আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণতন্ত্রের বিষফোঁড়া

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

আমাদের দেশে গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে সবগুলো রাজনৈতিক দলই চিৎকার চেঁচামেচি করে। সবাই গণতন্ত্রের পক্ষে, গণতন্ত্রের বিপক্ষে কেউ নাই। তবু এদেশে বার বার গণতন্ত্র বিপন্ন হয় , তাদের জন্য। গণতন্ত্র বলতে আমরা সাধারণ মানুষ বুঝি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। যারা বেশি ভোটারের সমর্থন পায় তারা সরকার গঠন করে।

কিন্তু যে যত বেশি ভোট পাক না কেন কিংবা যে সরকার যত বেশি জনপ্রিয় হোক না কেন, তার মেয়াদকাল অসীম নয়। তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। অত্যন্ত ভালো সরকারকেও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্দিষ্ট সময় শেষে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। রাষ্ট্রের ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর চর্চা আমাদের দেশে চালু হয়েছে। কিন্তু দলের শীর্ষ পদ থেকে কোন রাজনীতিবিদ সরে দাঁড়ায় না।

অর্থাৎ একই ব্যক্তি রাষ্ট্রের জন্য গণতান্ত্রিক হলেও তার নিজের দলের জন্য একনায়কতান্ত্রিক। বাংলাদেশের যে কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে এ কথা সত্য। দলের শীর্ষ পর্যায় তো বটেই যে কোন আঞ্চলিক কমিটিতে যারা একবার নেতা হয়েছে, তার না মারা যাওয়া পর্যন্ত ওই পদ আর ছাড়ে না। একনায়কের মতো আমরণ তার নেতার পদটিকে আকড়ে ধরে রাখে। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তার গণতান্ত্রিক শাসক হলেও দলের ক্ষেত্রে একনায়কতান্ত্রিক।

ঠিক এ কারণেই বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র থাকলেও যোগ্যতর নেতৃত্ব তৈরি হতে পারে নি। আজ আমরা নেতৃত্বের সংকটে ভুগছি। নেতা নামের যাদের দেখছি, তারা তার উপরে থাকা নেতার চামচা ছাড়া আর কিছু নয়। তোষামোদ ছাড়া রাজনীতিবিদদের করার মতো কোন কাজ নেই। কেননা তারা ভালো করেই জানে, তাদের উপরে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ পরিবর্তন হওয়ার কোন সম্ভাবনা ইহজনমে নাই।

তাই তাদের কোন মতামতের সাথে দ্বিমত পোষণ করা মানে দল থেকে বিদায়। অতীতে যারাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছে, তারা দলের জন্য ভালো ও যোগ্য নেতা হলেও অত্যন্ত অপমানজনকভাবে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক দলে এই একনায়কত্ব চর্চার বিষময় ফল হল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও উত্তরাধিকার রাজনীতি। ফলে আমাদের মতো এত সুন্দর একটা দেশ নিয়ে বার বার পিছিয়ে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক দলের এ বিষফোঁড়া যতদিন থাকবে, ততদিন আমাদের দেশে কখনই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।

আবারও সেই পুরোনো কথা বলি, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। বাস্তবে উল্টোটা সত্যি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।