আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপেক্ষা..... শুধুই অপেক্ষা

ভালো আছি

(প্রথম অংশের পর) কানফাঁটানো হুঁইসেল দিতে দিতে আমাকে পাশ কাটিয়ে ট্রেনটা প্লাটর্ফমে এসে ঢুকল। সাথে করে ছোট খাটো একটা ধুলোর র্ঘর্ুনি ঝড় নিয়ে আসল । অনেক চেষ্টা করেও বাঁচতে পারলামনা । চোখে মুখে ধুলার ঝাপটা এসে লাগল, কিছুটা গিলেও ফেললাম । প্লাটর্ফমের ব্যাস-তা দ্বিগুন আকারে বেড়ে গেল।

কে কার আগে ট্রেনে উঠবে তাই নিয়ে রীতি মত মারামারি শুরু করল যাত্রীরা। ভীরের মধ্যে ঘুসি ধাক্কা খেয়ে অনেক কষ্টে ভারী সুটকেসটা নিয়ে কোন রকমে দরজা দিয়ে ভেতরে এসে ঢুকলাম। দরজায় দাড়িয়ে বগির ভেতরে কিভাবে ঢুকব ভাবছি এমন সময় বাম পাজরে একটা গুতা খেয়ে বুঝলাম এখন ভাববার সময় নয়। য়ুদ্ধ ক্ষেত্রে এসে কখনও ভাবলে চলে না। যাই হোক জামার হাতা গুটিয়ে দু হাতে সুটকেসটা ধরে দোয়া ইউনুস পড়তে পড়তে এগুতে শুরু করলাম।

অনেক কষ্টে সুটকেসটা নিয়ে যখন নিজের ছিট নাম্বার খুঁজে পেলাম তখন দেখি আরেক সমস্যা। আমার সিটে একজন মহিলা বসে আছেন। সুটকেসটা মাথার উপরে ল্যাগেজ রাখার স'ানে স'ানান-রিত করে টিকিটটা দেখিয়ে বললাম .......এক্সকিউজমি ৫২ নম্বর ছিট সম্ভবত এইটা । ভদ্রমহিলা প্রথমে টিকিটের দিকে তারপর পাশে ছিট নাম্বার এর দিকে এবং অবশেষে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন হ্যা,এইটা আপনারই ছিট পাশের ছিটটি আমার। নিজের ছিট রেখে আরেকজনের ছিটে কেন অবশ্য পরে বুঝলাম।

বললাম দয়াকরে যদি কিছু না মনে করেন তাহলে যদি একটু....। ........অবশ্যই। ট্রেন ছাড়া পর্যন- আমি একটু বসব, ওর বাবার সাথে কথা আছে। কথা শুনে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম এক ভদ্র লোক দাড়িয়ে আছেন। কিন' এই ‘ওর’ বলে যেদিকে দেখালেন সেদিকে তকিয়ে দেখি অপর পাশের ছিটে সুন্দরী বলা চলে এমন,মোটা টাইপের একটি মেয়ে বসে আছে।

মনে মনে বললাম গুড র্জানিটা বোধহয় ভালই হবে। ট্রেন রাজশাহী ষ্টেশন ক্রস করে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করল। দরজার পাশে দাড়িয়ে একটা সিগারেট জ্বালালাম। ষ্টেশনে আসার পথে দশটা কিনে নিয়ে ছিলাম। সময় দেখার জন্য মোবাইলটা বের করে দেখি ৩.২০ বাজে।

খালি পেটে সিগারেট খাচ্ছি, একটু কষ্ট হচ্ছে কিন' খারাপ লাগছে না। ট্রেন এখন প্রায় ফুল স্পীডে চলছে, দরজা দিয়ে প্রচন্ড বাতাস এসে মুখে ঝাপটা মারছে। একটু ঝুকে বাইরে তাকিয়ে দেখি রাজশাহী র্ভাসিটি ও এর চারু কলা বিভাগ এর মধ্যখান দিয়ে আমরা যাচ্ছি। এরপর শুধু ফসলের মাঠ ছাড়া তেমন কিছু চোখে পড়বে না তাই ভেতরে নিজের জাইগাতে চলে আসলাম। ঈশ্বরদী জংশন।

ট্রেন এখানে ৮ মিনিট দাড়ানোর কথা । দপুরে কিছু খায়নি তাই খাবার জন্য নিচে নামলাম। তাছড়া ট্রেন এখানে আসলে আমি প্রতিবারই নেমে থাকি। যাইহোক দোকান থেকে একটা কেক নিয়ে খেলাম আর দোকানদার কে এককাপ চা দিতে বললাম। কি মনে করে আমার ছিটের যে জানালা সেই দিকে তাকালাম।

দেখি জানালা গলিয়ে হাত ছানি দিয়ে ভদ্রমহিলা আমাকে ডাকছেন। ইশারাই আসছি বলে তাড়াতাড়ি চা খেয়ে কৌতুহল বশত এগিয়ে গেলাম। ........বাবা আমাকে কিছু খাবার কিনে এনে দেবে,বলে উনি একশ টাকার একটি নোট আমার দিকে বাড়িয়ে ধরলেন। ........জ্বী অবশ্যই, কি কিনতে হবে বলুন বলে টাকাটা নিলাম। ........একটা ফুল পাউন্ড রুটি ও এক ডজন কলা নিয়ে আসো।

তাড়াতাড়ি রুটি ও কলা কিনে দিয়ে এসে আরও দশটা সিগারেট কেনার জন্য আবার দোকানে আসলাম। সিগারেট কিনে নয়টা প্যাকেটে ঢকিয়ে একটা জ্বালালাম। দুইটান দিতে না দিতেই ট্রেনের হুঁইসেল বেজে উঠল। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.