আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি, তন্বী ও একটি বিকেল - ২য় পর্ব

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

আমি, তন্বী ও একটি বিকেল - ২য় পর্ব (পূর্বে প্রকাশিত) খামার বাড়ী আসার পর কর্তব্যরত সার্জেন্ট বাস থামিয়ে দিল। বাস আর সামনের দিকে যাবে না। বিজয় স্মরনী হয়ে যাবার রাস্তা বন্ধ। বাসের ড্রাইভারের তখন বেগতিক অবস্থা। যাত্রীদের উত্তেজিত ভাব বুঝতে পেরে ড্রাইভার খানিকক্ষণ চেষ্টা করলো কিভাবে যাওয়া যায়।

অবশেষে খামার বাড়ীর মোড়ে এসে এলোপাতারী দুই এক চক্কর লাগিয়ে সংসদ ভবনের প্রবেশ মুখে একপাশে বাসটা দাঁড় করিয়ে রেখে দিল। ড্রাইভার ঘোষনা দিল বাস আর যাবে না। সব রাস্তা বন্ধ। অগত্যা যাত্রীরা সবাই বাস থেকে নেমে গেল। আমিও নামলাম।

খামার বাড়ীর উল্টো দিকে ফুটপাত ধরে হাঁটতে লাগলাম। কোথায় যাব ঠিক করতে পারছিলাম না। সিদ্ধান্ত নিলাম বনানী যেতে না পারলে মোহাম্মদপুর থেকে যাব। শালীর বাসায়। এরই মধ্যে একটা খালি কালো ক্যাব পেয়ে গেলাম।

হাত দেখিয়ে চট জলদি উঠে বললাম, মোহাম্মদপুর কিংবা বনানী যেদিক খুশী চলেন। আমার যাওয়া দরকার, ব্যস্। ট্যাক্সি ক্যাব একটু সামনে এগুতেই দেখি আমার সামনের সিটে বসা লাল সালোয়ার-কামিজ পরা সেই মেয়েটা। গরমের মধ্যে কোনো রিক্সা, সিএনজি কিছু না পেয়ে কান্ত পায়ে একা হেঁটে যাচ্ছে। আমি ড্রাইভারকে একটু থামতে বললাম।

জানালা দিয়ে মুখ বের করে মেয়েটাকে বললাম- এই যে শুনছেন, কোথায় যাবেন আপনি? মেয়েটা আমার প্রশ্ন শুনে একটু অবাক! ইতস্তত মুখে আস্তে করে বললো, জ্বী আমি উত্তরা যাব। আমি বললাম, আপত্তি না থাকলে গাড়ীতে উঠে পড়–ন। আমি বনানী যাব। আপনাকে বনানী পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারি। এই অবস্থায় এখন কিছুই পাবেন না।

কেউ যেতে চাইবে না। মেয়েটা আমাকে একটু পর্যবেক্ষণ করলো। কিছু না বলে সামনের সিটে বসে পড়লো। সৌজন্যের খাতিরে বললো, খামাখা আপনাকে কষ্ট দিচ্ছি। আমি উত্তরে বললাম, আপনিতো আমার ঘাড়ে বসে যাচ্ছেন না।

তাই কোন কষ্ট হবে না। গাড়ীতে যথেষ্ট জায়গা আছে, আর আমি বনানী যাচ্ছি। গাড়ী ওদিক দিয়েই যাবে। আপনাকে সফর সঙ্গী হিসেবে পেলাম এটাই আমার লাভ। গাড়ী বিজয় স্মরনী দিয়ে যেতে পারলো না।

সার্জেন্টকে জিজ্ঞেস করায় জানালো ক্যান্টনমেন্ট হয়ে বনানী যেতে পারবেন। অগত্যা রোকেয়া স্মরনী ধরে ট্যাক্সি যেতে লাগলো। রাস্তায় যেতে টুকটাক কথা হলো মেয়েটার সাথে। নিজের পরিচয় দিলাম। ওর নামটাও জেনে নিলাম।

মাঝে একটু বিরতি, ট্যাক্সিতে গ্যাস নিতে হলো। তন্বী নিজে থেকেই পেছনের সিটে এসে বসলো। নানা বিষয়ে কথা হলো ওর সাথে। সংখ্যাতত্ত¡ ও রাশিফল নিয়ে অনেক কথা জিজ্ঞেস করলো। এভাবেই চলার পথের বিরক্তি আর অসহ্য গরম কোথায় যেন হারিয়ে গেল।

চলবে-

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.