আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশী মিডিয়ার ধর্মপ্রচারক বাচ্চু রাজাকারের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া খাদিজার কথা তারা জানে কি? আর যারা বেঁচতে পারেনি, তাদের কথা?

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরী দুলি ছিলেন অসাধারণ সুন্দরী। হিন্দু পরিবারে বেড়ে ওঠা এ কিশোরীর দিকে হাত বাড়ায় বড়খারদিয়ার বাচ্চু রাজাকার। ১৯৭১ সালের কোনো এক দিন দুলি ও বিষ্টুকে তুলে নিয়ে যায় বাচ্চু রাজাকার ও তার সহযোগীরা। আটকে রাখা হয় বাচ্চু রাজাকারের বাড়ির একটি ঘরে।

গভীর রাতে রাজাকাররা যখন অপারেশনে চলে যায়, তখন দুলি ও বিষ্টুকে উদ্ধার করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। বিষ্টু বাড়ি ফিরে গেলেও দুলি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে থেকে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার তৈরি, অস্ত্র পাহারা, পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের খবরাখবর নেওয়ার কাজ করেন। একসময় দেশ স্বাধীন হলে দুলি বিয়ে করেন ছিরু শেখকে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে দুলি নাম বদলে রাখেন খাদিজা বেগম।

কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মমতা, স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধা সেই খাদিজাকে অন্যের কাছে হাত পাততে হয় একবেলা খাবারের জন্য। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই ছেলে নিয়ে মানবেতর দিন কাটালেও সম্প্রতি তার বড় ছেলেকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করার পর একেবারেই ভেঙে পড়েছেন। এক ছেলে সন্ত্রাসী হামলায় মারা যাওয়ার পর আরেক ছেলে সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকাছাড়া। বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে খাদিজার কথা হয়। খাদিজা বেগমের আরজি, 'বাবা, একটিবারের জন্য শেখের বেটির (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সঙ্গে আমারে দেহা করায়া দাও।

আমার মনের কথাগুলান তারে কইয়া মরবার চাই। ' কীভাবে খারদিয়ার বাচ্চু রাজাকার তাকে তুলে নিয়ে যায় সেদিনের কথার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'যুদ্ধের সময় আমার দুই ভাই পালিয়ে পালিয়ে থাকে। বাবা নিপেন পাল ও মাকে নিয়ে আমরা থাকতাম যদুনন্দি ইউনিয়নের বড়খারদিয়া গ্রামে। একদিন আসর নামাজের আগে বাচ্চু রাজাকার ও সঙ্গীয় ১৫-২০ জন অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে। তাদের দেখে আমার বাবা পালিয়ে যান।

বাচ্চু রাজাকার আমাকে দেখেই সঙ্গীয় লোকজনকে বলে, ওকে নিয়ে চল। সে সময় আমার ও মায়ের কী কান্না। কিন্তু জোর করেই রাজাকারেরা আমাকে তুলে নিয়ে আসে। আসার আগে বাচ্চু বলে, ওকে আমি বিয়ে করব। এ সময় বাচ্চু রাজাকার বল্লভদী ইউনিয়ন থেকে খগেন করের মেয়ে লক্ষ্মীকেও ধরে আনে।

আমাদের অনেক পথ হাঁটায়ে বাচ্চুর বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। গভীর রাতে দেখি আমাদের পাশের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ছিরু শেখসহ ১০-১২ জন বাচ্চু রাজাকারের বাড়িতে। পরে তারা আমাদের উদ্ধার করে। এরপর লক্ষ্মী বাড়ি ফিরে গেলেও আমি যাইনি। সুত্র  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।