আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যেভাবে দেহের সঠিক ওজন বজায় রাখবেন

leo_abdullah@yahoo.com

ওজনটাকে ইয়ো ইয়ো খেলার মতো ওঠানামা করানো উচিত না। ওজন কমিয়ে ফেলতে পারলে সেটা ভালো। দেহের সঠিক ওজন তৈরি করে তা বজায় রাখতে পারলে সেটা আপনার সুস্থ হার্ট তৈরিতে ভূমিকা রাখে। বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলাটা এক ধরনের চ্যালেঞ্জই বটে। অনেক পুরনো অভ্যাসই আপনাকে পেছনের দিকে টানবে।

আর এ জন্য নতুন অভ্যাসে দৃঢ়তার সঙ্গে আটকে থাকাটা জরুরি। এভাবে এক সময় টের পাবেন আপনি খাওয়া-দাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারছেন, আগের চেয়ে বেশ এনার্জি আসছে। আর ভালো খাদ্যাভাস গড়ে ওঠার পাশাপাশি দেহের চমতকার শেপ তৈরি হচ্ছে। পুরনো অভ্যাসে ফিরে গেলে কি হতে পারে? ল্যাপস (ষধঢ়ংব) হলো ছোট্ট একটা ভুল পদক্ষেপ অথবা পুরনো অভ্যাসে ফিরে যাওয়া। এমনটা ঘটতেই পারে যখন বাজে একটা দিন কাটে এবং বেশি খাওয়া হয়ে যায় কিংবা এক্সারসাইজ করা বাদ পড়ে।

পুরনো অভ্যাসে আবারো কয়েক দিন অথবা কয়েক সপ্তাহের জন্য ফিরে যাওয়াকে বলা যায় রিল্যাপস। > মনে রাখবেন, ল্যাপস বা রিল্যাপস মানেই ব্যর্থতা নয়। সদিচ্ছা থাকলে আপনি আবারো ট্র্যাকে ফিরতে পারেন। > ভেবে দেখুন, আপনি কি ক্ষুধার্ত (পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে) নাকি স্রেফ ক্ষুধাবোধ (খাবার জন্য মানসিক তাড়না) হচ্ছে। > যখন এ ধরনের তাড়না অনুভূত হয়, ১৫ মিনিটের একটা বিরতি নিন এবং অপেক্ষা করুন।

অথবা খাওয়ার আগে কোনো একটা কাজ সেরে নিন। এর ফলে আপনার খাবার চাহিদার ব্যাপারে বিরতি নেয়া শিখতে পারেন। > খাবার পাশাপাশি আপনার মানসিক চাপগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্য উপায় খোজ করুন। এলোমেলোভাবে কিছুক্ষণ হাটতে পারেন, নতুন কোনো শখের কাজ শুরু করতে পারেন অথবা নিজেকে ধীর-স্থির ও শান্ত করতে পারেন মেডিটেশনের মাধ্যমে। যখন স্বাস্থ্যসম্মত ওজনে পৌছাবো কি ঘটবে তখন? > স্বাস্থ্যসম্মত ওজনে পৌছানোর পর প্রতিদিনকার খাবারে মোটামুটি ২০০ ক্যালরি পরিমাণের স্বাস্থ্যপ্রদ লো-ফ্যাট খাবার যোগ করুন।

> এর এক সপ্তাহ পর যদি খেয়াল করেন এখনো ওজন কমে যাচ্ছে তবে আরো ১০০ ক্যালরির মতো খাবার যোগ করুন আপনার ডায়েটে। > এক্সারসাইজের পরিমাণে কোনো পরিবর্তন ঘটিয়ে থাকলে খাবার দিয়ে সেটাকে অ্যাডজাস্ট করুন। > আপনি যা খাচ্ছেন এবং যে পরিমাণ এক্সারসাইজ করছেন তার একটা হিসাব রাখুন, তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন অ্যাডজাস্টমেন্টটা কিভাবে করতে হবে। কিভাবে স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখা সম্ভব? > স্মার্টভাবে খাচ্ছেন মানে কিন্তু এই নয় যে আপনি ডায়েট করছেন। এর অর্থ কিছু খাবার অল্প করে খাওয়া এবং হাই ক্যালরি এবং হাই ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার কদাচিৎ খাওয়া।

> চারপাশে সবসময় লো-ক্যালরি এবং লো-ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। শপিংয়ের একটা তালিকা তৈরি করুন আর ক্ষুধার্ত অবস্থায় শপিংয়ে যাবেন না মোটেও। > আপনার পুরো দিনের খাবারের একটা প্লান করুন। বাইরে খেতে যাওয়ার সময় কিংবা কোনো দাওয়াতে যাওয়ার আগেই ঠিক করে নিন কি করে মাত্রা মতো খাবেন। > বাফেট টেবিলে ভালো করে বাছুন।

