আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছিন্ন অনুভুতিরা ডেকে যায়..

আমার 'কলম' আজো আছে আমার সাথে, আমার কষ্টের সঙ্গী হয়ে,আমার সুখের ভাগ নিয়ে দেনা-পাওনা চুকিয়ে,এক চিলতে হাসি হয়ে... মাথাটা মনে হয় ব্যাথায় ছিড়ে যাবে...!হঠাৎ করে এমন মাথা ব্যাথা শুরু হয় যে থামার নামই নেয় না...!দুই আঙ্গুল দিয়ে কপাল টিপতে টিপতে ব্যাগ থেকে চাবি বের করে কিছুটা অবাক হয়!কি ব্যাপার দরজা খোলা?! এই অসময়ে দরজা খোলা কেন?বাসায় তো এই শেষ দুপুরে কেউ আসে না!সাতপাচ ভাবতে ভাবতে ড্রয়িং রুমে কাউকে দেখতে পেলো না,মায়ের রুমে ঢুকে দেখল,মা এলোমেলো হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন,পাশেই মায়ের সেলাইয়ের সরঞ্জামাদি ছড়িয়ে আছে...ঘুমন্ত মায়ের ক্লান্ত-শ্রান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে অদিতি বুঝল,ভাইয়া এসেছে...! কিছুটা সময় থমকে রইল যেন... অদিতি ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে হাতের ব্যাগটা চেয়ারে রেখে,সোজা নিজের ঘরে গেল,যা ভেবেছিল তাই,ভাইয়া ওর রুমে কিছু খুঁজে বেরাচ্ছে...! ওকে দেখে খানিকটা চমকে পেছনে ফিরল,একটা অপ্রস্তুত হাসি দিল আদিব,অনেকটা কাঁপা কন্ঠে বলল, --কেমন আছিস? অদিতি কোন জবাব না দিয়ে আদিবের মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল, --ইয়ে না মানে,আসলে অনেক দিন তোদের দেখিনা,তাই ভাবলাম দেখা করি,আমি জানি আমি আসাতে তোরা খুশী হোস না,তবুও এলাম,আসলে... --কে বলল,তুই আসলে আমরা খুশী হই না? আদিব কে কথা শেষ করতে না দিয়েই বলল অদিতি। ওর কঠিন মুখের দিকে তাকিয়ে আদিব কি বলবে ভেবে পেলো না! অদিতি আবারো শান্ত গলায় বলল, --আজ চারমাস পর একমাত্র বড় ভাইকে সামনে দেখে কোন বোন খুশী হবে না বল? আদিব ওর দিকে আরেকবার তাকালো, --হিসেব রাখিস আমার আসা-যাওয়ার? --হুম,রাখি,রাখবো না কেন! শত হলেও তুই আমাদের একমাত্র ভাই। --হুম ভাই!! বলে একটু হাসল আদিব --হুম,তুই আমাদের বোন না ভাবলেও আমরা তোকে ঠিকই ভাই ভাবি,হলি না হয় মাদকাসক্ত! তাই না? আদিব আগের মতোই চুপ করে রইল। একটু পর অনেকটা অপরাধীর ভঙ্গিতে বলল, --আমি অনেক খারাপ তাই না?আমাকে তোরা অনেক ঘৃনা করিস না? অদিতি মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল,ভাইয়ার এসব কথার সাথে ও পরিচিত,ও জানে আদিব আসলে এসব কথা বলে ওকে নরম করতে চাইছে,অদিতির কন্ঠ একটু নরম হলেই টাকা চাইবে... --তুই খারাপ কি না জানিনা,তবে তোর পরিবারের কপাল যে কতো খারাপ তা বলতে পারি! বড় ভাই থাকতেও নেই,বাবাহীন সংসারে পঙ্গু মা কে নিয়ে তোর ছোট দুইবোন বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে যাচ্ছে,আর তুই?ক'মাস পর পর এসে টাকার জন্য মায়ের সাথে যাচ্ছে- তাই ব্যাবহার করে যাস,বোনেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ক'টাকা উপার্জন করে নিয়ে আসে আর তুই তা নিয়ে নেশা করিস...'' বলতে বলতে গলাটা ধরে আসে অদিতির! আদিব অনেকটা ক্লান্ত ভঙ্গিতে পাশের চেয়ারটাতে বসে পড়ে,অদিতি তা দেখেও না দেখার ভান করে,অগোছালো ঘরটা গোছাতে শুরু করে,আদিব অনেকটা আপন মনেই বলতে থাকে, --আমার জীবনটা এমন কেন হলো বলতে পারিস? এস.এস.সি, এইচ.এস.