আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুহাম্মদী মানবাধীকারঃ মার্কিনিদের শান্তি মিশন ও এক উলঙ্গ নারীর গল্প।তৃতীয় পর্ব

কোথায় পাব শান্তি,তাই খুজেঁ বেড়াই।

প্রথম পর্ব দেখুন এখানে দ্বিতীয় পর্ব দেখুন এখনে যুদ্ব কাউকে করে পরাজিত কাউকে করে জয়ী। পরাজিতদের কেউ হয় বন্দী। কেউ হয় নিহত। এই বন্দিদের সাথে কিরুপ আচরন করতে হবে তা বলে দিয়েছেন ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)।

তাবরানী শরিফের হাদীসে আছে,রাসূলু্ল্লাহ (সঃ) বদর যুদ্বের কয়েদিদেরকে মুসলমানদের মাঝে বন্টন করে দেন। এবং এই মর্মে উপদেশ দেন "তোমরা বন্দীদের সাথে উত্তম আচরন করবে। " অত:পর সেই উত্তম আচরনের নমুনা কি ছিল দেখুন। হযরত মুসআব (রাঃ) এর ভাই আবু উযাইর ও বন্দী হয়েছিলেন। তিনি নিজেই বর্ননা করেন আমি বন্দি অবস্থায় আনসারদের যে পরিবারে ছিলাম,তাদের অবস্থা ছিল এই- সকাল বিকাল যে সামান্য রুটি তৈরি হত তা তারা আমাকে খাইয়ে দিয়ে নিজেরা শুধু খেজুর খেয়ে দিন কাটিয়ে দিত।

আমি লজ্জায় তাদের পিড়াপিড়ি করতাম,আপনারাও খান। তারা এই বলে আমার আবদারকে পত্যাখান করতো "না,আল্লাহর রাসূল বন্দীদের সাথে ভালো আচরন করতে বলেছেন। " [সীরাতুল মোস্তফা:২:১০৮] শুধু কি তাই, হুনাইন যুদ্বে ৬ হাজার বন্দীকে কোনরুপ বিনিময় ছাড়াই মুক্ত করে দিয়েছেন। বদর যুদ্বের বন্দীদের সসম্মানে বিদায় দিয়েছেন। তাদের জন্য পোশাক তৈরী করে দিয়েছেন।

এই হলো ইসলামে বন্দিদের মর্যাদা ও সংরক্ষিত মানবাধিকার। এর বিপরিতে দেখুন,ইতিহাস বলে ইসলাম পূর্ব কালে রোমে পারস্যে সবখানে বন্দিদের সাথে বন্য প্রানীর মত আচরন করা হত। পৃথিবী বিখ্যাত নায়ক নেপোলিয়ান। তিনি ৪ হাজার তুর্কি বন্দীকে শুধু এই কারনে হত্যা করেছেন যে এদেরকে খাবার দিতে হয়। কি বিচিত্র পৃথিবী।

সন্ধানীদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী হিসেবে নেপোলিয়ান ধরা পড়েনা । ধরা পড়েন মুহাম্মদ(সঃ)। এতো প্রাচীন ইতিহাস । এবার তাজা দগদগে ইতিহাসের দিকে তাকান। ইরাক কিংবা আফগান।

কত শিশু মরেছে,নারী-বৃদ্বদের সংখ্যাই বা কত?এর হিসাব কি কোন দিন প্রকাশিত হবে?আর পঙ্গু ও আহতদের সংখ্যাই বা কত?যুদ্ববন্দিদের নির্যাতন করার যে করুন চিত্র নির্মিত হয়েছে ইতিহাসে তার উপমা বিরল। আবু গরিবের নাম শুনলে এখনো আঁতকে উঠে মানুষ। গুয়ান্তানামো কারাগারে বিনা বিচারে বছরের বছর ধরে অসহয় বন্দিগন যাদেরকে অমানবিক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। বৃটিশ সেনাদের হাতে ইরাকি কিশোরদের নির্মম নির্যাতনের ঘটনাবলী পত্র-পত্রিকায় পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো,আবু গরিব নরককুন্ড যাদের সৃষ্টি,গুয়ান্তানামো জাহান্নামটি যাদের সভ্যতার প্রতিক,নির্বিচারে অন্যের দেশ দখল করে ধংসের তান্ডব যাদের নিত্য চরিত্র,অসহায় নারী-শিশুদের ও বৃদ্বদের খুনে রক্তাক্ত যাদেরঝাত,যাদের ক্ষমতা ও শখের বলি যখন পৃথিবীর লাখ লাখ দূর্বল মানুষ।

কথায় কথায় যারা যারা অগ্নোয়াস্রের অগ্নি বর্ষন করে দেশের পর দেশ উজাড় করে দেয়,তারাই আবার আমাদের গরিব দেশে মানবাধিকারের খোজ নিতে আসেন । এখানে বোমা হামলায় ক হালি মরলো বা পুলিশের হাতে ক্রসফায়ারে কতজন মরলো সে হিসাব জানতে। অথচ সেচ্ছায় সখে কাড়ি কাড়ি বোমা ফেলল আকাশ থেকে ইরাক ও আফগানে হত্যা করল লাখ লাখ মানুষ,সে হিসাব নেওয়ার অধিকার কারো নেই। (অসমাপ্ত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.