আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আলোকিত বিদ্যার আলয়

অতীতকে নিয়ে নস্টালজিক হতে ভালোবাসি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেও।

এখানে প্রাইমারী স্কুলে কোন পড়াশুনা হয় না, আর হাই স্কুলে উঠলেই কয়েক ধাক্কায় ভাসায় দেয় পড়াতে। সেভেনে ছোট্ট একটা টোকা দিয়ে ধারা বুঝিয়ে দেয়, এর পর নাইনে উঠে আরেকটু বড় কিছু। টেনের পড় একেবারে টেনেই আঁতেল বানিয়ে ফেলার কথা (এখনও অভিজ্ঞতা হয়নি, তাই আসলেই 'ফেলে' বলতে পারছি না!)। হাই স্কুলের রকমও আছে অনেক।

প্রাইভেট স্কুলে মানুষ ঢুকে টাকার জোরে। এগুলো বেশির ভাগই ক্যাথলিক স্কুল, তাই যারা যায় তাদেরও হতে হয় ক্যথলিক, না হলেও সে ধর্মের অনেক কিছুই পালন করতে রাজি হতে হয়। ইসলামিক স্কুলও আছে কয়েকটা। পাবলিক স্কুলেই সবচেয়ে বেশি মানুষ যায়। যদিও ছেলে আর মেয়েদের জন্য আলাদা স্কুল, সবারই একটা করে 'ব্রাদার' স্কুল বা 'সিস্টার' স্কুল আছে।

ডিবেট কিংবা ড্যান্সের মত কিছু হলে সেটা ঐ স্কুলের সাথে হয়। পাবলিক স্কুলের মধ্যে থেকে কিছু বেছে নেওয়া স্কুল আছে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রিদের জন্য - 'সিলেকটিভ স্কুল'। এখানেও পড়াশুনার ভালো ব্যবস্থা আছে, প্রাইভেট স্কুলের মতই। পার্থক্য এই যে, এখানে ঢুকতে পকেট ফোলা থাকা লাগে না। ক্লাস সিক্সের শেষে একটা পরীক্ষা নিয়ে বাছাই করা হয়।

চার বছর আগে আমার মাথা থাকতো আকাশে, মগজে উড়ু উড়ু ভাব। কবিতা লিখতাম দু'দিন পর পর। বিরাট একটা প্রাইজও পেয়েছিলাম একবার - দুইশ পঞ্চাশ ডলার, কয়েক জায়গায় ছাপানো খবর আর একটা প্লাক। সেটার পাশাপাশি ক্লাসের কে কি করছে এ নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। পড়াশুনা লাটে উঠিয়ে ভাইস ক্যাপটেনের ব্যজ নিয়ে ঘুরতাম।

স্বাভাবিকভাবেই সেবার সিলেকটিভ এ চান্স পাই নি। মন খারাপ হয়েছিলো একটু। মন খারাপটা বেড়ে গেলো যখন শুনলাম আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সিলেকটিভের মধ্যেও সবচেয়ে ভালোটাতে যাচ্ছে। গত চার বছর মোটামোটি ভালো একটা পাবলিক স্কুলে আছি। সাত জন খুবই ভাল বন্ধুর সাথে হেসে-কেঁদে-খেলে-পড়ে দিন কাটছিলো অসাধারণভাবে।

কিন্তু একটা সময়ের পর সবাই নিজের ব্যাপারে স্বার্থপর হয়ে যায়। এ জুলাইতে অনেকের মতই আমিও অ্যাপ্লাই করলাম দু'টো সিলেকটিভ স্কুলে। একদিন স্কুল থেকে এসে শুনি একটা থেকে চিঠি এসেছে - আমাকে রিজার্ভ লিস্টে রেখেছে। সেদিন বাবা আমাকে অন্য স্কুলটা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো, নেটেও দেখি ওটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। মনে একটু খটকা লাগলো, আর সাথে সাথে আশাটাও বাড়ছিলো, যা ভাবছি তাই নাকি? রাতে মা বললো একটা বিশেষ খবর আছে আমার জন্য।

আশাটা আরেকটু বেড়ে গেলো। প্রায় একঘন্টা ধরে একটু পর পর প্রশ্ন করায় ওরা দু'জনই হাল ছেড়ে দিয়েছে। অন্য স্কুলটা থেকে আসা বিরাট খামটা পেলাম হাতে। চান্স পেয়েছি। সাথে সাথে এক বন্ধুকে ফোন করে জানতে পারলাম সেও একই স্কুলে চান্স পেয়েছে।

পরদিন শুনলাম আরও তিনজন প্রাইভেট স্কুলে চলে যাবে। আমাদের আটজনের গ্রুপ থেকে বাকি থাকলো তিন! অংক টিচার, ডেপুটি প্রিন্সিপাল বা মিস নিকোলস - এদেরকে যতই অপছন্দ করি না কেন, স্কুলের প্রতি মায়া পড়ে গিয়েছে। তবুও যাবো। বললাম না, আমি সার্থপর।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।