আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ রেলওয়ে-২

.......অতঃপর মৃত্যুর প্রতীক্ষা

ব্রিটিশ রেলওয়ে আর বাংলাদেশ রেলওয়ের মাঝে একটা মিল আছে। দুটোকেই সংক্ষেপে বিআর বলা হয়। সেই ১৯৮৯ সালে বেশ কবার ব্রিটিশ রেলে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। লিভারপুল থেকে লন্ডনের ট্রেন ছাড়ত রাত এগারোটায়। এসি বগিতে ডুপ্লেক্স খাটে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম, ট্রেন চালুর আগেই।

ঘুম ভাঙ্গত সকালে, তখনও ট্রেন দাড়িয়ে। মাঝে একটা পথ পাড়ি দিয়ে লন্ডনে পৌছলাম সেটা টেরই পেতামনা। আন্ডার গ্রাউন্ড রেল ভ্রমণটা ছিল আরো রোমাঞ্চকর। মাটির নিচে ঘুটঘুটে অন্ধকার ফুড়ে হঠাৎ ট্রেন উঠে আসত মাটি উপর, ঝকঝকে সকালের রোদে ভরে যেত রেলের কামরা গুলো। একটা বিষয় আমাদের খারাপ লাগে।

প্ল্যাটফরম থেকে রেল গাড়ির ফ্লোরের উচ্চতা। এটা এক সমান হওয়া উচিৎ। ব্রিটেন বা অন্য সব জায়গায় যে কেউ ট্রলি ঠেলে আরামেই প্ল্যাটফরম থেকে বগিতে ঢুকে যেতে পারে। আর আমাদের দেশে প্ল্যাটফরম থেকে উঠলেও ছোটখাট পাহাড়ে ওঠার মত যুদ্ধ করতে হয়। যাই হোক, সেই ১৫-১৬ বছর আগের আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায় যমুনার দুই ঘাটে পারাপার আর নদীর নাব্যতা না থাকার দরুন।

এরপরও বাহাদুরাবাদ, ফলছড়ি ঘাট হয়ে মানুষ বগুড়া গিয়েছে একতা ট্রেনে বেশ কিছুদিন। সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। দেশের পুব আর পশ্চমের সাথে রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ১৯৯৮ সাল। যমুনা সেতুর জন্মদিনে টাঙ্গাইলের ইব্রাহিমাবাদ থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ডুয়েল গেজের লাইনে দেশের দুপ্রান্তকে যুক্ত করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন, হারায় তার গুরুত্ব। যে টাঙ্গাইলে আগে রেলপথই ছিলনা, তা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আত্মীয়দের সাথে রাগ করে ২০০০ সালে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ এর পর আর যাইনি রাজশাহী শহরে (আমার জন্মস্থান)। এর মাঝে রেল সার্ভিস অনেক উন্নত হয়েছে। দীর্ঘ আট বছর পর নিজের জন্মস্থানে ফেরার পথে সেই ১৪ ঘন্টার পথ মাত্র ৫ ঘন্টা ক্লান্তিহীন ভ্রমণ শেষ করে প্রায় কেঁদে ফেলেছিলাম রাজশাহী রেল স্টেশনে, অভিভূত হয়েছি নবনির্মিত স্টেশনের নতুন কাঠামো দেখে।

তখন ২০ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সাল, স্টেশনের ঘড়িতে সকাল ৬ টা বেজে ৪০। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.