আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অজান্তে অনাহুত প্রেমিকের সাড়া

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

ওটা ছিল ও ক’দিনের জন্য নিত্য নৈমত্তিক। কারণ আমার এস এস সি পরীক্ষা পরবর্তী অবসরে বিগত ৯ দিনই ঐ রকম ঘটতে দেখেছিলাম। মাঝে অবশ্য শুক্রবারটা বাদে। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে মেয়েটা স্কুল থেকে ফিরত এবং ঠিক ১৫ মিনিটের মধ্যে কাপড় বদল করে এসে বসে পড়ত জানালার ধারে তার পড়ার টেবিলে। সামনে থাকত একটা গোলাকার সবুজ বাটি, সেখান থেকে একটু পর পর কি যেন চালান করত মুখের অভ্যন্তরে আর চোখ দুটো একটু পর পরই ওর জানালার গরাদ ভেদ করে চলে আসতে চাইতো আমার দিকে।

ওর বাসা টি ছিল তিনতলায় । আমার টা দুতলায় উল্টো দিকে ২০ কি ২২ গজ দূরত্বে। ঐ সময়টাতে আমিও দাঁড়িয়ে যেতাম পর্দার ভেতরে জানালার গরাদ ধরে। মেয়েটার উপরতলায় মানে ৪র্থ তলায় ওর ডানে বাথরুমে ঠিক ১টা বাজলেই সদ্য বিবাহিত তরুনী টির অবয়ব দেখা যেত। জানালার কাচ লাগানো থাকলেও পর্দাটা থাকতো উঠানো।

তার উর্ধ্ব বস্ত্র দেহ পরিত্যাগ করা মাত্রই চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যেত আমার আর অজান্তেই মুখে চলে আসত এক পুরষালী হাসি সেই কৈশোরে। কিঞ্চিৎ বাল্কি তরুণীটি উদোম গাত্রে পানির ধরা বইয়ে দিতে দিতে দৃষ্টি এ পাণে ফিরিয়ে হাসত না আমার বোঝার ভুল তার ঠিক অনুধাবন হতোনা, তবুও কৈশোর প্রাণে চঞ্চলতা ঠিকই বেড়ে যেতো আর চোখ সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আড়চোখে একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওদিকেই তাকাত। এই ঘুরানো দৃষ্টির তাড়নায় নিশ্চিত তিনতলার জানালায় মেয়েটাও প্রভাবিত হতে থাকে এবং সেটা বুঝতে পারি তার হাতের হালকা কদাচিৎ ইশারায়। সেও হাসত, তার হাসি টাও বেশ সুন্দর ছিল যদিও চারতলার অনাহুত সেই দৃশ্যের কাছে সে হাসি দ্রুতই হতো পরাজিত। কিন্তু দশম দিনের দিন বেলা ১২টা থেকেই যখন অপো চলছিল আমার তখন নিচে দু বিল্ডিংয়ের মাঝে একদল ছেলে ক্রিকেট খেলছিল।

হঠাৎ জয়সুরিয়ার তান্ডব ব্যাটিং প্রাণে ধারণ করা এক ছেলের ব্যাটিংয়ের ফলশ্র“তিতে বল গিয়ে একদম আঘাত হানল চারতলার সেই বাথরুমের কাচে। বেশ বড় একটা ফুটো সেখানে দৃশ্যমান হলো দ্রুত। সেদিন থেকে পর্দা নেমেএসেছিল জানালায় যখন সেই তরুণী স্নানে আসেন বাথরুমে। তাতে বাস্তব কু স্বপ্নটা ভগ্ন হলেও আমি বুঝতে পারলাম ঐ কাচের ভেতর হতে বাইরের দিকে দৃষ্টি নিশ্চিত কোন সীমাবদ্ধতা আছে, না হলে উনি নিশ্চয় এত বড় পাগল হন নি যে রোজ রোজ আমাকে হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থেও সুযোগ দিচ্ছিলেন। অতঃপর দিনের ঐ মধ্য বেলায় পরদিন হতে জানালায় দাড়াঁনোর কর্মটি বন্ধ করে দিতে হলো।

এবং আরও দুদিন গত হবার পরে বিকেল যখন দোকানে যাচ্ছিলাম দিদার জন্য ওষুধ আনতে তখন হঠাৎ তিনতলার মেয়েটা ছুটে এসে হাতে একটা ভাঁজ করা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে মিষ্টি তার হাসিতে ক্ষণিক আমাকে ভাসিয়ে দৌড়ে সিড়িতে উঠে গেলো। দোকানে যেতে যেতে ভাঁজ করা কাগজখানি খুলে দেখি সুন্দর হস্তারে লেখা - কি বন্ধু, পরশু দুপুরে জানালায় আসিনি বলে রাগ করেছেন নাকি? স্যরি, স্কুলে দেরী হয়ে গিয়েছিল। নিচে আমাদের বাসার ফোন নম্বর দিলাম, বাসায় ফিরেই ফোন দেবেন, প্লিজ। না করলে আর কখনও জানালায় আসবোনা। জানালায় অপক্ষায় থাকলাম।

ইতি আপনার ...( নাম পরে বলব) ফোন নম্বর ২৩৩২১১ ৯/৫/০৭

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।