আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের চাঁদপুর ভ্রমণ

হয়তো আমি কোন কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত নই

বেড়াতে ভালো লাগে। তাই ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়ি। মাসে অন্তত একটি দিন কোথাও না কোথাও বেড়াতে বের হই। ভ্রমণ থেকে কোনো কিছু শিখতে নয়; নিছক আনন্দ, গতিময় ঢাকা শহরের গতির সামনে একটি দিনের স্পিড ব্রেকার নিজের মাঝে অনুভব করতে বের হই। বের হই নিজেকে কিছুটা হলেও সবরকম ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে।

গত ৩০ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর তিনদিনের লম্বা ছুটিতে ইচ্ছে ছিলো দূরে কোথাও যাবার। কিন্তু সবার টাইমিং এক না হওয়াতে একদিনের একটি ছোটখাটো ট্যুরের সিদ্ধান্ত নিই। এবারের গন্তব্য চাঁদপুর। আগেই সিদ্ধান্ত ছিল নৌভ্রমণে বের হব এবার। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায়, এই চিন্তা থেকেই চাঁদপুরকে পছন্দ করা হলো।

খুব ভোরে বেরিয়ে পড়লাম আমরা তিনজন- খুলনার বন্ধু জয়, যুগান্তরের সাংবাদিক মামুন ভাই এবং আমি। আরেক সাংবাদিক রোকনের যাওয়ার কথা থাকলেও সে যেতে পারেনি। সকাল সাতটায় গিয়ে লঞ্চে উঠার পর ছাদে বসে বসে নদীর দৃশ্য দেখতে দেখতে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় চলে গেলাম চাঁদপুর। নদীর এবং দুপারের দৃশ্যগুলো আমাদের সবারই চিরচেনা। সে কারণেই শুধু দৃশ্য দেখার বদলে আমরা ছাদে বসে মৃদু বাতাসে যে যার মতো উপভোগ করলাম পুরো যাত্রাটিই।

যখন ইচ্ছে হচ্ছে এটা-সেটা খাচ্ছি; পত্রিকা পড়ছি; গল্প করছি; চুপচাপ বসে থাকছি। আমরা আসলে চাচ্ছিলাম কোলাহলের মাঝখানে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকতে, কোলাহলের মাঝখানে কিছুটা সময় একা থাকতে। সে উদ্দেশ্য সবার পূরণ হয়েছে পুরোপুরিই। চাঁদপুরে নেমে রিকশা ভাড়া করে পুরো শহরটা ঘুরে গেলাম মাছঘাটে। এই প্রথম আমি এতো ইলিশ একসাথে দেখলাম।

দাম খুব একটা কম নয়। প্রায় ঢাকার মতোই। ভরদুপুরেও যেভাবে ইলিশ বেঁচাকেনা হচ্ছে, তাতে সকালের দৃশ্যটা কিছুটা কল্পনা করার চেষ্টা করলাম। দুপুরে খেয়েদেয়ে আবার একইভাবে ঢাকায় ফিরে আসলাম। সত্যি বলতে কি, আনুষ্ঠানিক ভ্রমণ হিসেবে আমাদের এই ভ্রমণের কোনো মূল্য নেই।

আমরা এমন কিছু করিনি যা নিয়ে লেখালেখি করা যেতে পারে, এমন কিছু দেখিনি যা সবাইকে জানানো যেতে পারে। শুধু একটি কথাই বলা যেতে পারে, নিজেদেরকে বিশ্রাম দিতে আমরা কয়েকটি ঘণ্টা ঢাকার বাইরে কাটাতে চেয়েছিলা, সে চেষ্টা আমাদের পুরোপুরি সফল। তৃপ্ত মনে সন্ধ্যায় যে যার ঘরে ফিরে গেলাম। আমি জানি, একদিনের এই বিশ্রাম আমাকে অন্তত পরবর্তী কয়েকটি দিন শান্তি দিবে। যারা একদিনের ট্যুরে বেড়াতে চান, তারাও এরকম একটি আয়োজন করে দেখতে পারেন।

সকাল সাতটায় লঞ্চে উঠে গেলে এগারটার মধ্যেই চাঁদপুর পৌঁছে যাবেন। চাঁদপুর শহরটি খুব ছোট। একঘণ্টা রিকশা ভাড়া করে পুরো শহরটিই ঘুরে দেখতে পারবেন। তারপর ইলিশ মাছ দিয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে দুপুর দুইটার লঞ্চে উঠে গেলে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরতে পারবেন। বি.দ্র. এ ধরনের ভ্রমণে গেলে ভুলেও কেবিন ভাড়া করবেন না।

লঞ্চের ছাদে বসে দেখতে দেখতে যাবেন। টাকাও কম লাগবে, পুরোটা সময় পাবেন নদীর বাতাস, আর নদীর সৌন্দর্য কতটুকু উপভোগ করতে পারবেন, সেটা না হয় না-ই বললাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.