ইকবাল বানো
পরিতোষ সেনের জিন্দাবাহার পড়ে
গলিতে সন্ধ্যা ঝুলে আছে
লাল ফুল হাতে ক্রীড়ারত শিশুদের চোখ তখনো সজাগ
ঝাঁপ ফেলে সবজি দোকানের বেরিয়ে এলেন কর্তা
তার স্ত্রী একা বসে আছেন
ঘোমটা টানা আর ঠোঁটে বাহারী পান।
ফেরিওয়ালার জমকালো শরীরের কাছে অন্ধকার তখনো আলো
এই সময় কেউ চালিয়ে দেন তার পুরনো রেকর্ড-
কেমন অদ্ভুত তর্জমা তার স্বরে, গানে।
কেউ তার পায়রার খুপরি বোজে- কেউ মোছে ঘাম
ইকবাল বানো
সতেজ শব্দে আর পুরনো গল্পে এখনো জেগে ওঠেন।
* ইকবাল বানো- প্রখ্যাত গজল গায়িকা। তার সুর ও শব্দের নিখাদ সঙ্গীত মুহূর্তে শ্রোতাকে নিয়ে যায় পুরানো সে দিনের কাছে যার ছবি তিনি গাইতে গাইতে আঁকেন।
জীবন যাপন
যেতে যেতে খুব কাছ থেকে ডেকে উনি বললেন
ঠিক নয়...
কিন্তু কিছুইতো আর বুঝলাম না
আমার ক্ষিদে পেয়েছিল প্রবল, কোথাও কোনো
সাড়াশব্দ না পেলে গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা না হলে
আর নয়।
খর রৌদ্রের নীচে একসময় দাঁড়িয়ে পড়লাম এবং
ঘামতে লাগলাম আর
মাথার চারপাশে বুনো মাছির মত ভোঁ ভোঁ করতে লাগলো
-ঠিক নয়, ঠিক নয়।
সাইবার ক্যাফে
যা কিছু লিখবার তার সব খামে ভরে
ডাকপিয়নের খোঁজে বেরুতেই
কেউ নেই,
এখন যুগল কারো 'নেট বাক্য' চলে
অদ্ভুত জীবন্ত ওরা রাতভর।
ঘাসগুলি কেউ কি মাড়ায়?
সাইবার ক্যাফে এসে দুয়ারে দাঁড়ায়!
নির্ভরতা
সমস্ত গল্প শেষ করে
রাতের জ্যোৎস্নার ভেতর পা মাড়িয়ে এসে
হাই তুলতেই মুখে
বেরুতে থাকে আলো- অসংখ্য বিন্দু, ক্ষুদ্র
আমার নিঃশ্বাসের ভেতর দিয়ে এত জোনাকীর
আসা যাওয়া দেখে রাত্রি নেভে
ঘুম ভাঙতেই দেখি তুমি আছো শুয়ে নিশ্চিন্তে, ঘুমে।
বাগান
কবরে যাই কবরে যাই কবরে নীরবতা
কবর জুড়ে দোলনচাঁপা ফুল
শহরে যাই শহরে যাই শহরে ঘনজ্যাম
শ্যামের বাঁশী কেউ শোনে না কানে
বাগানে সাপ বাগানে সাপ বাগানে গভীরতা
বাগানে কেউ যায় না আজকাল
দোলনচাঁপা হাস্নুহানা এসব কিছু নাই
কবরগুলি বাগান যেন সব।
কবিতগুলি ২০০৫ সালে প্রকাশিত কবিতার বই 'তারা খসা রাতের নীচে' থেকে নেয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।