আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইফুর রহমান ও বাগান বাড়ি!



শাহাবুদ্দিন শুভ ১ সিলেটে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান দুগ্ধ মেলা উদ্বোধন কালে বললেন এরকম একটিন গাই (গাভী) আমার বাগান বাড়িতে থাকলে খুব মানাইত। সাথে সাথে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামার কতৃপ ২২টি উন্নত জাতের গাভী ট্রাক ভর্তি করে পাঠিয়ে দিলেন। আমাদের সেই সাবেক মন্ত্রী মহোদয় তা গ্রহণ করে তাদের কে ধন্য করে দিলেন। সাইফুর রহমান চাইলে বলতে পারতেন এগুলো আমাকে নয় দেশের কোন গরীব অথবা বিধবা মহিলাদের দিয়ে দাও। একটি গাভী দিয়ে তারা তাদের পরিবারে জন্য আহার যোগাতে পারবে।

সন্তানটাকে স্কুলে পাঠাতে পারবে তার বাবা মা। বাবার সাথে তাকে আর যেতে হবে না অন্যের জমিতে কামলা খাটতে। দেশে একটি পরিবার থেকে একটি শিতি সন্তান বেড়িয়ে আসত। আসলে আমাদের এই গুনী লোকটি তা চাননি। ২ আমরা দেখেছি যে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চল এমনকি থানা সদরের পাশের অনেক গ্রাম আছে যে গুলোতে বিদ্যুত নেই।

কিন্তু আমাদের দেশের সাবেক এই মতাধর ব্যাক্তি তার বাগান বাড়ির জন্য সরকারি অর্থায়নে বিদ্যুত নিয়েছেন। মৌলভী বাজার পল্লীবিদ্যুত সমিতি বাড়ির ভেতরের আবাসিক সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মভর্হিভুত ভাবে রাস্তায় বাতির সংযোগ দিয়েছে। আর এই বাগান বাড়িতে ২০০৬ সালের ২০ আগষ্ট আবাসিক সংযোগ এবং একই বছর ৩০ সেপ্টেম্বর রাস্তায় বিদ্যূত সংযোগ প্রদান করা হয়। তিনি চিন্তা করলেন না যে তার দেশের ল ল মানুষ বিদ্যুত ছাড়া বসবাস করে। তাদের সন্তানদের পড়তে হয় হারিকেনের আলোতে।

অথচ বাগান বাড়িরর রাস্তাগুলো ঝল ঝল করে উঠে সুডিয়ামের আলোতে! এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার নয়, আলোকিত। অনেক পৌরসভা এমনকি সিটি কর্পোরেশনের সোডিয়াম লাইট গুলো সব সময় সঠিক আলো দিতে পারে না। কারণ অনেক সময় এগুলো নষ্ট থাকে। কষ্ট করতে হয় সাধারণ জনগণকে। তাই বলে কি মন্ত্রীর বাগান বাড়ি অন্ধকার থাকবে! ৩ এই গরিব দেশটার ল ল মানুষ নিরাপদ পানি পান করা থেকে বঞ্চিত।

তাদের সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই সাধ্য নেই একটি নলকুপ স্থাপনের। আর কোন কোন স্থানে কয়েকটি গ্রাম মিলেও খোঁজে পাওয়া যায় না একটা নলকুপ। সন্তানদের তিকরবে জেনেও পুকুর অথবা ডুবার পানি পান করতে হয়। অথচ সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর বাগান বাড়িতে পর্যায়ক্রমে তিনটি নলকুপ স্থাপন করা হয় সরকারি অর্থায়নে। প্রায় দেড়লাখ টাকা ব্যায়ে এগুলোর কাজ সমাপ্ত করা হয়।

২০০৩ সালের ২৭ মার্চ ১১৯ মিটার গভীর, ২০০৪ সালে ২৬ জুন ১৮৯ মিটার গভীর, ২০০৬ সালের ১৯ জুন ২০১ মিটার গভীর এই নলকুপ গুলো স্থাপন করা হয়। একটি বাড়ির জন্য তিনটি নলকুপ! যে খানে দেশের মানুষ নিরাপদ পানি পান করতে পায় না সেখানে সাবেক মন্ত্রীর বাগান বাড়িরর গরু পান করে নিরাপদ পানি! ৪ সরকারের অর্থায়নে ২৭ লাখ টাকা ব্যায় করে জেলা পরিষদ ও এলজিইডি বাগান বাড়ির ভেতরে ও বাইরে পিচঢালা রাস্তা তৈরী করে। মৌলভী বাজার-শ্রীঙ্গল সড়ক থেকে বাগান বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার পিচঢালা রাস্ত তৈরী করা হয়। বাগান বাড়ির ভেতরে তৈরী করা হয় আরও তিনটি রাস্তা যেগুলোর দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার। মৌলভী বাজার জেলা পরিষদের আওয়াতায় ২০০১-০২ অর্থবছরে বাগান বাড়ির রাস্তা উন্নয়নের নামে তিন লাখ টাকার মাটি ভরাট কাজ করা হয়।

২০০২-০৩ অর্থ বছরে বাগান বাড়ির রাস্তার জন্য গাইড ওয়াল তৈরী করা হয়। আর এতে ব্যায় হয় ৯ লাখ ১৩ হাজান টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ১৩ ল টাকায় কাজের সমাপ্তি টানা হয়। বাগান বাড়ির মুল রাস্তায় জন্য মৌলভী বাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী শাখা ১০ ল ৮০ হাজার টাকা ব্যায়ে প্রকল্প বাস্ত বায়ন করে। দেশের মানুষ না হয় ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে চলাচল করল।

আমাদের দেশের সর্বোচ্চ বাজেট পেশকারী এই মন্ত্রীতো আর সাধারণ মানুষ নন উনার জন্য চাই ভাল রাস্তা হোক না সেটি বাগান বাড়ি! ৫ দেশে এমন কিছু দরিদ্র মানুষ আছে যাদের বেঁচে থাকার মত কোন অবলম্বন নেই। কোন কোন দিন তাদের দু’মুঠো ভাত জুটে না। না খেয়ে থাকতে হয় তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে। কি কষ্ট তাদের একথা কেউ ভাবতে চায় না। দেশের একপ্রান্তের মানুষ মঙ্গায় আক্রান্ত হয়ে না খেয়ে মারা যায় কিন্তু তাদের দিকে কতটা সাহায্যের হাত প্রসারিত হয় তা আমাদের জানা।

দেশের একটা বড় অংশ আছে বিধবা মহিলা বা যাদের বেঁচে থাকার মত কোন অবলম্বন নেই। অথচ তাদের জন্য কিছু করার কথা কেউ ভাবেন ন্। া এটাই আসলে আমাদের দেশের নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। যাদের মাথায় তেল আছে তাদের মাথায় তেল দিতে সবাই ব্যাস্ত।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.