আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"একটি ছবি বিদগ্ধ, উন্নত চিন্তার লোকজনের কাছে আবেদন রাখবে এবং একই সঙ্গে সাধারণ লোকজনকেও আনন্দ দেবে": আকিরা কুরোসাওয়ার সাক্ষাৎকার

সঙ্গে সাহিত্যের সুবাস ...

[আকিরা কুরোসাওয়া বিশ্বখ্যাত জাপানী চলচ্চিত্র-পরিচালক। জন্ম ১৯১০, মৃত্যু ২০০০ সাল। রশোমন, দি সেভেন সামুরাই, কাগেমুশা, ইকিরু, দি থ্রোন অফ ব্লাড ইত্যাদি তার বিখ্যাত ছবির নাম। জাপানী ঐতিহ্য, শিল্প ও সংস্কৃতি নিয়ে নাটকীয় পরিবেশনা ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের চিত্রায়ন তার ছবির অন্যতম আকর্ষণ। ১৯৯০ সালে কুরোসাওয়া তার সামগ্রিক সাফল্যের জন্য অস্কার পুরস্কার লাভ করেন।

কুরোসাওয়ার এই সাক্ষৎকারটি মাইক্রোসফট এনকার্টা রেফারেন্স স্যুট ২০০১ (এনসাইক্লোপেডিয়া) থেকে সংগৃহীত। সাৎকারটিতে কুরোশাওয়া তার ছবিতে রাজনীতি ও দর্শনের গুরুত্বের কথা আলোচনা করেছেন। এছাড়া এতে তিনি তরুণ পরিচালকদের জন্য নানা পরামর্শ দিয়েছেন। ] প্রশ্ন: একটি জাপানী ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন যে র‌্যান ছবিতে আপনি মানুষের কর্মফলকে একটি 'স্বর্গীয়' দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চেয়েছেন। এ-ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন কি? কুরোসাওয়া: আমি আসলে সেরকম কিছু বলিনি।

জাপানী রিপোর্টাররা সবসময় আমাকে ভুলভাবে বোঝে এবং আমি যা বলি সুবিধেমতো তার সারাংশ উপস্থাপন করে। আমি যা বলতে চেয়েছি তা হল এই ছবির কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিন্তন আমার বিস্ময়-ভাবনার ওপরে নির্মিত। বিস্ময়টি হল, ঈশ্বর এবং বুদ্ধ, যদি তারা সত্যিই থেকে থাকেন, তারা কীভাবে অনুধাবন করেন যে মানবজীবন একই ধরনের অবাস্তব আচরণ-প্রকরণের মধ্যে অবস্থান করবে। কাগেমুশা এই দৃষ্টিকোণ থেকে নির্মিত হয়েছে যে একজন কাগেমুশা (ছায়া-যোদ্ধা) এমন একটি যুদ্ধ বসে বসে দেখছেন যাতে তিনি নিজে জড়িত রয়েছেন, এমন এক জায়গায় বসে আছেন যেখান থেকে চারিদিকের যুদ্ধ দেখা যায়। র‌্যান-এ আমি বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম ... আরও বস্তুনিষ্ঠভাবে।

আমি এটা বলিনি যে আমি কোনো স্বর্গীয় জিনিসের মধ্য দিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। প্রশ্ন: আপনি সাধারণত সরাসরিভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবনা থেকে ছবি তৈরি করতেন। স্ক্যান্ডাল (১৯৫০) ও ব্যাড স্লিপ ওয়েল (১৯৬০) এধরনের ছবির উদাহরণ। আপনার সাম্প্রতিক ছবি অতীতাশ্রয়ী এবং অধিক দার্শনিক ভাবনায় আপ্লুত। কুরোসাওয়া: আমি বিশ্বাস করি, আমি যদি বলি এটা কর, ওটা কর, তাহলে পৃথিবী পরিবর্তিত হবে না।

