আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচনে যাব না হতেও দিব না

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, একতরফা নির্বাচনে আমরা যাব না, করতেও দেব না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, হয় সংসদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল আনুন, না হয় ক্ষমতা থেকে বিদায় নিন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতার মাধ্যমে সমঝোতার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। তারপরও যদি তারা নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে চান, তাহলে বিএনপি সাড়া দেবে। গতকাল বিকালে নরসিংদীর পৌর শিশুপার্ক মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে বলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আপনারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন। আর এখন আপনারা বলছেন, বিএনপি নাকি আন্দোলন করতে পারে না। এটা ঠিকই বলেছেন, আপনাদের মতো আমরা কথায় কথায় মানুষ হত্যা করতে পারি না। কিন্তু বর্তমানে আমাদের যে কর্মসূচি চলছে, তার মধ্যে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে না নিলে হরতাল-অবরোধসহ লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনারাও এই রাস্তায় বসে পড়বেন।

উঠে যাবেন না। জনসভায় জাতীয় সংসদের আসন্ন অধিবেশনেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিল আনার জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, নির্দলীয় কিংবা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া ১৮ দলীয় জোট কোনো নির্বাচনে যাবে না। একদলীয় নির্বাচনে আমরা অংশ নেব না। হতে দেওয়াও হবে না।

তার মানে এই শেখ হাসিনা একা নির্বাচন করবেন? আমরা সেটাও হতে দেব না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে পালানোর পথ পাবেন না। তা এখন আপনারাই চিন্তা করে দেখুন কি করবেন। দাবি না মানলে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থানের মতো টানা কর্মসূচি দেওয়া হবে। লাগাতার হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিও আসবে।

রাস্তায় অবস্থান করে এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হবে, হয় নির্দলীয় সরকার দেবে, না হয় হাসিনা বিদায় নেবে। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে নরসিংদীর বালুর মাঠে মিছিলের স্রোত নিয়ে আসতে থাকেন বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা। পুরো জেলায় গতকাল ছিল উৎসবের আমেজ। অধিকাংশ দোকানপাটসহ বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ ছিল। ঢাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার নেতা-কর্র্মীরাও জনসভায় অংশ নেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসে াত ছাপিয়ে যায় আশেপাশের রাস্তা, ভবনের ছাদসহ সর্বত্র। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহনের ছাদেও অবস্থান নেন নেতা-কর্মীরা। বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে নরসিংদী জেলা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচ শতাধিক তোরণ লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ স্থানীয় নেতাদের প্রতিকৃতি সম্বলিত পোস্টার, ডিজিটাল ব্যানারও চোখে পড়ে অনেক।

বিকাল ৫টায় সরাসরি জনসভায় উপস্থিত হন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া।

এর আগে বেলা পৌনে ২টায় গুলশানের বাসা থেকে সড়কপথে রওনা দেন তিনি। এ পথে রাজধানীর নয়াপল্টন, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগর, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ, সোনারগাঁ মোড়, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, বুলতা, নরসিংদীর মাধবদীসহ বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে বিরোধীদলীয় নেতার গাড়িবহরকে হাত নেড়ে স্বাগত জানান। বিরোধীদলীয় নেতা ঢাকা থেকে এসে সরাসরি মঞ্চে আসেন। বেলা সোয়া ২টায় জেলার জনসভার কার্যক্রম শুরু হয়।

বিকাল ৫টা ২০ মিনিট থেকে বেগম জিয়ার প্রায় পৌনে একঘণ্টার বক্তব্যের বড় একটি অংশজুড়েই ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন ও সরকারের বিরুদ্ধে নানা দুঃশাসনের অভিযোগ। জনসভা শেষে বিএনপি নেতা খায়রুল কবীর খোকনের বাসায় সামান্য বিশ্রাম নিয়ে রাতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বেগম জিয়া।

জনসভায় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতাদের মুক্তি চেয়ে ডিজিটাল ব্যানার টানায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। বালুর মাঠের দুই পাশে যুদ্ধাপরাধের অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অধ্যাপক গোলাম আযম, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছবি সম্বলিত ব্যানারের মাধ্যমে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের মামলায় অভিযুক্ত দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছবিও দেখা যায়।

