আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুঞ্চিক্তের পোস্ট এবং নোটিশ বোর্ডের অসহায়তা। সাদিকের দুই পয়সা

যে ঘড়ি তৈয়ার করে - সে - লুকায় ঘড়ির ভিতরে

নোটিশবোর্ড যদি সামহোয়্যার ইনের ভিজিবল ফেইস হয়, নোটিশবোর্ডরে যদি সামহোয়্যার ইন কৃতপক্ষের হয়ে একজন ব্লগার ধরে নেই তবে নি:সন্দেহে যুঞ্চিক্তের পোস্ট প্রসঙ্গে নোটিশবোর্ড অসহায়। এইটা আমার মেইনেটইনড ব্লগ হইলে আমি যুঞ্চিক্তের পোস্ট মোছার প্রয়োজন বোধ করতাম না। কিন্তু নোটিশবার্ডকে এই কঠিন সিদ্ধান্তটা নিতে হইছে তার দায়িত্ববোধ থেকেই। আমাদের সমাজের বাস্তবতা অস্বীকার করার মতো এত বড় কুতুব আমরা কেউ হই নাই। যেইখানে ধর্ম পালন মূলত ধর্মান্ধতা, যেইখানে প্রার্থনা করা আসলে তোতাপাখির বুলি আওড়ানো, যেখানে প্রার্থনা মানে 'নামাজ পড়া'র মতো একটা শুকনা রিচুয়াল, যেখানে ধর্মপালন মাপা হয় কুর্তার ঝুল অথবা মাথার টুপিতে - সেই সমাজেই আমারা বাস করি।

সেই সমাজের ভিতরে সামহোয়্যার ইন। সেই সমাজে একজন আরিল কাজ করেন। সেই সমাজে আমরা ব্লগাই। এই ব্লগে যতজন ভিজিট করতে আসেন তার সিংগভাগের ধর্মসম্পর্কে জ্ঞান পুরাটা সমাজের যেরকম সেইরকমই। আমরা এখনও অতো ইন্টেলেকচুয়াল হইনাই।

হওয়া দরকার। খুব জরুরী। কিন্তু সেই জায়গায় জাম্প করে যাওয়া যায় না। সিড়ি বাইতে হয়। ধর্মচেতনার ইভোলিউশন নিয়ে যারা কাজ করেন তারা জানেন যে এটা অনেকগুলো ধাপে হয়।

দু:খজনক কিন্তু সত্য আমাদের সমাজের ধর্ম চেতনা ও বিশ্বাস সেই ইভোলিউশনের খুব প্রাথমিক পর্যায়ে। তাই আমরা কোর থেকে অনেকদূরে। তাই সুপারাফিসিয়াল। তাই আমাদের সো কলড ধর্ম নিয়ে অনুভূতি কেবলই সুড়সুড়ি জাগানিয়া। তাই আমাদের ধর্ম পালনকারীরা জামার আস্তিন কাচিয়ে সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী।

ধর্মচেতনার ইভোলিউশনের শুরুর দিকে আমরা আদিম প্রাণীই। আমাদের বাস্তবতা সেইখানে। তাই যুঞ্চিক্তের পোস্ট মুছে দিয়ে সামহোয়্যার ইন নিজেদের নীতিমালারই কমপ্লাই করতে চেয়েছে। তারা হঠাৎ "আমি বা আমরা খুব ইন্টেলেকচুয়াল" লাইন ধরে হাটতে চায় নি। যে ইন্টেলেকচুয়াল এনলাইটেনমেন্ট আমরা অনেকেই মনে মনে চাই, আমাদের সমাজ ও মানসিক কনস্ট্রাক্ট তা থেকে এখনো হয়তো ২৫ বছর বা ৫০ বছর পেছনে।

আর চিন্তার স্বাধীনতায় ও চর্চায় হয়তো পৃথিবী থেকে ১০০ বা ২০০ বছর। যুঞ্চিক্তের পোস্ট যেভাবে আসছে সেইটা এই ফোরামে রাখার বা না রাখার সিদ্ধান্তটা সামহোয়্যারইনের জন্য কঠিন ছিলো। সব বিচারে এটাকে মুছে দেওয়ার মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বিষয়টা দু:খজনক। আমি যুঞ্চিক্তের পোস্টের ও মতামতের প্রতি সহানুভুতি জানাই।

এবং একই সাথে সামহোয়্যার কতৃপক্ষের অসহায়ত্বটাও এ্যাকনলেজ করতে চাই। যুঞ্চিক্তের পোস্ট তার মতো করেই সে পোস্টাতে পারে। হয়তো তিনি ব্লগস্পটে একটা একাউন্ড করে সেখানে লিখতে পারেন। সামহোয়্যারে এসে লিংক দিয়ে যান। নি:সন্দেহে যারা জানাতে আগ্রহী তারা পড়বেন।

যাদের গালি দিতে ভালো লাগে, এমনকি ধর্মের নামেও (!) তারা গালিও দিতে পারবেন। যারা প্রথমবারের মতো ঐ পুরানো যুক্তি পড়বেন তারাও মন খুলে পড়ুক, এটাই কামনা। আমিও যে বিতর্কিত বিষয়গুলা নিয়া ব্লগাই, যা পড়ার পাঠক এইখানে নাই তা ব্লগস্পটের ব্লগেই ব্লগাই। সেগুলা এইখানের ও দুনিয়ার বাকি সব কাঠমোল্লারা পড়লে, তারা আমারে ডাকবো কাফের আর নাস্তিকে ডাকবো চালাক ধর্মবাজ। সুতরাং যারা দরকার নাই, তারে জোর কইরা পড়াই না, কাউরে অফেন্স করারও প্রয়োজন হয় না।

দরকার নাই বাড়তি এ্যাটেনশনের। মতপ্রকাশ হোক স্বাধীনভাবে। তার উপায় এখন অনেক আছে। একটা না। একই সাথে সংবেদনশীলতা ও আমাদের সীমাব্ধতাও এ্যাকনলেজড হোক।

আমরা সবাই কোন না কোন জায়গায় এসে সীমাবদ্ধ একজন হয়ে দাড়াই। এইটা স্বীকার করে হামবড়াভাব না প্রকাশ করাই বোধহয় স্বাভাবিক আচরণ। যারা মনে করছেন তাইলে এরকম নাস্তিক পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে ধর্ম সমালোচনা, আলোচনা কি আমরা করতে পারবো না? নিশ্চই পারা যাবে। যারা অতি আগ্রহী তারা মুক্তমনায় ঢু মারতে পারেন। তাদের ফোরাম আছে, সেইখানে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে অনেক সময় ধরে।

বাংলায় আর্টিকেলও আছে। পড়তে পারেন। ইমেইলে সাবস্ক্রাইবও হইতে পারেন। তবে নিশ্চিত সামহোয়্যারের ইন্টারাকশনের মজা ওইখানে নাই। ঠিকানা: http://www.mukto-mona.com/


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।