সি তে ভালো রেজাল্ট করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে গেলাম পড়তে বিশ্ববিদ্যালয়ে,কতো স্বপ্ন দেখতো বাবা-মা আমাকে নিয়ে,কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষার আগে বিনা দোষে হলের নোংরা পলিটিক্সের স্বীকার হয়ে মিথ্যে কেসে জেল খাটলাম ১বছর!ব্যাস,শেষ হয়ে গেল সব... হতাশা আর কষ্টের মধ্যে যখন হাবুডুবু খাচ্ছি ঠিক তখনই রোড এক্সিডেন্টে বাবা চলে গেলেন,আর মা হয়ে গেলেন পঙ্গু,আর সহ্য করতে পারলাম না...চলে গেলাম অন্ধকার জগতে...ভয়ংকর সেই নেশার জগত আমাকে আরো শেষ করে দিলো... বেঁচে থেকেও আজ আমি মৃত!!'' অদিতি কিছু না বলে একমনে কাজ করতে লাগল,বলা যায়,কাজের মধ্যে নিজেকে আড়াল করতে চাইল,এসব কথা অদিতির অজানা না,আজো চোখ বন্ধ করলে সেই সব দুঃস্বপ্নের মতো ভয়ংকর দিন গুলো সে জীবন্ত দেখতে পায়। এরপরের কয়েক বছর নেশার টাকার জন্য হেন কোন কাজ নেই আদিব করেনি,লজ্জায়-অপমানে সমাজ-আত্নীয় স্বজন বলতে গেলে এক ঘরে করে দিয়েছে ওদেরকে,পঙ্গু মা অসহায় বোন দু'টোর হাজার মিনতিও পারেনি আদিবকে নেশার সেই ভয়াল জগত থেকে ফেরাতে।

বাস্তবতা যে কতো কঠিন আর নিষ্ঠুর হতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না... শেষ পর্যন্ত স্কুলে পড়ুয়া ছোট বোনকে নিয়েই বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু করে অদিতি...আজো করছে... রুমের কাপড় গুলো নিয়ে মায়ের রুমে যাবার আগে একবার আদিবের দিকে তাকালো অদিতি,চোখ বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে,চোখের কোনের সেই জমানো অশ্রু অদিতি দূর থেকেও স্পষ্টই দেখতে পেল... বুকটা হু হু করে কেঁদে উঠলো অদিতির... আজ কতোটা দিন হয়ে গেল,ওরা দুই বোন ভাইয়ার সাথে দুষ্টোমি করে না, সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা করে না কবে ভাইয়া বাসায় আসবে কবে ওর মাথার পাকা চুল বেছে দিবে... কতো আদরের ভাইয়া ওদের,আজ নেশার থাবায় কতো দূরে চলে গেছে...কতো পর হয়ে গেছে... কোথায় থাকে,কি খায় কিছুই জানে না! অদিতির ইচ্ছে করে মাকে বলতে, ঐ ক্লান্ত ভাইয়ার মাথায় যেনো একটু তৈল দিয়ে দেয়,ওর পছন্দের কুলি পিঠা বানিয়ে দেয় কিন্তু পারে না,বলা হয় ন...একটা দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে বেড়িয়ে আসে শুধু... দুপুরের খাবার চুলোয় দিয়ে অদিতি মা কে আস্তে করে ডেকে তুলে,মা একরাশ প্রশ্ন ভরা দৃষ্টিতে অদিতির দিকে তাকায়,অদিতি কিছু বলে না,স্বাভাবিক ভাবে মা কে ধরে বাথরুমে নিয়ে যায়,অযু করিয়ে আবার বিছানায় বসিয়ে চূলো থেকে খাবার নামায়,মায়ের খাবার বিছানার পাশে টেবিলে রেখে নিজের ঘরে যায়,দেখে ভাইয়া বসে থাকতে থাকতে পাশে বিছানায় মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে... কিছু না বলে অদিতি চুপচাপ নামাজ পড়ে নেয়। নামাজ শেষে রুম থেকে বেরুবার সময় ভাইয়া ডাক দিল, --ইয়ে অদিতি,তোর কাছে কিছু টাকা হবেরে? অদিতি কিছু না বলে বেরিয়ে যায়,ভাইয়ার জন্য খাবার নিয়ে রুমে এসে দেখে,রুমে কেউ নেই,পাশে মেঝেতে অদিতির ব্যাগ পড়ে আছে চেইন খোলা অবস্থায়...!অদিতির মাথাটা ঘুরে উঠে যেনো!!দু'টো টিউশনি থেকে বেতন পেয়েছিল,মায়ের ঔষধ কিনে বাকি টাকা ছিল ওতে,এ মাসের বাড়ি ভাড়া এখনো বাকী...!একবার হাতে ধরা খাবারের প্লেটের দিকে তাকালো,অদিতির ইচ্ছে হলো সর্বশক্তি দিয়ে একটা চিৎকার করতে...