মাঝে মাঝে নি:সঙ্গতা গ্রাস করে আমায়, জীবনের মানে খোঁজা তখন আমাকেই মানায়
দেশে আজ অনেকগুলো মোবাইল কোম্পানি। তারা প্রচন্ড উদ্যোমে ভয়ংকর সব কাজ করে যাচ্ছে। জনগনকে কে কার চেয়ে বেশি সেবা দিতে পারে তা নিয়ে একটি ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। তারা কত মহৎ! এক কোম্পানি ৮০ পয়সা মিনিট করলে আরেকটা ৭৯। এক সময় কমতে কমতে সারা রাত ফ্রীতেই চলে এসেছিল।
কথায় আছে মাগনা ঘী বামনেও খায়। ফলে যা হবার তাই হল। দেশের সব মানুষ বামন হয়ে গেল এবং তারা বামন হয়ে চাঁদ ধরতে চাইল। কে কে চাঁদ পেল জানি না। তবে আমার এক বন্ধু পেয়েছিল।
কারণ মোবাইলের কল্যাণে তার যে বান্ধবী জুটেছিল তার নাম ছিল মুন। তো মিতভাষী বন্ধুটি রাত বারটায় কথা শুরু করত। তারপর... না ..... তার আর পর নেই, নেই কোন ঠিকানা। সেই কথা যেন ঠিক মুখ দিয়ে বের হত না, যেন ভুল করে সামান্য খুলে রাখা কোন পানির কল থেকে সারা রাত টপটপ করে একটি ছিদ্রওয়ালা বালতিতে পানি জমা হত। ইনিয়ে বিনিয়ে, চিবিয়ে চিবিয়ে, মুখ বন্ধ করে, নাক ফুলিয়ে আরও নানা ভাবে কথা নিঃসৃত হত।
তারা পালা করে ঘুমিয়েও নিত। অপরজন কথা বলে যেত। একসময় ফজরের আযান দিত, তবে কথা ফুরাত না।
ঃ জান, দাঁত মাজছ?
ঃ মাজতেছি, তুমি?
ঃ আল্লাহ, আমিও। কি দিয়ে মাজতেছ ?
ঃ ক্লোজআপ।
ঃ আল্লাহ আমিও তো (কি একটা সাংঘাতিক ঘটনা!!)। আচ্ছা তুমি আগামীবার অবশ্যই ক্লোজআপ ওয়ানে অংশ নিবা। তুমি যা গান গাও না, কালকে রাতের ঘুমটা সত্যিই ভাল হইছে।
ঃ সত্যি? থ্যাংকস। আমার ময়না পাখির জন্য আমি সব করতে পারি...
টিট টিট... (মোবাইলের চার্জ শেষ।
মনে হয় মিথ্যা হজম করতে পারে নাই)
ঃ ইয়ে জান, একটু ধর। মোবাইল চার্জে দিয়ে কথা বলি।
ব্যাটারীর চার্জ শেষ হয়ে গেলেও বন্ধুটি যেন সবসময় ফুলচার্জড। তাই আর না বাড়ানই ভাল। এখন তো শুধু দাঁত মাজা, বেলা গড়ালেতো বাথরুমের ছোট বড় কাজও.....
যা হোক, এক সময় এই অফার শেষ হয়।
ততদিনে অবশ্য বন্ধুটির ডিসঅর্ডার হয়ে গেছে। তার 'চাঁদ'-ও ডুব মেরেছে। আজকালকার প্রেমতো মোবাইলের মতই, পকেটে থাকে। সীমিত সময়ের জন্য অফার দেয়, শর্ত আবশ্যক। বন্ধুটি এখন সামনা সামনি কারও সাথে কথা বললেও কানে হাত চলে যায়, যেন মোবাইলে কথা বলছে।
যেমন, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে মা-কে হয়তো বলল, 'হ্যালো মা, খাবার দাও, ক্ষুধা লাগছে..'।
থাক আর না বাড়ানোই ভালো। তাহলে আপনাদেরও ডিসঅর্ডার হতে পারে। হ্যালো পাঠক, আজকে এই পর্যন্তই.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।