আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিবার ভেঙ্গে যায়



এবার আমাদের পাশের গ্রামের একটা ঈদের জামাত ভেঙ্গে দু খন্ড হয়েছে। আগের জামাত খানা তিনটি জামাতের সমাহার ছিলো। গত তিন বছর আগে ঈমাম কে নিয়ে জামাতের লোকজন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। একদল বলছিল এই ঈমামের পেছনে নামাজ হয়না কারন তার ভাইয়েরা নামাজ পড়েনা। বোনেরা বেপর্দা।

এসব নিয়ে প্রথমত কানাকানি। বেলটা ভেঙ্গেছিল খালেক। তার সঙ্গে ঈমামের জমির বিবাদ আছে। একবার ঈমাম নিজে জমির আইল পেলেছে খালেকের জমিতে। এতে খালেকের অনেক খন্ড জমি বেদখল।

তাই এবার সুযোগ । কয়েকজন বলাবলি করছে পাশের মসজিদের ঈমামের গলা মিষ্টি পাখির মতো। আর এর গলায় সুর নেই। দোয়াও পারেনা। অন্যদলটি নানারকম যুক্তি শুরু করল।

পবিত্র হাদিশ ও পবিত্র কোরআন শরীফের আয়াত টেনে বলল এই ঈমামের কোন দোষ নেই। অপরপক্ষও পবিত্র হাদিশ ও পবিত্র কোরআন শরীফের বয়ান আয়োজন করল পাশের গ্রামের এক মৌলানাকে দিয়ে। অন্যদলটি ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করল। বরেন্য এক মৌলানা ওয়াজ ফরমাইলেন সারারাত। এ পর্যন্ত ভালই ছিল বলা যায় একদিক দিয়ে।

এতে সাধারন মানুষ বেশ ভালই ছিল। তারা পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়ত করতে পারেনা ঠিক কিন্তু ওয়াজ মাহফিলগুলোতে অংশ নিয়ে আপন কৃত অপকর্মগুলোকে নিজে নিজে দেখতে পেত এবং স্বয়ং প্রভুর কাছে আত্নসমর্পন করত। চুরি ডাকাতি কিছু কমেছিল গ্রামে। এসব হতে হতে ঈদ কাছে এসে গেল। এবার গ্রামের দুই প্রভাবশালী ভাগাভাগি হলেন।

একজন বর্তমান মেম্বার আরেকজন কয়েকবার হেরেছে ভোটে। একজন অন্যদলে আরেকজন অপরপক্ষে। দুদলই এবার নিজেদেরকে শক্তিশালী ভাবা শুরু করল। ) এতেও সাধারন মানুষ বেশ ভালই ছিল- মেম্বার দুজনের সাথে হাটে বাজারে দেখা হলে চা বিস্কিট এমনিই হয়ে যায়। ছোট হাটটিতে তখন স্পষ্টতই দুটি দল ।

মাঝখানে মেম্বার দুজন। আপ্যায়ন করছে কয়েকটি ছোট ছেলে। পুরি, বড়া , চা যার যা খুশি। ছোট ছেলে দুটি খাটাখাটুনির পর পাঁচ দশটাকা পায়। এভাবে করেতারা পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়ত করতে পারেনা ঠিক কিন্তু ওয়াজ মাহফিলগুলোতে অংশ নিয়ে আপন কৃত অপকর্মগুলোকে নিজে নিজে দেখতে পেত এবং স্বয়ং প্রভুর কাছে আত্নসমর্পন করত।

চুরি ডাকাতি কিছু কমেছিল গ্রামে। ঈদের কয়েকদিন আগে খালেক হেরে যাওয়া মেম্বার কে বলল ( হেরে যাওয়া মেম্বার এইজন্য যে ওখানে মেম্বার হোক বা না হোক প্রার্থী হলেই নাম পড়ে যায় মেম্বার,চেয়ারম্যান,এমপি সাধারন মানুষ তাদের ভক্তি করে সমানে সমান। - মেম্বার জামাত খান ভাঙ্গী। ঐঠে নামাজ পড়া যাবেনি। উমরা (ওরা) সবাই বর্তমান মেম্বারের পক্ষে।

হামরা আলাদা জামাত করি। তোমাক আর ভোট নিয়া চিন্তা করবা হবেনি। হেরে যাওয়া মেম্বার সুয়োগ পেল। বলল জাগা (স্থান)দেখ। এইভাবে আর কতদিন।

শুরু হল স্থান খোজাখুজি। কেউ জমি দিতে চায়না। সর্বশেষে ঈদের একদিন আগে জমি পাওয়া গেল এই শর্তে বাজারের দাম থেকে দুইগুন বেশী। তবে মেম্বারের যুক্তি সবাই মানল। দুই বছরের কিস্তিতে জমির টাকা শোধ করা হবে।

কিস্তির টাকা অপরপক্ষের সবাই মিলে দেবে। মাসে কিস্তির টাকা তুলবে একজন শতকরা পাঁচ টাকার বিনিময়ে। ঈদের দিন অপরপক্ষ নতুন জামাতে আর অন্যদল পুরান জামাতে নামাজ আদায় করল। এবার পুরান জামাতখানা আবার ভেঙ্গেছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.