আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নষ্টালজিয়া



বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে যখন ক্লাস শুরু হলো তখন আমরাই প্রথম ব্যাচ, কোন সিনিয়র নেই, মনে হতে লাগলো আমরাই রাজা মহারাজা। ছুটোছুটি লুটোপুটিতে মেতে আছি আসরা তখন। কিন্তু বাদ সাধলো অন্য ডিসিপ্লিনের কিছু সিনিয়র। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়েন বা পড়ছেন তারা জানেন Raging নামক বিভিষিকার কথা (অবশ্য এখন তেমন নেই)। উঠতে বসতে সিনিয়রদের হয়রানী, খ্যাফেটরিয়ায় গিয়ে বসতে পারতাম না, বাসে উঠলে বসা যাবেনা, রাস্তার মাঝখানে বাস থামিয়ে ফার্ষ্ট ইয়ারকে নামিয়ে দেয়া এসব যন্ত্রণার হাত থেকে বাঁচার কোন উপায় ছিলোনা।

ক্যাম্পাসে যখন স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছিনা তখন আমাদের আশ্রয় ছিল (মেয়েদের) কমনরুম, কিন্তু অবশেষে সিনিয়র আপুরাও সেখানে এমন সব হয়রানী শুরু করলো যা লেখা বা মুখে বলা আমাদের সংস্কৃতিতে শালীন নয়। বাধ্য হয়ে অফ পিরিয়ডে আশ্রয় নিতাম লাইব্রেরীতে, কিন্তু সেখানেও সিনিয়রদের দৌরাত্ন, অবশেষে ক্লাসরুমের দরজা বন্ধ করে বসে থাকতাম। একদিন নবীনবরণ হয়ে গেল এবং তারপর থেকে আস্তে আস্তে যেন সব ঠিক হয়ে যেতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে কখন যে ক্যাম্পাসের প্রেমে পড়ে গেলাম জানিনা, কিছুতেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকতে মন চাইত না। ছুটিতে বাড়িতে গেলে বা কোথাও বেড়াতে গেলে দু'একদিন পরেই অসহ্য লাগতো।

এভাবে কেটে গেল তিনটা বছর। ফাইনাল ইয়ারে আসার পর আবার যেন ক্যাম্পাসকে অসহ্য মনে হতে শুরু করলো, এবং গ্রাজুয়েশন শেষ করে চলে আসার পর আর ক্যাম্পাসে যেতে মন চায় না। শুধু মনে পড়ে কিছু শিক্ষকের অমায়িক ব্যবহার এবং জ্ঞানগর্ভ ক্লাসের কথা মন চায় একবার ক্যাম্পাসে গিয়ে উনাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে আসি কিন্তু পরক্ষণে মনে পড়ে যায় কিছু বিকৃত মানসিকতার শিক্ষকের কথা যারা ছাত্রীদের সাথে গোপন প্রেম করে পরীক্ষায় তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে রেজাল্ট ভালো করিয়েছে এবং আমার ঐ বান্ধবীদের গ্রাজুয়েশন শেষ হবার কিছুদিনের মধ্যে তাদেরকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেছে। আর ও ঘৃণ্য ব্যাপার হলো লবিং করে আমার সে বান্ধবীদেরকে ঐ শিক্ষকরা আজ নিজেদের কলিগ ও করে নিয়েছে। [লেখাটি পড়ে এ ব্লগের কেউ কষ্ট পেলে দুঃখিত]


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।