মাঠের দুই পাশে এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাপরাধ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাতিল কর, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল বেআইনি ইত্যাদি নানা স্লোগান সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার টানানো হয়। জনসভা মঞ্চের সামনের দিকে পূর্ব পাশে জামায়াত ও শিবিরের ব্যাপক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়। অসংখ্য ব্যানার-ফেস্টুনের মধ্যে দলের সাবেক মহাসচিব প্রয়াত আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার হাস্যোজ্জ্বল প্রতিকৃতি সম্বলিত ব্যানার সবার দৃষ্টি কাড়ে। এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রনেতা সানাউল হক নীরুর বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুনও ছিল বেশ লক্ষণীয়।

জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে জোট নেতাদের মধ্যে এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদের সদস্য এম শামসুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, জনসভা প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, দলের যুগ্ম-মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, সানাউল্লাহ মিয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নূরে আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া স্থানীয় নেতাদের মধ্যে সাবেক এমপি রোকেয়া আহমেদ লাকী, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নাল আবেদীন, সুলতান উদ্দিন মোল্লা, মঞ্জুর এলাহী, দীন মোহাম্মদ দীপু, নূরুল ইসলাম, জামায়াতের মাওলানা অধ্যাপক শেখ মালেক, আবদুস সাত্তার, মোবারক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও জেলা সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার।

সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মাথা ঠিক নেই। তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

তিনি সংবিধানের দোহাই দিয়ে আলোচনার পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা সব সময় আলোচনা চাই। সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব এলে আমরা তাতে সাড়া দেব। ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব খাতে উন্নয়নের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজার, হলমার্ক, ডেসটিনি কেলেঙ্কারির কথা জনগণকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ১৮ দলীয় জোট নেতা বলেন, সরকারের সাড়ে চার বছরে মানুষ খুন হয়েছে ২৩ হাজার, বন্ধ হয়েছে পাঁচ হাজার গার্মেন্ট কারখানা, খালি হাতে ফিরছেন প্রবাসীরা, স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা দেশের অর্থনৈতিক খাত।

ক্ষমতাসীনদের হাতে জনগণ এবং গণতন্ত্র কোনোটাই নিরাপদ নয় বলেও দাবি করেন বেগম জিয়া।

বক্তব্যের শুরুতেই বৃষ্টিতে ভিজে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকার কোনো উন্নয়ন করেনি। লুটপাট আর দুর্নীতি করেছে। তাই তারা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চায়।

কারণ ক্ষমতায় থাকলে সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন হেলিকপ্টারে করে ঘুরে ঘুরে নৌকায় ভোট চান। তিনি ক্ষমতায় থেকে গত সাড়ে চার বছরে দুর্নীতি আর লুটপাট করেছেন। এটা করতে করতে নৌকার তলা ফুটো হয়ে গেছে। এখন নৌকায় পানি উঠে ডুবে যাওয়ার অবস্থা।

এই নৌকা দিয়ে আর কাজ হবে না।

তিনি বলেন, তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবি জানান। তিনি তখন সংবিধানের ধার ধারেননি। গলার জোরে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করতে দেবেন না। সংবিধানেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান ছিল।

কিন্তু গায়ের জোরে আদালতের দোহাই দিয়ে তারা তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করেছেন। বিরোধী দলের সঙ্গেও কোনো আলোচনা করেননি। সুশীল সমাজের কোনো পরামর্শও গ্রহণ করেননি। বেগম জিয়া প্রশ্ন রাখেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবেন, মন্ত্রিপরিষদ থাকবে, তখন নাকি নির্বাচন হবে। সেটা কোনো দেশে হয় না।

এ সময় তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, তাহলে আপনারাই বলেন, সেই নির্বাচন কি গ্রহণযোগ্য হতে পারে? এ সময় সমাবেশ থেকে সমস্বরে জবাব আসে- 'না', 'না'। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ১৮ দল ছাড়াও সুশীল সমাজ, বিকল্পধারা, কাদের সিদ্দিকী ও ড. কামাল হোসেনসহ সবাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা মানেন না। ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংবিধান সংশোধন করেছেন। তিনি বলেন, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের বিল এনে জাতীয় সংসদে আইন পাস করে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