কষ্টের ব্যাথায় চেঁচিয়ে উঠতে,কিন্তু পারে না,দরজায় বসে শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে... সারাদিন স্কুলে চাকরী,টিউশনী করার কারনে নিয়মিত ক্লাস করতে পারেনা অদিতি,সপ্তাহে এক কি দু'বার ক্লাসে যায়,ক্লাস করে লাইব্রেরীতে বসে পড়া শেষ করে দিন শেষে বের হয়। বন্ধুরা কেউ করুনা করে,কেউবা অবজ্ঞা...অদিতি খুব একটা ওসব গায়ে মাখে না। আজ ক্লাস শেষে বের হবার সময় মনে পড়ে,এডমিশন কোচিং শুরু হবে,কোচিং সেন্টারে কথা বলে যেতে হবে,আগে থেকে বলে না রাখলে পরে আর তারা নিতে চায় না,আজকাল হাত খরচের জন্য হলেও অনেক স্টুডেন্ট এডমিশন সিজনে পার্ট টাইম কোচিং এ পড়ায়,যদিও অদিতির জন্য এটা হাত খরচের ইনকাম না,তবুও আগে থেকে ভাইয়াদেরকে রিকোয়েস্ট করে রাখতে হয়। কোচিং সেন্টার থেকে বের হয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল, আসে-পাশের ছুটে চলা মানুষের ভীড় আর জ্যামে অপেক্ষমান গাড়ী গুলোর দিকে তাকিয়ে কেন জানি মনে হয় অসীম শূন্য ভাসছে সে... চারপাশের চলমান সব কিছুর ভীড়েও সে যেনো স্থির কোন বিন্দু... অথচ বছর চারেক আগেও কতো স্বাভাবিক একটা জীবনই না ছিল ওর,সে জীবনে বাবা ছিল,সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখা মায়ের হাসি ছিল,আর ওদের তিন ভাই-বোনের কলরব ছিল...কোথায় চলে গেল সেই সময় গুলো... আবারো একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো... কাল রাতে বাবাকে স্বপ্নে দেখেছে,কেমন মলিন মুখ...!কথাটা মনে হতেই দ্রুত ব্যাগে হাত দিল,কিছু খুচরো টাকা আছে কি না দেখলো,বাসায় যাওয়ার সময় কোন মসজিদে বাবার নামে দান করে যাবে।

পরপর কয়েকটা বাস মিস করলো অদিতি,এতো ভীড়!উঠার সাহসই পেলো না,ওদিকে রাত হয়ে যাচ্ছে,মা টেনশন করবে...! আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে একটু পর কম ভীড়ের একটা বাস দেখে অনেক কষ্টে উঠলো,একপাশে দাড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। এমন সময় একটা ছেলে উঠে ওকে বসতে দিল,অদিতির কিছু মুহুর্তের জন্য মনে হলো ও ভাইয়াকে দেখছে...! সীটে বসার পরেও ও কয়েকবার ছেলেটার দিকে তাকালো,আজ অনেকদিন পর অজান্তেই চোখ ছল ছল করতে লাগল অদিতির...! গত কয়েক মাস হয়ে গেলো ভাইয়ার কোন খোঁজ নেই। কোথায় আছে জানে না... ভাইয়ার বন্ধুদের সাথে কথা বলতেও খুব ভয় হয়,তাই খোঁজ ও নেয়া হয়না... অদিতির মাঝে মাঝে মনে হয়,টাকা থাকলে ভাইয়ার চিকিৎসা করাতো সে,আগের সেই ভাইয়া কে,মায়ের মানিককে আরেকবার ফিরিয়ে আনতে পারতো সে... কিন্তু অভাব এমন এক অক্টোপাশ যে শুধু আষ্টে-পৃষ্টে চেপেই ধরে,রেহাই দেয় না..! মাঝে মাঝে নিজেকে অনেক দায়ী মনে হয়!সেই কঠিন সময় গুলোতে ভাইয়ার পাশে স্বান্তনা দেবার মতো,সাহস দেবার মতো কেউ ছিল না,একের পর এক ধাক্কায় সবাই হতভম্ব ছিল,অদিতি নিজের ও অনেক সময় লেগেছিল বিশ্বাস করতে যে,বাবা চলে গেছেন,মা আর কোন দিন হাঁটতে পারবে না... সেই সময়ে যদি ভাইয়াকে ভালো ভাবে সাপোর্ট দিতে পারতো তাহলে হয়তো ওকে ফেরানো যেতো... শুনেছে আজকাল নেশার পাশাপাশি কোন দলের হয়ে সন্ত্রাসী করছে আদিব! কথাটা মাকে বলেনি,কারন অদিতির নিজের ও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়...! কাল অদিতির পরীক্ষা আছে,তাই রাত জেগে পড়ছে ও,মায়ের জ্বর এসেছে,ছোট বোন অমি মাথায় পানি পট্টি দিচ্ছিল,কিন্তু এক সময় সেও ঘুমিয়ে পড়ে,অদিতি হাতে বই নিয়ে মায়ের পাশে বসে পড়ে আর একটু পর পর পট্টি বদলে দিতে থাকে...