এছাড়া যদি আমরা আমাদের মানবীয় প্রকৃতি ও চিন্তার ধরন ধীরে ধীরে পরিবর্তন না করি তা হলে পৃথিবী পরিবর্তিত হবে না। সমস্যার সোজাসাপ্টা সমাধান বা সামাজিক সমস্যার বর্ণনার চাইতে মানব মনের অশুভ সত্তাকে দূর করতে হবে। এজন্য আমার ছবির বিষয়ের মূল কেন্দ্র এখন দার্শনিক ভাবনা হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন: আপনি যখন তরুণ ছিলেন তখন কি আপনি এভাবে ভাবতেন? কুরোসাওয়া: না, আমি যখন তরুণ ছিলাম তখন ওভাবে ভাবতাম না। আর তাই আমি ওধরনের ছবি একসময় করেছি।

যাহোক আমি পরে বুঝতে পেরেছি যে এগুলো কোনো কাজে আসে না। পৃথিবী পরিবর্তিত হবে না। এটা শুধু ডান থেকে বামে যাবার ব্যাপার না। আমি বিশেষ পর্যায় পার হয়ে আসা সমস্যাগুলোর সমাধান করে আসছি। আমার আত্মবিশ্বাস আছে যে আমি চলচ্চিত্রে কী বলতে চাই তা আমার জানা আছে।

আমি এমন মনে করি না যে আমার ছবির বার্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বরং সেগুলো আমার ভাবনার একেবারে শেষের দিকের উপহার। আমি কিছু শেখাতে চাচ্ছি না বা বিশেষ কোনো বার্তা দিতে চাচ্ছি না, কারণ দর্শকরা এটা পছন্দ করে না। তারা এধরনের ব্যাপারে খুব স্পর্শকাতর। মানুষ ছবি দেখতে যায় আনন্দের জন্য।

আমি মনে করি সমস্যার কথা না শিখিয়েই আমি তাদের সমস্যার ব্যাপারে সচেতন করতে পেরেছি। সমালোচকরা আজকের দর্শকদের নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারে: তারা এখন মস্তিষ্ক দিয়ে ছবি দেখে। না! আমি তাদের বলতে চাই হৃদয় ছবি দেখতে। কারণ আমি সেভাবেই ছবি তৈরি করে থাকি। আমি তাদের সব কিছূর মধ্যে যুক্তি খুঁজতে বলি না।

যারা পয়সা খরচ করে ছবি দেখে তারা ছবিতে যেমনটি আছে তেমনটিই দেখুক। এছাড়া আমি বিশ্বাস করি না যে চলচ্চিত্র হল সাদামাটা কিছু অথচ যার অনেক দিক রয়েছে। একটি ছবি বিদগ্ধ, উন্নত চিন্তার লোকজনের কাছে আবেদন রাখবে এবং একই সঙ্গে সাধারণ লোকজনকেও আনন্দ দেবে। যদি কেবল একটি ছোট গোষ্ঠীর লোকজন একটি ছবি উপভোগ করে তাহলে চলবে না। একটি ছবিকে ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে, সকল মানুষকে সন্তুষ্ট করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনি যখন রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে ছবি করেছেন তখন কি কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপের মুখোমুখি হয়েছেন? কুরোসাওয়া: ইকিরু ছবির শেষাংশে শেষকৃত্যের পরে সবকিছু আবার উকিলের অফিসে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ে। ফিল্ম কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাকে বলেন যে আমরা সে-দৃশ্যের আগে আমলাতন্ত্রকে যথেষ্ট সমালোচনা করেছি, শেষ দৃশ্যটির আর কোনো দরকার ছিল না। আমি উত্তর দিয়েছিলাম, আপনি চাইলে এই দৃশ্যটি কাটতে পারেন; কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনি দয়া করে ছবিটির সবগুলো দৃশ্যই কেটে ফেলুন। কোম্পানিটি সেসময় লোকসানে চলছিল, তাই শেষ পর্যন্ত তারা আমাকে বলে যে ছবিটি যেমন আছে তেমনই থাকুক। যখন আমি সোজাসাপ্টা কিছু বলতে গেছি ফিল্ম কোম্পানিগুলো চেষ্টা করেছে রাজনৈতিক সমস্যাযুক্ত অংশগুলো ছেঁটে ফেলতে।

