আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাঁদের আলোয় আমরা কয়েকজন

n

ভাদ্র মাসের প্রচন্ড গরমে এক রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে আমরা কয়েকজন রাস্তায় হাটছি,হঠাৎ একজন প্রস্তাব দিল,কোথাও ঘুরে এলে কেমন হয়?সবাই রাজি। কিন্তু কোথায় যাওয়া যায়? সেনা সদস্য মোস্তফা কিছুদিন আগে হাকালুকি হাওড়ের পাশে একটি ইউনিয়নে ভিজিএফ এর কাজ দেখে এসেছে। সে বলল,হাকালুকি হাওড় দেখতে গেলে কেমন হয়? সমস্যা হলো কেউ পথ চেনে না,মোস্তফা শুধু একদিন কাছাকাছি গিয়েছিল,রাতের বেলা পথ চিনতে পারবে কিনা এ নিয়ে নিজেই কিছুটা সন্দিহান। বরকত বলল,আগে বের হই,যেতে না পারলে ফিরে আসব। আবুলের বউ ছিল আমাদের সাথে।

অচেনা জায়গায় একজন মেয়েকে নিয়ে যেতে সমস্যা হবে ভেবে আবুল তাকে রুমে রেখে এলো। আমরা তাকে সান্তনা দিলাম,ভাবী,জায়গাটা চিনে আসি,পরে আপনাকে নিয়ে যাব। (আমাদের মধ্যে শুধু আবুল বিবাহিত,বিয়ে হয়েছে মাত্র একমাস। ) অতঃপর মোটর সাইকেলে চড়ে আমরা রওনা দিলাম। আমাদের আর একজন সদস্য সবার প্রিয় মৃদুভাষী ছাইদুল।

রাত তখন সাড়ে দশটা। গ্রাম্য এলাকা,তবুও দেখি বাজারের কিছু দোকানে বাতি জ্বলছে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করে পথের সন্ধান পাওয়া গেল। রাতের বেলা মোটর সাইকেলারোহী অচেনা যুবকদের দেখে তারা কিছুটা সন্দিহান। তাদের কৌতুহল মেটাল মোস্তফা।

গ্রামের এবড়ো থেবড়ো পথে ঝাকি খেতে খেতে অবশেষে আমরা পৌছালাম হাকালুকি হাওড়ে। রাত প্রায় বারটা। এখানেও আমাদের দেখে কিছু নিশাচর মানুষ এগিয়ে এলো। আমাদের পরিচয় জেনে সবাই ফিরে গেলেও একজন লেগে থাকল আর বকবক করতে থাকল। তার কাছেই শুনলাম এখানে মাছ ধরতে গিয়ে অনেকের রক্ত ঝরেছে।

শুনেছি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওড় এটা। বিশাল বিস্তৃত হাওড়ের সামনে বসলাম আমরা। আবুল আর বরকত এই গভীর রাতেই পানিতে নেমে গেল। মাথার উপর আলো দিচ্ছে পূর্ণ গোলাকার চাঁদ। বর্ষা শেষ,হয়তো এজন্যই ব্যাঙগুলি চুপ ছিল।

তবে পাশের ঝোপঝাড়ে যেন ঝিঁ ঝিঁ আর জোনাকীদের উৎসব চলছিল। আবুল পানি থেকে উঠে এসে জানতে চাইলো আমরা আরও কিছুক্ষণ থাকব নাকি ফিরে যাব। আরও কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছা থাকলেও আবুলের বউ এর কথা ভেবে ফিরতে হলো,সিদ্ধান্ত হলো আবার একদিন আসা হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।