আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গার্মেন্ট চালচিত্র

সরকার গঠিত বিশেষ মন্ত্রিসভা কমিটি দেশের পোশাক কারখানাগুলোর যে চিত্র তুলে ধরেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক। কমিটির পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ কারখানা ভবনই বিধি মেনে নির্মাণ করা হয়নি। শত শত মানুষ কাজ করে যে ভবনটিতে সেটি নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানা হলো কিনা তা দেখারও কেউ নেই। প্রতিবেদনে 'নেই'-এর তালিকা এতই দীর্ঘ যে, স্পষ্ট হয়ে যায় যেনতেনভাবে অর্থ উপার্জন মালিকপক্ষের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ পোশাক কারখানায় আগুন লাগলে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। নেই বহির্গমনের সিঁড়ি। ভবনের পাশে পাকা জলাধার নেই, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র নেই। নেই পার্টিসিপেশন কমিটি, চিকিৎসার ব্যবস্থাও অনুপস্থিত। নেই বিশ্রামাগার, কারখানায় বর্জ্য বিশোধনাগার নেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে। রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এবং চট্টগ্রামের ২২৭টি কারখানা প্রদর্শন করে মন্ত্রিসভা কমিটির পক্ষ থেকে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তাতে স্পষ্ট হয় কেন বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে এত প্রশ্ন, পোশাক কারখানাগুলো কেন বারবার শ্রমিকদের মৃত্যুকূপ হিসেবে আবিভর্ূত হচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত হওয়ার পর দেশের পোশাক কারখানাগুলোর হালহকিকত জানতে মূলত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নির্দেশে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২২৭টি তৈরি পোশাক কারখানা সরেজমিন পরিদর্শন করে ৪৬০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বিজিএমইএ, বিকেএমএ, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, রাজউক শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদফতরের সহায়তা নেওয়া হয়। প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হয়েছে। তৈরি পোশাক খাত দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরার ভূমিকা পালন করছে। ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এই খাত। দেশের রপ্তানি-বাণিজ্য স্ফীত হচ্ছে তৈরি পোশাক খাতের অবদানের জন্য। চীনের পরেই বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। তবে যে শ্রমিকদের জন্য মালিকপক্ষের সম্পদ দিন দিন স্ফীত হচ্ছে তাদের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। তাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই মুনাফাখোর মালিকদের কাছে। আর এ কারণেই নিরাপত্তাহীনতা পোশাক শ্রমিকদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রিসভা কমিটির প্রতিবেদন এ অকাম্য অবস্থা বদলাতে অবদান রাখলে তা হবে এক মহোত্তম কাজ।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.