো এবং তাঁদের জন্য চীনের দারিদ্র বিমোচন পদ্ধতি ও চীনের উন্নয়নের জন্য অসম্মান দেখানো । যাতে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার পর তাঁরা ভালভাবে এসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্বদেশের দারিদ্র বিমোচন সমস্যা সমাধান করা যান । সংবাদদাতা সেমিনারে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের সাক্ষাত্ নিয়েছেন । তাঁরা পৃথক পৃথকভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন ।

নেপালের অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কাইলাশ রাজ পোখারেল বলেছেন, এবার হচ্ছে আমার প্রথমবার চীন আসা । এবারের সেমিনারে অংশ নিতে পেরে আমি খুবই আনন্দ রোধ করছি । চীন সরকার আমাদের জন্য দারিদ্র বিমোচন অভিজ্ঞতা শেখার সুযোগ দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ থেকে আসা অর্থমন্ত্রণালয়ের তিন জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেমিনার ক্লাসের শেষে আমাদের সাক্ষাত্কার দিয়েছেন । তাঁরা পৃথক পৃথকভাবে দারিদ্র বিমোচন সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন ।

যদিও চীন আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রের বয়স মাত্র ২ বছর ,কিন্তু তারা ইতোমধ্যে অনেকবার নানা ধরনের সেমিনার আয়োজন করেছে এবং প্রতি বছর কমপক্ষে একবার বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিনিময় কার্যক্রম ,৩ বা ৪ বার প্রশিক্ষণ ক্লাস এবং ৪ বা ৫ বার আন্তর্জাতিক আঞ্চলিক সেমিনার আয়োজন করে । তা ছাড়া, দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্র চীন সরকারের বৈদেশিক ত্রাণসাহায্য কার্যক্রমে সাহায্য দেয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং আশা করে, সহযোগিতার মাধ্যমে কিছু দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে । যাতে আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন কাজে আরো বেশি অবদান রাখা যায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.