আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যায়যায়দিনে লেখা মান্নার সর্বশেষ তারকা কলাম : সরকার উদ্যোগ না নিলে চলচ্চিত্রাঙ্গন ধ্বংস হয়ে যাবে

গভীর কিছু শেখার আছে ....

বর্তমানের এফডিসি আগের তুলনায় অনেক ভালো। এখন সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান চলছে। সেই হাওয়া এফডিসিতে কিছুটা হলেও লাগছে। তারপরও আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করে বলবো, সরকারের উচিত বাংলাদেশে এ শিল্পকে পরিপূর্ণভাবে সহযোগিতা করা। যতোদিন পর্যন্ত শিল্পের এ মাধ্যমটি সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা না পাবে, ততোদিন এ সেক্টরে উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়।

এছাড়া শিল্পী, প্রডিউসার, ক্যামেরাম্যানদের মানসিকতার পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আরেকটা দিক না বললেই নয়, সেটা হলো শিক্ষা। এফডিসিতে বর্তমানে শিক্ষার দিকটাকে বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন। আগামী পাচ বছরের মধ্যে এখানে শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের আসা খুবই প্রয়োজন। নয়তো এ সেক্টর ধ্বংস হয়ে যাবে।

অ, আ, ই ঈ পড়া ছেলেমেয়ে দিয়ে এ সেক্টর ধরে রাখা খুব বেশিদিন সম্ভব হবে না। এখন স্ক্রিপ্ট হওয়া উচিত ইংরেজিতে। শিল্পীসহ এ সেক্টরে সবার উচ্চারণ হওয়া উচিত সাবলীল। বিশেষ করে আর্টিস্টের উচ্চারণ হবে নিখুত, অভিনয় হবে বাস্তব ধর্মী। যেনতেন উচ্চারণ আর অভিনয় দিয়ে বাংলাদেশের মুভি প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকতে পারবে না।

ভালো ভালো শিক্ষিত, মার্জিত ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশের মুভির প্রতি অনিহা। নাক শিটকানো মনোভাব। সুন্দরী আকর্ষণীয় ছেলেমেয়েরা আসতে চায় না। এর কারণ ফিল্ম সম্পর্কে তাদের বাজে ধারণা। ফিল্মের মানুষ সম্পর্কে ভিন্ন আইডিয়া।

এরপর মুভি দেখার যে জায়গা সেগুলো ঠিক করতে হবে। হলের পরিবেশের পরিবর্তন খুবই জরুরি। স্ট্যান্ডার্ড একটা ভালো মুভির পেছনে কোনো প্রযোজক টাকা লগ্নি করছে না। কারণ যে প্রযোজক টাকা ইনভেস্ট করবে একটা ভালো মুভির পেছনে সেই টাকা রিটার্ন আসবে কি না সে জানে না। আবার ভালো মুভির পেছনে ইনভেস্ট করা টাকা রিটার্ন আনারও কোনো ব্যবস্থা নেই।

টাকা রিটার্ন আনার জন্য একটা ব্যবস্থা সবাই মিলে করা উচিত, যারা অন্তত এ সেক্টরে জড়িত আছি। আমাদের পাশের দেশের সঙ্গে আমাদের দেশের মুভির তুলনা করা হাস্যকর ব্যাপার। তারপরও বলবো ওরা এখনো অমিতাভকে নিয়ে ক্যারেক্টার বানাচ্ছে। আমাদের দেশে সে রকম ক্যারেক্টার সৃষ্টি করার চিন্তা কেউ করে না। আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো অভিনেতা আছে, পরিচালক আছে।

তারপরও আমাদের দেশে ভালো কোনো কিছু করতে পারছে না। অমিতাভ-গোবিন্দ যেমন এক নয়, ঐশ্বরিয়া-কাজলও এক নয় তেমনি রাজ্জাক আলাদা জিনিস আমি আর রাজ্জাক এক নয়। কিন্তু এখানে সব স্ট্যান্ডার্ডকে এক করা হয়েছে। এক হয়ে গেছে। এ জন্য আমরা সবাই দায়ী।

ইনডিয়াতে মুভির কাহিনী স্ট্রং, বিগ বাজেট, সুইজারল্যান্ডে গিয়ে গানের শুটিং করে, আর্স্টিস্টদের চেহারা, ফিগার কি চমৎকার। আর আমাদের দেশে আর্টিস্টরা ফিগার সচেতন না কেন এটা আমার মাথার মধ্যে ঢোকে না। আর্টিস্টদের ফিগার সমস্যা তো আছেই, সেই সঙ্গে নেই ভালো কোনো ড্রেস ডিজাইনার, স্ক্রিপ্ট রাইটার, প্রডিউসার, কালার পারফেক্ট আসে না, সিনেমাস্কোপ নেই। এতো কিছুর পরও আমি ২০ বছর ধরে যুদ্ধ করেছি। তিল তিল করে নিজেকে গড়ে তুলে, ১০-১২ বছর ধরে একটা পজিশনে লিড করেছি।

আমার কষ্ট, সাধনা, ভাগ্য সবকিছু মিলিয়েই আজকের আমি। [ অনুলিখন : ইশরাত জাহান ]


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.