অবশ্য আমি এধরনের চাপের মুখে নতি স্বীকার করিনি। আপনি উল্লেখ করেছেন যে আমি সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে ছবি করিনি। আমার মনে সন্দেহ আছে যে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে যদি আমি ছবি তৈরি করি তবে কোনো ফিল্ম কোম্পানি তা পরিবেশন করার সাহস করবে না। যদি কোনো কোম্পানি এধরনের ছবি পরিবেশনের ভার না নেয় তবে আমি সেধরনের ছবি তৈরি করার কোনো কারণ দেখি না। দ্য ব্যাড স্লিপ ওয়েল ছবির শেষ দৃশ্য দেখে দর্শকদের প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছেন যে টেলিফোনের অপর প্রান্তে যিনি কথা বলছেন তিনি হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রি কিশি যিনি দুর্নীতির মূল হোতা।

এজন্যই কোম্পানি ছবিটির পুনর্মুক্তি দেয় নি, যদিও প্রত্যেকে ছবিটি আরেকবার দেখার জন্য উম্মুখ ছিলেন। ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপালা বলেছিনের যে এটা তার প্রিয় ছবি। আমি স্পষ্ট করেই প্রধানমন্ত্রির ব্যাপারটা বোঝাতে চেয়েছিলাম যদিও স্ক্রিপ্ট পড়ে ফিল্ম এক্সিকিউটিভরা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। এজন্যই তারা স্ক্রিপ্টটি অনুমোদন করেছিল এবং অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। ফিল্ম এক্সিকিউটিভরা হলেন তারা, যারা চলচ্চিত্র সবচেয়ে কম বোঝেন।

প্রশ্ন: তাদের অবস্থা কি চলচ্চিত্র-সমালোচকদের চেয়েও খারাপ? কুরোসাওয়া: এব্যাপারে কোনো প্রশ্ন চলে না। আমরা চতুরতার সঙ্গে স্ক্রিপ্ট তৈরি করি এবং সেগুলো জমা দিই। ফিল্ম-এক্সিকিউটিভরা আসলেই কিছু বোঝেন না। সমালোচকদের মধ্যে সব ধরনের লোক আছে। অনেক জাপানী চলচ্চিত্র-সমালোচক আছেন অদ্ভূত ধরনের।

তারা এমনভাবে রিভিউ লেখেন যেন তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে― “এবার আমি একটি ভালো রিভিউ লিখব, তাই তুমি একটা খারাপ জিনিস লেখ”। এসব নির্ভর করে কে তাদের পয়সা দিচ্ছে, তাদের নিজস্ব ইচ্ছা বা নিজ ভাবনার ওপর এসব নির্ভর করে না। প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে চলচ্চিত্র-সমালোচনাকে বুদ্ধিবৃত্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে; একাডেমিসিয়ানরা চলচ্চিত্র-সমালোচনায় এসেছেন, কাঠামোবাদের (স্ট্রাকচারালিজম) মতো বিষয় আলোচনায় নিয়ে আসা হয়েছে। আপনি কি মনে করেন চলচ্চিত্র-সমালোচনার মান এতে বৃদ্ধি পেয়েছে? কুরোসাওয়া: তারা সব গালভরা বুলি আওড়ে যাচ্ছে। আমি এসব বড় বড় কথায় বিশ্বাস করি না।

