আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিশন মঙ্গল-১



পায়েলের মামা একজনই। তাই মামাবাড়ি বলতে যা বোঝায় সে রকম কোনো আহামরী বাড়ি তার নেই। তাছাড়া বোতল মামা গ্রামে খুব একটা থাকেন না। বেশিরভাগ সময় শহর আর পাহাড়ি অঞ্চলে থাকেন। তার কথা অনুযায়ী মাঝে মাঝে তিনি চাঁদেও থাকেন।

এটা অবশ্য কেউ বিশ্বাস করে না। পায়েল একটু একটু বিশ্বাস করলেও তা কাউকে বলে না। তার অসামান্য বিজ্ঞানী মামা চাঁদে থাকতেই পারেন। চাঁদতো কারো কেনা জমি নয়। যার ইচ্ছে সে থাকতে পারবে।

আর পাহাড়ী অঞ্চলে মামার একটা গোপন ল্যাবরেটরি আছে। এটা শুধু পায়েল জানে। ছুটিতে নানার বাড়ি বেড়াতে এসেছে পায়েল ও তার মা। বাবা অফিসের কাজে আসতে পারেননি। খবর পেয়ে বোতল মামাও হাজির।

পায়েলের কল্যাণে ভীষণরকম বকার হাত থেকে বেঁচে গেছেন মামা। কেননা, বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই দশ দিনের জন্য বোতল মামা নিরুদ্দেশ। পায়েলের নানা অবশ্য এ নিয়ে বোতল মামাকে মোটেও বকাঝকা করেননি। কারণ, করেও লাভ নেই। বোতল মামার হুটহাট নিরুদ্দেশ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা।

মামা বেঁচে গেছেন পায়েলের নানীর বকার হাত থেকেও। কেননা, পায়েল আসায় তার নানী বেশ স্বাভাবিক আচরণ করছেন। তিনি বোতল মামাকে পান-সুপারি আনতে বাজারে পাঠিয়েছেন। মামা যে দশ দিন বাড়িতে ছিলেন না তা বেমালুম ভুলে গেছেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটা।

পায়েল তার মামার সঙ্গে পান-সুপারি কিনতে বাজারে যাচ্ছে। যেতে যেতে দুজনের মধ্যে যে কথা হলো তা এরকমÑ মামাÑ: 'বুঝলি, আজ যাবো একখানে। পায়েল :Ñ কোথায়? Ñ- হুম্। - হুম্ মানে? বিশেষ কোথাও? গোপন আস্তানায়? বোতল মামা ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন। 'খবরদার, গোপন আস্তানা বলবি না, ওটা আমার ল্যাবরেটরি, টানা দুবছর খেটে বানিয়েছি'।

পায়েল মুচকি হেসে বলে, তাহলে মামা ওটাকে যন্তরমন্তর ঘর বলি? বোতল মামা অন্যদিকে তাকিয়ে হুম্ শব্দটা আবার করলেন। পায়েল আবার বলল, কোথায় যাবে বললেনাতো। Ñ- যেখানে যাবো তার নাম শুনলে তোর টাশকি লেগে যাবে। Ñ- লাগুক তবু বল। Ñ- মঙ্গল।

Ñ- মঙ্গলবারে যাবে? Ñ- আরে না! বোকা কোথাকার! মঙ্গলে যাবো। Ñ- বুঝলামতো, কিন্তু আজতো শনিবার, মঙ্গলবার আসতেতো আরো দুদিন বাকি। বোতল মামা দাঁড়িয়ে পড়লেন। তার চোখেমুখে স্পষ্ট বিরক্তি। পায়েলও চোখ কটমট করে তাকালো।

সেও কিছুটা বিরক্ত। ভাবছে, মামার মাথা আসলেই গেছে। কিন্তু মামার কড়াদৃষ্টিই বলে দিচ্ছে তিনি পায়েলের নির্বুদ্ধিতায় মহাবিরক্ত। কিছু না বলে পান আর সুপারি কেনায় মন দিলেন বোতল মামা। পায়েলও কঠোর মুখে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।

Ñ- এদিকে আয়। বলেই হাঁটা শুরু করলেন মামা। হাঁটার গতিও বেড়ে গেছে। পায়েলকেও তাই কিছুটা দৌড়াতে হচ্ছে। Ñ- আবার কোথায় যাচ্ছো? Ñ- আয়, কিছু জিনিস কিনতে হবে।

Ñ- কী কিনবে। Ñ- অভিযানে যাবো, সঙ্গে কিছু জিনিসতো নিতেই হবে। Ñ- কাল-পরশু কিনলেই পারো, মঙ্গলবারতো...। পায়েলের কথা শেষ হওয়ার আগেই মামা কড়া ব্রেক কষলেন। Ñ- শোন, আমি মঙ্গলে যাচ্ছি।

মঙ্গল গ্রহে, বুঝলি। আজ রাতেই! মঙ্গলবারে না! পায়েলের চেহারা দেখার আগেই মুখ ঘুরিয়ে হাঁটা শুরু করলেন মামা। পায়েলের চেহারায় যে হঠাত করে একগাদা কৌতুহল আর অ্যাডভেঞ্চারের আনন্দ খেলা করলো তা মামা টেরই পেলেন না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।