আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামের নবী সর্বকালের সেরা সমরবিশারদ।



আপনি যখন বলতে লাগলেন মুমিনগণকে-তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের সাহায্যার্থে তোমাদের পালনকর্তা আসমান থেকে অবতীর্ণ তিন হাজার ফেরেশতা পাঠাবেন ---------- অবশ্য তোমরা যদি সবর কর এবং বিরত থাক আর তারা যদি তখনই তোমাদের উপর চড়াও হয়, তাহলে তোমাদের পালনকর্তা চিহিßত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা তোমাদের সাহায্যে পাঠাতে পারেন। ---------- দুইটা দুই ধরনের পরিস্থিতি। প্রথম পরিস্থিতির চাইতে দ্বিতীয়টা অপ্রস্তত পরিস্থিতি। বিরত থাকা অবস্থায় শত্রু ঝাঁপিয়ে পড়লে সাহায্য বেশী দরকার হবে। তাছাড়া কত সংখ্যক ফেরেশতা পাঠানো হবে তা যখন আল্লাহ তায়ালা নিজেই ঠিক করছেন তখন এটাই বুঝতে হবে যে, আল্লাহ্ই ভাল জানেন কোন পরিস্থিতিতে কত সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে।

সে যা ই হোক। 'ফেরেশতা' দিয়ে সাহায্য করার বিষয়টি আসলে সাহাবীদেরকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করার একটি কৌশল। --- আল্লাহ তো শুধু সুসংবাদ দান করলেন যাতে তোমাদের মন আশ্বস্ত হতে পারে। আর সাহায্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হতে পারে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তির অধিকারী হেকমত ওয়ালা।

-- ফেরেশতা দিয়ে সাহায্য করার বিষয়টি এমন যে, সাহাবীরা অল্প সংখ্যক হওয়া সত্বেও বিপুল সংখ্যক শত্রুর বিরুদ্ধে জয়যুক্ত হয়েছিলেন। বিষয় যা ই হোক, তারা অল্পসংখ্যক তুলনামূলকভাবে বিপুল সংখ্যক শত্রুর সাথে জয়ী হওয়ার যে মানসিক কারণ তা ই 'ফেরেশতার' সাহায্য বলে বুঝতে হবে। যেমন, যুদ্ধে মুসলিম যোদ্ধা দলের যে শৃংখলা এটা আরবের বর্বর জাতির জন্য ছিল এক অভুতপূর্ব ব্যাপার। যুদ্ধে মুসলিম দল ঠিক নামাজের কাতারের মত দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করত। সামনের সারি থেকে কেউ শহীদ হয়ে গেলে তৎক্ষণাত দ্বিতীয় সারির একজন সামনের ফাঁকা স্থান পূরণ করত, ঠিক যেভাবে নামাজে করতে হয়।

একারণেই একজন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, 'মুহাম্মদের ধর্ম আমি মানিনা তবে তিনি যে ছিলেন সর্বকালের সেরা সমরবিশারদ সেকারণে আমি তাকে ভক্তি করি। তিনিই প্রথম একটি বর্বর সমাজের লোকজনকে একক নেতৃত্বে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি প্যারামিলিটারী সোসাইটি গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। সে সমাজের লোকেরা যেমন সংসার করত তেমনি আবার দিনে পাঁচবার ঠিক আর্মিদের মত লাইনে ফল ইন করে পিটি প্যারেড করত (নামাজ পড়াকে তিনি পিটি প্যারেড বলে বুঝছিলেন)। " এভাবে মুসলিম দল ছিল এক সুশৃংখল যোদ্ধাদল। দ্বিতীয়তঃ মুসলিম যোদ্ধাদলের ছিল একটা কেন্দ্রমুখী যুদ্ধচেতনা- 'আল্লাহর সন্তস্টি অর্জন'।

অন্যেদিকে কাফের দলের সদস্যরা যুদ্ধে আসার আগেই পরস্পরের মধ্যে চুক্তি করে নিত যুদ্ধে জিতলে কে কি পাবে। কে ঐ খেজুর বাগানটা নিবে আর কে পানির কুয়াটা পাবে ইত্যাদি। এভাবে মুসলিম দলের যুদ্ধচেতনা ছিল একটা টিমস্পিরিট। অন্যদিকে কাফের দলের সদস্যদের ছিল ব্যক্তিগত লাভালাভের চিন্তা। সেখানে কোনো টিম স্পিরিট ছিল না।

এভাবে দেখা যেত যুদ্ধ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কাফের দলের সদস্যরা খেজুর বাগান কিংম্বা পানির কুয়া পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে জান বাঁচাতে দৌড় দিত। ছত্রভঙ্ঘ অবস্থা। অন্যদিকে মুসলিম দল যেদিকে ধাওয়া করে একেবারে ভুমিকম্পের মত। মৌচাকের দলের মত কাতারে কাতার। সামনের কাতার থেকে কেউ শহীদ হয়ে গেলে সাথে সাথে আবার তা পূরণ হয়ে যায়।

এসব দেখে কাফেরদের মানসিক শক্তি যায় ভেঙ্গে। সামনের কাতার থেকে কতল করার পর দেখে যা ছিল তা ই আছে। ফলে ভগ্ন মনোরথে পৃষ্ঠপ্রদর্শন। যাহোক, এভাবেই শৃংখলার দ্বারা, মানসিক শক্তি প্রদর্শনের দ্বারা মুসলিম যোদ্ধারা অল্প সংখ্যক হয়েও জয়লাভ করতেন। এটাকেই বলা হয় ফেরেশতার সাহায্য।

আজকের যুগে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের চাঙ্গা করতে রীতিমত বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্রশিক্ষন দেয়া হয়। আর আল্লাহ তায়ালার কুরআনে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগের মানুষ যে ভাবে বুঝতে চাইত সেভাবেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। মোটের উপর সেটা 'ফেরেশতার' সাহায্যই বটে। কারণ কোন ঘটনার দ্বারা কার মনে কি ভয় সঞ্চার হবে এটা তো শেষ পর্যন্ত দৈবচয়নের দ্বারাই ঘঠে। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালাই মানুষের মনের মধ্যে ভয় কিম্বা হেদায়াত উভয়ই সঞ্চার করেন।

আল্লাহ তায়ালা সকলকে হেদায়াত দান করুন। আমীন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.