চলচ্চিত্রকে হতে হবে অধিক মানব-অনুভূতি সংশ্লিষ্ট, অধিক সংস্কারমুক্ত। যেমন “চলচ্চিত্রের উল্লম্ব-চেতনা” জিনিসটা কী? তারা এসব পরিভাষা আওড়ে যায়, কিন্তু এসবের সত্যিকারের কী অর্থ আছে আমি বুঝি না। সঙ্গীত-সমালোচনার েেত্রও বিষয়টি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। তরু তাকেমিৎসু এবং অন্যান্যরা বলছেন যে এসব সমালোচকরা কিছুই বোঝে না, এবং তারা ঐসব পরিভাষা দিয়ে কী বাঝাতে চান, তা ভাবতে গিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। হিডিও কোবাইশি (একজন প্রখ্যাত শিল্প-সমালেচক) অনেক সমালোচনা লেখার পর তিনি এই উপলব্ধিতে এসে পৌঁছেছেন যে, সে-সমালোচনাগুলোই তিনি ভালো বলে বাছতে পেরেছেন যেগুলোয় প্রশ্ন-সহকারে প্রশংসা করেছিলেন।

তিনি বিশ্বাস করতেন সমালোচকদের দায়িত্ব হল ভালো দিকগুলো উল্লেখ করে শিল্পীদের উৎসাহ প্রদান করা: খারাপ দিকগুলো উল্লেখ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এর চেয়ে চুপ থাকাই ভালো। যদি আপনি কঠোরভাবে সমালোচনাও করেন, তাতে কাজের কোনো উন্নতি হবে না। তুমি যদি কারো কাজকে ঘৃণা বা অপছন্দ কর, তা হলে উপেক্ষা কর -- কোবাইশি এই-ই বলেছেন। শিল্পী এবং সমালোচকরা কখনোই এক হবেন না।

শিল্পীরা প্রশংসিত হতে চান, সেজন্য তারা যোগ্য হন বা না হন। এছাড়া সমালোচকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে বিষয় হল, অন্যদের অযৌক্তিক সমালোচনাকে টেক্কা দেয়ার জন্য কেউ যখন নেতিবাচক রিভিউ লেখেন; তিনি এটা করেন এজন্য নয় যে তিনি তাতে বিশ্বাস করেন, তিনি আসলে সবার ওপরে থাকতে চান। অবশ্য সমালেচকদের সমালোচনা করার, গালমন্দ করার অধিকার আছে। কিন্তু আমি যা সহ্য করব না, তা হল, কেউ যদি আমাকে ঘৃণাসহ আক্রমণ করে এবং আমাকে বোকা ও কাণ্ডজ্ঞানহীন ভাবে। সমালোচনা আন্তরিকতার সঙ্গে করা উচিত, ঘৃণার সঙ্গে নয়।

প্রশ্ন: আপনি একবার বলেছিলেন যে তরুণদের কেউ পরিচালক হতে হলে তাদের খুব গুরুত্বের সঙ্গে ওয়ার্ল্ড কাসিকস্ পড়া উচিত। আপনি এখনও তা বিশ্বাস করেন? কুরোসাওয়া: অবশ্যই। সবকিছু পড়া অসম্ভব। সুতরাং আপনি আপনার প্রিয় লেখকদের নির্বাচন করবেন। এরপর আপনাকে সেসব লেখকদের প্রিয় লেখাগুলোকে নির্বাচন করবেন এবং বারবার পড়বেন।

এর ফলে এসব লেখার চরিত্রগুলোকে আপনি গভীরভাবে বুঝতে পারবেন। একবার পড়ে বোঝা আর দশবার পড়ে বোঝার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য থাকবে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি প্রযোজ্য। যে-চরিত্রটিতে তিনি অভিনয় করতে যাচ্ছেন সেটি ভালোভাবে বোঝার জন্য চরিত্রটিকে বারবার পড়তে হবে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হল চিত্রনাট্য লেখা।

