আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাঁদের আলো

writerrazu.com

দি নিউ মুন কোম্পানীর পক্ষ থেকে একটি প্রেস কন্ফারেন্স আয়োজন করা হয়েছে নিউ ইয়র্কের একমাত্র দশ তারকা হোটেল মানহাটনে, বিশ্বখ্যাত সব মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত, কানঘুষা করছে, তবে কেউই সঠিক বলতে পারছেনা কি হতে যাচ্ছে। কেন তাদের দাওয়াত দেওয়া হল। এর মধ্যে হঠাৎ করে সামনের হলোগ্রাম স্ক্রিনে ভেসে উঠল চাদের থ্রি ডি ছবি শুধু তাইনা চাদ যে প্রবল গতিতে আপন কক্ষপথে ছুঠছে তাও অনুভব করল উপস্থিত সবাই। পুরো অডিটোরিয়াম টা যেন মহাশুন্যে ভাসছে। আবার অন্ধকার।

এবার মঞ্চের উপর একটি আলো জ্বলে উঠল। তাতে দেখা গেল দি নিউ মুন কোম্পানীর সিইও জোসেফ পিটারসন কে। দেরি না করে তিনি শুরু করলেন। লেডিস এন্ড জেন্টল ম্যান, পৃথিবীর ইতিহাসে আজ একটি স্মরনীয় দিন। এই বিশেষ দিনের বিশেষ মুহুর্তের সাক্ষী আপনারা।

আপনারা ভাগ্যবান। দর্শক সারিতে উস্খুশ শুরু হয়ে গেল। আবার সিইও, মাত্র ১০ মিনিট আগে ঘঅঝঅ’ র কাছ থেকে আমরা চাদের ইজারা নিলাম। পিছন থেকে একজন হাত তালি দিল। সম্ভবত এই কোম্পানীরই কেউ এক জন।

আস্তে আস্তে সবাই হাতে তালি দিল। একটিু হেসে সিইও আবারও শুরু করলেন, শুধু তাই না আপনার জেনে আনন্দিত হবেন যে, আমরা চাদের সংস্কারে এক বিরাট প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছি। আমরা গবেষণা করে দেখেছি চাদের মুল প্রোডাক্ট হল চাঁদের আলো। এই আলোর কোয়ালিটি বাড়ানো কিভাবে যায় তা নিয়ে গবেষণা করেছে আমাদের গবেষক দল। তারা আবিষ্কার করেছে এক ধরনের রিফলেকটর পেপার, যাতে বাধা পেলে সূর্য্যরে আলোর তীব্রতা ৬ গুণ বৃদ্ধি পায় কিন্তু উত্তাপ্ত বাড়ে না।

পেছনের হলো গ্রামে দেখা যাচ্ছে এক ধরনের রূপালী কাগজে ঢেকে যাচ্ছে চাঁদ। আমেরিকান বার্গার যে কাগজে মোড়া থাকে অনেকটা সেই রকম কাগজ। সেদিকে আড় ছোখে তাকিয়ে আবারও শুরু করলেন সিইও, হ্যাঁ এই কাগজে মুড়ে দেওয়া হবে গোটা চাদটাকে। এতে চাঁদের আলো হবে আরও উজ্জ্বল, সিগ্ধ আর কোমল। এতে আমাদের খরচ হচ্ছে ৮ ট্রিলিয়ন ডলার।

দর্শক সারি থেকে একটি কণ্ঠ শোনা গেল, তাতে আপনাদের লাভ কি? সিইও: ভেরি গুড প্রশ্ন। একটু ডানে এগিয়ে তিনি বললেন, যেহেতু পৃথিবৗর সকল প্রান্তের মানুষই চাদের আলো পায় এবং এই পদ্ধতির বাড়তি আলো তাদেও মনকে আরো প্রফুল্ল করবে তাই তারা আমাদের পে করবে! প্রতি দেশে আমাদের এজেন্ট থাকবে। খুবই সহজ সিস্টেম! একজন সাংবাদিক দাড়িয়ে বলল: কিন্তু কোন দেশ যদি পে না করে? সিইও: এটা কেমন কথা! সার্ভিস নেবে আর পে করবে না? তাহলে ডাব্লিউ টি ও আছে কেন? অন্য একজন সাংবাদিক বলল: অনেক দেশ এমন খাবারই কিনতে পারছে না, তারা চাঁদের আলো কিভাবে কিনবে? সিইও : তারা যাতে চাঁদের আলো কিনতে পারে সেই জন্যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তাদের লোন দেবে। শুধু তাই নয় অতি দরিদ্রদের জন্য থাকছে মাইক্রো ক্রেডিট প্রোগ্রাম! এর মাধ্যমে তারাও চাঁদের আলো কিনতে পারবে। আর কোন কথা নয় চলুন আমরা ডিনার করি।

১০ছর পর: টোকিও শহরে নিজ বাড়ির ছাদে বসে কেনা চাঁদের আলোয় কবিতা লিখছে একজন জাপনি কবি। আর পর পর ৬ বছর চাঁদের আলোর লোনের টাকা শোধ করতে পারেনি দক্ষিণ এশিয়ার একটি দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। এ জন্যে ঐ দেশের অধিকাংশ মানুষের চোখে কাল টেপ মেরে দিয়েছে দি নিউ মুন কোম্পানী। তবে তাদের একটি ক্লাব, নাম ঢাকা ক্লাব তারা দি নিউ মুন কোম্পানীর কর্পোরেট ক্লায়েন্ট হওয়ায় তারা আলো দেখার সুযোগ পাচ্ছে। বাকিরা হাতড়িয়ে হাতড়িয়ে পথ চলে, কাজ করে আর এফ এম রেডিওতে শোনে --যদি চাঁদের আলো কিনতে চান তাহলে মোবাইলের মেসেজ অপসনে গিয়ে লিখুন চাঁদের আলো (স্পেস) আপনার নাম আর পাঠিয়ে দিন ৪২০ নম্বরে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।