আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শরতের সাজ

আষাঢ়-শ্রাবণের টানা বর্ষণের পর মেঘমুক্ত আকাশের অবারিত নীলে ভেসে বেড়ায় শরতের মেঘ। নদীর পারে কাশফুলের মেলা। কখনও ডানা মেলে উড়ে যায় এক ঝাঁক সাদা বক। এ সময় রোদ্দুরও ভারী মিষ্টি। ভালোবাসার আলতো ছোঁয়ায় গা জুড়িয়ে দেয়।

শরৎ মানেই যেন শিউলির শুভ্রতা। শিউলির রংয়েই যেন শরতের পরিচয়।
প্রকৃতিতে লেগেছে শরতের ছোঁয়া। খরতাপে থেমে থেমে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দেয় এক পসলা বৃষ্টি। প্রকৃতির এই বিচিত্র খেলায় জীবনকে আরও রঙিন করতে পোশাকেও আনতে পারেন বৈচিত্র্য।

আবার সাজগোজ করে বাইরে বেরিয়ে হঠাৎ বৃষ্টির ঝাপটায় যেন পুরোটাই ম্লান না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই সাজ হতে হবে সময়োপযোগী।
ঋতুভেদে সাজগোজের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন নির্ভর করে নিজস্ব রুচির ও চিন্তার উপর। ওম্যান’স ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার কণা আলম বলেন, “এখন যেহেতু বাইরে রোদ-বৃষ্টির খেলা, তাই সাজের ক্ষেত্রে উপকরণটি অবশ্যই যেন পানিরোধক হয়।

এ সময়ে দিনের বেলা গরমে গাঢ় সাজ যেমন মানানসই নয়, তেমনি অন্যদের চোখেও তা দৃষ্টিকটু লাগে। তাই সব মিলিয়ে সাজসজ্জায় স্নিগ্ধভাব থাকা চাই। এ জন্য হালকা মেইকআপই ভালো। ”
কণা আলম জানালেন আরও বিস্তারিত।
দিনের বেলায় ফাউন্ডেশন না লাগিয়ে হালকা কোনো ফেইস পাউডার লাগান যেতে পারে।

এতে ত্বক অনেক বেশি মসৃণ ও সুন্দর দেখাবে। আবার ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে চাইলে, ম্যাটিফায়িং ফাউন্ডেশন লাগান উচিৎ। এতে ত্বক কম ঘামবে এবং কম তৈলাক্ত হবে। এর উপরে প্রয়োজনে পাউডার ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে মুখের যেখানে সাধারণত বেশি ঘাম হয়।


পোশাকের সঙ্গে মেইকআপে মিল রেখে হালকা বাদামি রংয়ের আইশ্যাডো লাগিয়ে নিলে অনেক বেশি ন্যাচারাল বা স্বাভাবিক দেখাবে। তবে রাতের বেলায় একটু গাঢ় করেই চোখ দুটো সাজালে ভালো। সে ক্ষেত্রে মেরুন, কফি, সবুজ, নীলচে রংয়ের শেইডগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ সময় অবশ্যই ওয়াটারপ্রুফ মাশকারা এবং পেনসিল আইলাইনার ব্যবহার করতে হয়। দিনের সাজে চোখের নিচের পাতায় আইলাইনার অথবা মাশকারা না লাগানোই ভালো।

পোশাকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নিতে পারেন রঙিন কাজল। নীল, সবুজ, গোলাপি, লাল কাজলের রেখা টেনে নিতে পারেন চোখের কোণে।
যারা একটু বেশি রঙিনভাবে সাজতে চান তারা পোশাকের রংয়ের বিপরীত রংও বেছে নিতে পারেন। এটি চোখের কাজল, শ্যাডো, লিপস্টিক সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। দিনের বেলা ব্লাশন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কপালে টিপ দিতে পারেন।
ত্বকের যত্ন
সকালে বা দিনের যে কোনো সময় আর রাতে ঘুমানোর আগে ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। যত নরম সাবানই হোক, তাতে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নানান উপাদান থাকে। নিয়মিত সাবান ব্যবহারে মুখের ত্বকে বলিরেখা পড়তে পারে। মুখের ত্বকে তাই সাবান ব্যবহার না করাই ভালো।


