আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপেক্ষা..... শুধুই অপেক্ষা

ভালো আছি

(র্পূবের অংশের পর) ট্রেন এখন ফুল স্পীডে এগুচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে ঈশ্বরদী জংশন ছেড়ে আসলাম। দরজার পাশে দাড়িয়ে সিগারেট টানছি। সিগারেট প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, ফেলে দিতে গিয়ে মনে পড়ল শেক্সপীয়র বলেছিলেন সিগারেটের শেষ তিনটি টান একটি কুমারী মেয়ের কিসের সমতুল্য। উনার কথা স্বরন করে শেষৃ তিনটা টান চোখ বুজে খুব আরাম করে টানতে গেলাম।

কিন' কিস আর খাওয়া হল না ফিল্টার এর কাছে আগুন চলে আসায় ঠোঁট পুড়ে গেল। পোঁড়া ঠোঁটে কি আর কিস খাওয়া যায়। তাই ঠোঁটের পোড়া অংশে হাত বোলাতে বোলাতে নিজের ছিটে গিয়ে বসলাম। .........তুমি কি খুলনা যাচ্ছ বাবা ? খবরের কাগজ পড়তে যাচ্ছিলাম। ভদ্রমহিলার কথায় মুখ তুলে তাকালাম।

বললাম .......জ্বী না আমি যশোর যাচ্ছি। .........ও তাই খুব ভাল আমরাও যশোর যাচ্ছি। তা যশোরে কোথায় যাচ্ছ। অপরিচিত একজনকে নিজের ঠিকানা দিলে কিরকম হয় তাই নানুর বাসার ঠিকানা বললাম........ জ্বী বেজপাড়া যাচ্ছি। .........তাই নাকি ,আমরাও যশোরে বেজপাড়ায় যাচ্ছি।

তুমি বেজপাড়া কোথায় যাচ্ছ। .........পূঁজারমঠ। অমরাও তো পূঁজারমঠের ওখানে যাচ্ছি। নেও বাবা খাও,বলে একটি কলা আমার দিকে এগিয়ে ধরলেন। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী অন্ধকার পূণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো একটুকরো রুটি রবীন্দ্রনাথের এই উক্তিটি মনে করে কলাটি নিলাম।

.......হাসতে হাসতে উনি বললেন বাবা তোমার নামটায় তো জানা হল না। .........টনি। .........বাহ নামটা তো বেশ। বললাম কোথায় বেশ এই নামটা নিয়ে বন্ধুরা অনেক রকম কথা বলে, কেমন জানি কুত্তার নামের মত লাগে। বললেন ও বন্ধূ-বান্ধব ওরকম একটু আধটু মজা করে ।

এই কথা শুনে মনেমনে বললাম উনি কি খাতির করার চিন-া করছে নাকি। কলাটি ছিলে কেবল মুখে দেব হঠাৎ উনি বলে উঠলেন.........টনি দেখতো বাবা তোমাকে তো আমার মেয়ের সাথে পরিচয়ই করিয়ে দেইনি। এর নাম হল সুমি ও ক্লাস টেন এ পড়ে, সুমি ভাইয়াকে সালাম দাও তো মা। মুখে একটা কলার প্রায় অর্ধেক পুরে কেউ কথা বলতে পারে নাকি তারপরও কষ্ট করে বলল স্লামালিকুম। ...বললাম ওয়ালাইকুমসালাম।

মনে মনে বললাম বাহ এটাই তো চাচ্ছিলাম । যাই হোক আবার আমি খবরের কাগজ পড়তে শুরু করলাম। সন্ধা সাতটা বেজে গেছে প্রায় বিশ মিনিট আগে। এই বিশটা মিনিট ট্রেন উথলী চুয়াডাঙ্গায় এসে দাড়িয়ে আছে। যাত্রীরা সব অধৈয্য হয়ে পড়েছে।

কি এমন সমস্যা থাকতে পারে যার জন্য ট্রেন এতক্ষন এই ষ্টেশনে এসে দাড়িয়ে আছে। যেখানে দাড়ানোর কোন কথায় নেই। এরই মধ্যে আমার কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়েছে তার মধ্যে একজন হল পুলিশের এস আই নাম সবুজ। এক দিনের ছুটিতে বাড়িতে যাচ্ছে বিয়ের জন্য। মেয়ে পছন্দ করায় ছিল, শুধু এনগেজমেন্টের জন্য বাড়ি যাচ্ছে।

এনগেজমেন্টে হল আগামী কাল । প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট যখন হয়ে গেল তখন সবাই ঠিক করলাম এবার ষ্টেশন মাাষ্টার এর কাছে যেতে হবে সমস্যা জানার জন্য। কয়েকজন মিলে গেলাম কিন' গিয়ে দেখি উনি নাই। উনাকে খুজার জন্য লোক পাঠানো হলে উনি আসল । তারপর যা বলল তা কখনও শুনতে হবে কল্পনায় করিনি।

উনি বললেন সামনের বেশ কিছু দুরে মাঠের মধ্য খানে লাইনের উপর একাটা মালগাড়ী উল্টিয়ে গেছে। ঘন্টা দুয়ের মধ্যে আশা করি ঠিক হয়ে যাবে। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.