এটা হল ছবি নির্মাণের মৌলিক বিষয়। কারণ একটি ভালো চিত্রনাট্য যদি তৃতীয় শ্রেণীর একজন পরিচালকের হাতেও পড়ে, তাও একটি ভালো ছবি বেরিয়ে আসবে; কিন্তু একটি খারাপ চিত্রনাট্য একজন প্রথম শ্রেণীর পরিচালকের হাতে পড়লেও তা থেকে কিছুতেই ভালো জিনিস বেরিয়ে আসতে পারে না। এজন্য আপনাকে চিত্রনাট্যের গুরুত্ব বুঝতে হবে। আবার, আপনি যখন চলচ্চিত্রনির্মাণ অধ্যয়ন করতে যাবেন, আপনার অনেক টাকা-পয়সা খরচ করতে হবে। কিন্তু চিত্রনাট্য লিখতে আপনার কেবল কাগজ ও কলম প্রয়োজন।

বিশেষ করে জাপানে, টেলিভিশনে অনেক ভালো চিত্রনাট্য প্রয়োজন; আর চলচ্চিত্রে তারা ভালো চিত্রনাট্যের জন্য হন্যে হয়ে খুঁজে মরছে। আপনি যদি একটি ভালো চিত্রনাট্য লিখেন তবে আপনি দ্রুত অর্থোপার্জন করতে পারবেন। আমি তরুণদের সবসময় চিত্রনাট্য লিখতে বলেছি। কিন্তু তারা তা করে না। ... বালজাক একবার বলেছিলেন ঔপন্যাসিকদের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল বর্ণের মাধ্যমে লাইনের পর লাইন লেখার বিরক্তিকর কাজে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া।

এখন এই তরুণেরা যথেষ্ট ধৈর্য্যশীল নয়। এছাড়া তারা এমনকি উপন্যাসও পড়তে চায় না। যদিও তারা নিজেদের মেধাবি মনে করে কিন্তু তারা তা প্রদর্শনের মতো কিছু করে নি। র‌্যান ছবি নির্মাণের সময় আমি তরুণ সহকারী পলিচালকদের, উদ্যমী তরুণদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছি। প্রস্তাবিত চিত্রনাট্যসমূহের মধ্যে আমি তিনটি নির্বাচন করেছিলাম।

আমি তরুণ প্রতিভাদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি। একজন ইটালীয় তরুণ র‌্যান ছবির সহকারী পরিচালক হয়েছিল। সে জাপানী বলা ও লেখা শিখেছিল। পড়া ও লেখা অভ্যাসগত হতে হবে; এছাড়া একসময় এটা খুব কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। ইদানীং তরুণ সহকারী পরিচালকেরা চিত্রনাট্য লেখে না।

তারা বলে যে তারা খুব ব্যস্ত। আমি সবসমই লিখি। লোকেশনে প্রধান সহকারী পরিচালকের কাজ খুব কঠিন ও ব্যস্ততাময়; আমি যখন তরুণ অবস্থায় প্রধান সহকারী পরিচালক ছিলাম, আমি রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে লিখতাম। আমি সেসব চিত্রনাট্য সহজেই বেচতে পারতাম এবং আমার সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রাপ্ত উপার্জনের চাইতে বেশি পয়সা কামাতে পারতাম। এর মানে হল আমি আরো পান করতে পারতাম।

তাই আমি লিখতাম, পান করতাম, এরপর আবার লিখতাম। আমার বন্ধুরা অপো করত যে আমি চিত্রনাট্য লিখব, পয়সা কামাবো এবং একত্রে পান করব। যখন আমরা পান করতে যেতাম, সবসময়ই চলচ্চিত্র নিয়ে আলাপ করতাম। এসব আলাপের কিছু অংশ থাকত পরবর্তী কাজ সম্পর্কিত। এখনও লোকেশনে কাজের শেষে যখন আমরা অভিনেতা ও ক্র-ুদের সঙ্গে পানে বসি, আমরা আমাদের কাজ সম্পর্কে কথা বলি, এবং মাঝে মাঝে এই আলাপের মধ্যেই আমাদের সবচেয়ে কাজের কথাটি বলে থাকি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.