সপ্তাহে একদিন যে কোনো স্ক্রাব দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। ত্বকে যাতে তেল না জমে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। নইলে তেল আর ময়লা জমে ব্রণ হতে পারে।
ত্বকের তেলতেলে ভাব কাটাতে কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করুন। বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করলেও উপকার পাবেন।

রাতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঘুমালে অবশ্যই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
সবসময় নামি প্রতিষ্ঠানের তৈরি প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করবেন।
চুলের যত্ন
এ সময় প্রতিদিন চুল ধুতে হবে। যারা বাইরে বেশি কাজ করেন, তারা সম্ভব হলে প্রতিদিনই চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার লাগান। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন মাথায় গরম তেল ম্যাসেজ করুন।


নারকেল তেলই চুলের জন্য সবচেয়ে ভালো। সারারাত লাগিয়ে রেখে পরদিন শ্যাম্পু করুন। এতে ঘুমও ভালো হবে। তেলের সঙ্গে যে কোনো প্রোটিনসমৃদ্ধ প্যাকও লাগাতে পারেন। ডিম, আমলা, টকদই-- এসব দিয়ে তৈরি প্যাক লাগালে ভালো।


রাতে ঘুমানোর আগে চুল ভালো করে আঁচড়ে নিন। লম্বা চুল হলে পাতলা স্কার্ফ দিয়ে মুড়িয়ে ঘুমাতে পারেন। চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
দিনে চলাফেরার সময় চুল বেঁধে রাখলে কম ময়লা হবে। খুশকি থেকে বাঁচতে চুল সবসময় পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখুন।

এ জন্য চুল ধুয়ে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য
এ সময়ে হঠাৎ বৃষ্টিতে পোশাক ভিজতেই পারে। তবে ভিজে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুকিয়ে নিতে হবে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় দীর্ঘদিন তুলে রাখা কাপড়ে ফাঙ্গাশ দেখা যায়। তাই মাঝেমধ্যে পোশাক রোদে দেওয়া ভালো।


আলমারিতে কাপড় রাখার সময় ভাঁজে ভাঁজে ন্যাপথলিন গুঁজে দিতে পারেন। বর্ষার দিনে কর্মজীবীরা ব্যাগে সবসময় ছোট তোয়ালে, লিপস্টিক ও চিরুনি রাখুন।
চোখের কালি ঢাকতে ভ্রুর কাছে লাগান সামান্য পলহোয়াইট হাইলাইটার। খুব বেশি ফ্যাকাসে লাগলে চোখে লাগান কালো মাশকারা। গালে অল্প করে হালকা বাদামি ব্লাশন লাগান।

এতে গালটা আর ভারি ভারি দেখাবে না।
চুল বড় হলে খোলা রাখতে পারেন। এই গরমে ঢাউস ব্যাগ না নিয়ে ছোট মানানসই ব্যাগে সানগ্লাস, কলম, টিস্যু ইত্যাদি দরকারি জিনিস ভরে নিতে পারেন।
এই মৌসুমে দিনের বেলা যতই নিরাপদ জায়গায় থাকুন না কেন, ভারি সোনার গহনা পরা থেকে দূরে থাকুন। অবশ্যই সুগন্ধি ব্যবহার করবেন।


ভাদ্রের গরমে পাতলা কোটা শাড়ি এড়িয়ে চলুন। এখন মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হয়। তাই সাদা কাপড় যেমন বৃষ্টির দিনে মানানসই নয়, কালো কাপড়ও তেমনি পরা উচিত নয়। কারণ কালো কাপড় ভিজে গেলে ছোপছোপ দাগ হতে পারে।
কামিজ পরুন একটু খাটো।

কাদায় ময়লা হওয়ার আশঙ্কা যাতে না থাকে। আর সালোয়ারও আঁটসাঁট হওয়া চাই। তবে পোশাক যাই পরুন না কেন, ছাতাকে সঙ্গী করতে ভুলবেন না। তাহলে হঠাৎ বৃষ্টির ছাঁট আপনার সাজ পোশাক নষ্ট করতে পারবে না একদমই।
 
ছবি কৃতজ্ঞতায় : শারমিন রাহী


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।