জ্বর কমছে না,অদিতির ভেতরে ভেতরে ভয় লাগছে খুব! হঠাৎ করে এতো জ্বর নিয়ে এই মূহুর্তে কি করবে বুঝতে পারছে না! মা বিড়বিড় করে কথা বলছে,কখনো বাবার সাথে,কখনো ভাইয়ার সাথে...অদিতি আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে পট্টি দিতে থাকে,হঠাৎ করে মা ওর দিকে তাকিয়ে বলল, --দিতি শোন,কাল একটু মানিককে নিয়ে আসবি?ওকে দেখবো একটু অদিতি একটু চুপ থেকে বলে, --কিভাবে আনবো মা?ভাইয়া কোথায় আছে জানিনা তো! --আমার মনটা জানি কেমন করছেরে...!ওকে একটু দেখতে পেলে শান্তি লাগতো! অদিতি কিছু না বলে চুপ করে থাকে। মনে মনে ভাবে কাল ভার্সিটি শেষ করে একবার পুরনো ঢাকার দিকে যাবে... মনটা তো ওর নিজেরও কেমন জানি করছে...! পরীক্ষা শেষ করে বের হতেই মোবাইল বেজে উঠলো,হাতে নিয়ে দেখলো অমির ফোন, --হ্যালো... ওপাশে কান্নার শব্দ ছাড়া আর কিছু শুনতে পাচ্ছে না,বুকটা ধক করে উঠলো অদিতির!!মা ঠিক আছে তো...?!!আরো কয়েকবার হ্যালো হ্যালো করলো,অনেকক্ষন পর অমির কান্না জড়ানো কন্ঠ শুনতে পেল, --আপু...আপু,তুই জলদি বাসায় আয়... অদিতির আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস হলো না! দ্রুত বের হয়ে রিকশা নিল। সারাটা পথ আল্লাহকে ডাকতে থাকলো,কোন ভয়াবহ কিছু যেন না হয়... অদিতির মনে হল,রাস্তা যেন আজ শেষই হচ্ছে না! অসম্ভব অস্থির হয়ে পড়ছে সে,মায়ের কিছু হলো না তো!!! সত্যি সত্যি যদি মায়ের কিছু হয়ে যায়,তাহলে কি করবে সে?কোথায় যাবে...?,হে আল্লাহ,এতো বড় শাস্তি আপনি দিয়েন না...' গলির মুখে এসে চমকে উঠলো অদিতি!!পুলিশের গাড়ি?!!! অনেক মানুষের ভীড়...!ব্যাপার কি?! অদিতি ভীড় ঠেলে বাসায় ঢুকলো,সিঁড়ি বারান্দায় দেখতে পেল,মা আর অমি বসে আছে পাথরের মতো!,সামনে পলিথিনে মোড়ানো একটা লাশ! অদিতির পা যেন আর চলতে চায় না...ধীরে ধীরে মায়ের পাশে বসলো সে।

অনেকক্ষন পর... অদিতির ইচ্ছে হলো একবার বলতে, --কিছু খাবি ভাইয়া?চা করে দিবো? পাথরের মতো বসে থাকে অদিতি,ক'বছর আগেও যখন এইভাবে হাসপাতাল থেকে বাবার লাশ আনা হয়েছিল,ও ঝাঁপিয়ে পড়ে কেঁদেছিল,রক্তাত্ত বাবার প্রাণহীন শরীরটা বারবার নাড়াচ্ছিল,মনে হচ্ছিল,এই বুঝি বাবা জেগে উঠবে!! কিন্তু আজ কেন জানি কাঁদতে পারছে না অদিতি!সমস্ত কান্না যেনো গলার কাছে এসে আটকে আছে! আস্তে আস্তে আদিবের রক্ত মাখা হাতে হাত রাখে,শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,ঠিক ছোট বেলায় স্কুল ছুটির পর যেভাবে ভাই-বোন হাতে ধরে এক সাথে বাড়ী ফিরতো... পাশে কে যেনো এক সাংবাদিক এর মতোন ক্যামেরা হাতে দাঁড়ানো কাউকে বলছিল, ''বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিল আদিব,হঠাৎ করে রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িয়ে পড়ল,সেই সাথে নেশার জগতে! এই মাদক নিয়েই দলের দু'পক্ষের মারামারির সময় ওকে অপর পক্ষের লোকেরা কূপিয়ে হত্যা করে...পরিবারে বড় তেমন কেউ নেই......''  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।