আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার

দুঃখটাকে দিলাম ছুটি, আসবে না ফিরে

কম্পিউটারের সামনে বসে ছিলাম অনেক্ষণ। দুপুর গড়িয়ে যখন বিকাল হচ্ছে। চোখে তন্দ্রা ভাব এলো, রিমোর্টটা হাতে নিয়ে গা টা সোফায় এলিয়ে দিলাম। রিমোর্টের বাটন চাপতে চাপতে একজায়গায় এসে চোখ আটকে গেল, চ্যানেল আই। দেখলাম বাছাই করা লাক্স সুন্দরীদের ২৫জনকে নিয়ে বিশেষ এক প্রোগ্রাম হচ্ছে।

সম্ভবত মানিকগঞ্জের কোথাও তাদের বিশেষ ক্যাম্পিং প্রোগ্রাম হচ্ছিল। খুটে খুটে দেখার চেষ্টা করলাম। হেভি নিয়ম শৃংখলার মধ্যে রাখা হয়েছে। সবার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাতে বিশেষ এক সময়ে তাদের মোবাইলে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়।

সার্বক্ষণিক তাদের মনিটর করা হয়, এর উপর ভিত্তি করে তাদের নাম্বার দেয়া হয়। হাঁটা চলা, কথা বলা, মেকআপ, অভিনয়, ছবি আঁকা এসব একজন স্টার হতে হলে যেমন হওয়া দরকার সেভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। পোষাক আষাকে দুয়েকজন ছাড়া কারও বাঙালী ভাবধারার লেশ মাত্র নেই। এদেরকে দেখে মনে হল না যে এরা বাঙালীর স্বভাব-সুলভ দুঃখ কষ্টে মানুষ হয়েছে। তবে অন্যদিকে আবার ভীষণ আবেগি।

একদিন দুদিন আগে বাসা থেকে এসেছে, অথচ ফোন করা মাত্রই আবেগ ঝরে পড়ছে। সবচেয়ে খারাপ লেগেছে যেটা চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরা তাদের সবসময় ফলো করছে। এমনকি ফোনে কি কথা বলছে তাও ক্যামেরার আওতার বহির্ভূত নয়। হতে পারে তাদের টার্মস এন্ড কন্ডিশনস-এ এসব ছিল, তবুও ডেফিনিটলি এগুলো মানুষের ন্যূনতম পারসোনালিটির পরিপন্থি। নারী পুরুষ নির্বিশেষে লজ্জাবোধ তাদের সৌন্দর্যের বড় উপাদান।

কিন্তু এসব লজ্জাবোধ একেবারে উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। টেলিভিশনে এসব প্রচার করার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। আমাদের দেশ গরীব, এখনও এ দেশের মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এসব অনুষ্ঠান, মেয়েদেরকে লেখাপড়া বিমুখ করছে। পৃথিবীর প্রতিটা মেয়েই তার চেহারা সুন্দর বলেই মনে করে, কিন্তু প্রতিটা মেয়ের স্টার হওয়া সম্ভব নয়।

মুলা ঝুলিয়ে তাদের বিপথগামী করার চেষ্টা চলছে। সালমা যখন ক্লোজ আপ ওয়ান হল। তখন দেখেছি কিছু মানুষের অস্বাভাবিক উম্মাদনা। এসব করতে গিয়ে তাদের সন্তানদের বিপদে ফেলছেন নিজের অজান্তেই। প্রতি বছর কয়জন ক্লোজআপ ওয়ানে টিকেন? কয়জন অ্যামেরিকা ভ্রমণে যান? কিন্তু এসব অনুষ্ঠান তরুণ-তরুণীদের মধ্যে রেখে যায় এক ধরনের উম্মাদনা।

এসব বন্ধ হোক। মেয়েদেরকে বোঝানো উচিত অথবা তাদের বোঝা উচিত, এসব তাদের মর্যাদাকে কোন মতেই বাড়িয়ে দিচ্ছে না, বরং তাদের মার্কেট ভ্যালুকেই বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্যামেরাতে যতটুকু দেখা যাচ্ছে, কেবল ততটুকুরই দাম পাচ্ছে। তাদের প্রকৃত সত্তার মুল্য কমই দেয়া হচ্ছে। অথচ, জাতির কাজের অর্ধাংশ তাদেরই করতে হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.