বন্ধুর বাসায় হলে আপনার খাবার অংশটাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। > দৈনিক তিনবেলা খাবারের মাঝামাঝি পর্যায়ে খিদে পেলে এক গ্লাস পানি খান কিংবা ছোট একটা ফল খেতে পারেন। এ সময় রান্না ঘর কিংবা ফৃজের ধারে কাছে যাবেন না। > হাই ক্যালরি ফুড যদি খুব খেতে ইচ্ছা করে তবে অল্প করে সেটা খান এবং এরপর স্রেফ ভুলে যান। আর নিজের ওপর যদি অল্প করে খাওয়ার ভরসা না করতে পারেন তবে ওই খাবার ছুয়েও দেখবেন না।

> অ্যাকটিভ থাকার চেষ্টা করুন। আপনার হেলথ অ্যাকটিভিটি প্লান চালু রাখতে হাল ছাড়বেন না। > প্রয়োজনে এক্সারসাইজ পার্টনার জোগাড় করে নিন অথবা কোনো এক্সারসাইজ ক্লাসে যোগ দিন। এর ফলে আপনার আগ্রহ বজায় থাকবে। বিএমআই কি এবং কিভাবে এটা ক্যালকুলেট করা হয় ? বিএমআই হলো বডি মাস ইন্ডেক্স।

দেহের ওজন ও উচ্চতার একটা ম্যাথমেটিকাল অনুপাত এটা যা দিয়ে দেহে ফ্যাটের শতকরা হার পরিমাপ করা হয়। পাশাপাশি এটা আপনার স্বাস্থ্যের ঝুকি সম্পর্কেও আগেভাগে সতর্ক করে দেয়। আপনার ইগও যদি ২৫ থেকে ২৯.৯ এর মধ্যে হয় তবে ধরা হবে আপনার ওজন অতিরিক্ত হয়ে গেছে। আর ৩০ এর উপরে হলে স্থূলতায় আক্রান্ত আপনি। যতো বেশি ইগও আপনার দেহে ফ্যাটের পরিমাণ ততো বেশি আর এর প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘ মেয়াদি রোগ যেমন হাইপারটেনশন, হৃদরোগ, ম্যালিটাস এমনকি আধুনিক গবেষণায় দেখা যায় ক্যান্সার হওয়ার ঝুকিও বেড়ে যায়।

বডি মাস ইন্ডেক্স = কেজি/মি.২। প্রত্যেক পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির জন্য আদর্শ বিএমআই ইন্ডেক্স হলো ২০ থেকে ২৪-এর মধ্যে। অবশ্য কেবল ওজনের ওপর ভরসা করে দেহের ফ্যাট মাপা ঠিক না। উচ্চতা ছাড়া আরো অনেক বিষয় ওজনকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় একজন বডি বিল্ডারের বেশি বিএমআই হতে পারে তার অতিরিক্ত মাসল টিসুর কারণে।

আবার যে মানুষটি দিনের অধিকাংশ সময় বসে কাটায় তার দেহের ওজন হয়তো আশানুপাতিক আছে কিন্তু অতিরিক্ত ফ্যাট টিসু থাকতে পারে। তবে সাধারণভাবে, উচ্চমাত্রার বিএমআই ইনডেক্স সিরিয়াস মেডিকাল কন্ডিশনের লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কিভাবে আরো জানা সম্ভব এ সম্পর্কিত আর্টিকেল ও বই পড়–ন। কথা বলুন আপনার ডাক্তার, নার্স বা অন্য কোনো হেলথ স্পেশালিস্টের সঙ্গে। আপনার যদি হৃদরোগ থাকে অথবা কখনো স্ট্রোক হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনার পরিবারের সদস্যরাও এ ঝুকি থেকে মুক্ত নন।

এ ঝুকি কমাতে তাদের পরিবর্তন হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণগুলো কি কি? অনেক হার্টঅ্যাটাক হয় হঠাৎ করে এবং খুব প্রচ-ভাবে কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেটা শুরু হয় ধীরে ধীরে মৃদু ব্যথার অথবা এক ধরনের অস্বস্তির মাধ্যমে। সঙ্গে অন্য যে সব উপসর্গ থাকতে পারে সেগুলো হলো- > বুকে অস্বস্তির ভাব > শরীরে উপরের অংশেও অস্বস্তির ভাব > বুকে অস্বস্তির সঙ্গে কিংবা ছাড়া দমের অভাব > অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে ঠা-া ঘাম বের হওয়া, পেটে অস্বস্তি ও বমি বমি ভাব বা ঝিম ঝিম ভাব হওয়া। স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণগুলো হলোÑ > মুখ, হাত বা পায়ে বিশেষত শরীরের এক পাশ হঠাৎ করেই দুর্বল বোধ করা বা অসাড় ভাব হওয়া। > হঠাৎ করেই দ্বিধায় পড়ে যাওয়া, কথা বলতে কিংবা শুনতে সমস্যা হওয়া > যে কোনো চোখ বা দুই চোখেই অকস্মাৎ দেখতে সমস্যা হওয়া > হঠাৎ করেই হাটতে সমস্যা হওয়া, ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া।

স্ট্রোক হওয়ার আগেই একে শনাক্ত করুন। সময় নষ্ট করলে আপনার ব্রেইনও নষ্ট হবে, তাই সাবধান। (আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অবলম্বনে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.