সেখানে সব দলের অংশগ্রহণ থাকবে। বিরোধী দল সেই নির্বাচন চায়। তিনি বলেন, জরিপে দেখা গেছে ৯০ ভাগ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক চায়। এখন জরিপ করলে দেখা যাবে ৯৮ শতাংশ মানুষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।

বিএনপি জোট ক্ষমতায় থাকাকালে ১৭৩টি হরতাল করেছেন শেখ হাসিনা এমন অভিযোগ করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে শেখ হাসিনা ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও করেছেন।

বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। সে তুলনায় বিএনপি অনেক কম হরতাল করেছে। নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন ও অপদার্থ আখ্যা দিয়ে বিএনপি প্রধান বলেন, এই নির্বাচন কমিশন অপদার্থ, মেরুদণ্ডহীন ও সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন কমিশন 'জি হুজুর জি হুজুর' করবে। তাদের পদত্যাগ করা উচিত।

নিজেদের আজ্ঞাবহ কমিশনের জন্যই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চান। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন একটা খেলা। মাঠ যদি সমান না থাকে তাহলে কি খেলা জমবে?

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। নরসিংদীর জনসভায় তিনি বলেন, শোনা যায় এখন জনগণের টাকা যায় মন্ত্রী বাহাদুর-এমপিদের পকেটে। অনেকে কানাডা, মালয়েশিয়ায় বাড়ি কিনেছেন।

তারা সব ঠিকঠাক করছেন। অবস্থা বুঝে সবাই কেটে পড়বেন। আমরা দুর্নীতিকে প্রধান শত্রু বলে মনে করি। এর বিরুদ্ধে আমরা কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে।

নির্বাচনের মাধ্যমে তার দল সরকার গঠন করলে নতুন ধারার সরকার গঠনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করব। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, তথ্য-প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, বিদ্যুৎ ঘাটতি হ্রাসে ব্যবস্থা গ্রহণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দ্রুত ট্রেন সার্ভিস প্রবর্তন, গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ প্রভৃতি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে।

রাজধানী ঢাকাকে একটি সুন্দর মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, এখন বিদেশিরা বলেন, ঢাকা নাকি মানুষের বসবাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমরা এই শহরকে সুন্দর একটি মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলব। যানজট নিরসন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেব।

পোশাকশিল্পে সরকারের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাভারের রানা প্লাজার মালিককে এখন কারাগারে জামাইয়ের আদরে রাখা হয়েছে। তার নেতা মুরাদ জংকে এখনো ধরা হয়নি। লোকজন বলে থাকে সাভারের ওই রানা প্লাজা ভবনে মাদক ব্যবসা চলত। আমরা আগামীতে ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের মানমর্যাদা বৃদ্ধি করব। স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিমর্ূলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নতুন ধারার সরকার ও রাজনীতি সম্পর্কে খালেদা জিয়া বলেন, নতুন ধারার সরকার কি তা এখনই নয়, আরেকটু পরে প্রকাশ করব। এখন বললে ক্ষমতাসীনরা এটাকে তাদের নিজেদের বলে চালিয়ে দেবে। আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করব না। আমাদের রাজনীতি হবে পরিবর্তনের।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নরসিংদী পৌরসভার চেয়ারম্যান লোকমানকে হত্যা করা হয়েছে।

কিন্তু বিচার হয়নি। বিএনপি জোট ক্ষমতায় গেলে খুনি যে-ই হোক না কেন তাকে ধরা হবে। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিতে গণহত্যার অভিযোগ তুলে বিএনপি নেত্রী বলেন, এ জন্য আওয়ামী লীগকে একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, মতিঝিলে বাতি নিভিয়ে হামলা হয়েছে। দুটি টিভির লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ওই দিন যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, সে জন্য আওয়ামী লীগকে একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এর আগে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অবহেলাকে দায়ী করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.