আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পর্যাপ্ত মজুদ সত্ত্বেও চালের দাম সহনীয় নয় : খাদ্য উপদেষ্টা



খাদ্য উপদেষ্টা ড. শওকত আলী বলেছেন, দেশে খাদ্য মজুদ যথেষ্ট পরিমাণে হলেও বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেই। এ জন্য আমদানি ও মজুদের বিষয়ে সরকারকে ভবিষ্যতে আরো সতর্ক হতে হবে। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী কোনোভাবেই কৃষি খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমানো ঠিক হবে না। খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে দেশের অনাবাদী পতিত জমিতে চাষাবাদ করতে হবে। বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খাদ্য উপদেষ্টা এ অভিমত তুলে ধরেন।

ইআরএফের প্রেসিডেন্ট নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান। সেমিনার শেষে ধন্যবাদ জানান ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। সেমিনারে ড. শওকত আলী খাদ্য আমদানি পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় সরকার আমদানির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। চাহিদার তুলনায় ঘাটতি মেটাতে ইনডিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে চাল আমদানি করা হয়েছে।

নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য শস্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ পর্যন্ত ২৯ লাখ টন চাল ও গম আমদানি করা হয়েছে। ইনডিয়া থেকে প্রতি টন ৩৯৯ ডলারেই চাল আমদানি করা হয়েছে। জুন পর্যন্ত আমদানির পরিমাণ ৪০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে সরকারের মজুদে পাচ লাখ টন খাদ্য শস্য রয়েছে। খাদ্য পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নিয়মিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট তৎপরতা ও খাদ্য মজুদ যথেষ্ট থাকলেও দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা যাচ্ছে না। এ জন্য ভবিষ্যতে মজুদ বৃদ্ধি ও আমদানির ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হতে হবে। কৃষিতে সরকারি বিনিয়োগ কমাতে সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যে পরামর্শ দিয়েছে সে বিষয়ে খাদ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, কৃষিতে অবশ্যই সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমদানি করে দীর্ঘ মেয়াদে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা বিধান করা যাবে না।

দেশের অনাবাদী পতিত জমিকে চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অনুষ্ঠানে সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, যে কোনো দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা থাকতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে চাহিদা নিরূপণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৯৯৮ সালের বন্যার পর দেশে জরুরি ভিত্তিতে ৪০ লাখ টন খাদ্য আমদানি করা হয়েছিল। ৪০ লাখ ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়েছিল।

সে সময়ে সরকারি গুদামগুলোতে খাদ্য মজুদ পর্যাপ্ত থাকায় কোনো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকার থেকে সময় উপযোগী পদক্ষেপ না নেয়ায় সঙ্কট তৈরি হয়েছে। সাফল্য বা ব্যর্থতা যাই থাকুক না কেন দুর্যোগ মোকাবেলায় অতীতের রাজনৈতিক সরকারের অভিজ্ঞতা নেয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি বর্তমান সরকারের প্রতি খাদ্য সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেন। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি জ্বালানি তেলেরও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া দেশে দুই দফা বন্যা ও সিডরের কারণে বর্তমানে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে দীর্ঘ মেয়াদি নীতি কৌশল গ্রহণ করতে হবে। সরকারের বাফার স্টকের মজুদ দ্বিগুণ করতে হবে। তিনি দেশের বেসরকারি আমদানিকারকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.