আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুঘু আর ধান....(আমি ও মামুরা

স্মৃতিচারণ ও এলোমেলো ভাবনা। বেশিরভাগই জগাখিচুড়ি।

এদেশে পুলিশের একটা বাংলা নিক নেম আছে। তা হলো 'মামু'। মামুরা সবকিছুতেই খবরদারি করে।

অবশ্য খবরদারি করার জন্যই তাদের বেতন দেয়া হয়। লাইসেন্স পাওয়ার আগে গাড়ি কিনে ফেলেছিলাম। তাই দীর্ঘ তিন মাস লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালিয়েছি ধরা না খেয়ে। লাইসেন্স হয়ে যাওয়ার পর একটা শখ ছিল, তা হলো মামুদের দর্শন। আমার সামনে-পিছনের গাড়ি মামুদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হলেও আমি ফুচকি মেরে বেঁচে যেতে থাকি।

সময়ের প্যাঁেচ পড়ে আমার রাজ্য বদলে গেল। আগে যেখানে ছিলাম সেখানে স্পিড ক্যামেরা থাকলে বার বার 3 বার রাস্তায় সতর্কতামূলক সাইন দেয়া থাকত। যে রাজ্যে এলাম সেখানে কোন সাইন দেয়া থাকে না। মামুরা রাস্তার চিপায়-কোনায় স্পিডোমিটার নিয়ে দাঁড়ায় থাকে। একটু 19-20 হলেই খবর হয়ে যায়।

আমার ততদিনে আত্নবিশ্বাস এসে গেছে। ভাবখানা এমন "কত ঘাগু মামু দেখলাম, তোরা তো কোন ছার। " স্পিড লিমিটের থেকে প্রায়ই 15 বা তারচেয়ে বেশি তে গাড়ি চালাই। ঘুঘু হয়ে অনেক ধান খেয়ে ফেললাম। কনফিডেন্স আরও বেড়ে গেল যখন মামুদের হাতে একবার ধরা খেয়েও বেঁচেও গেলাম।

একদিন মামুদের গাড়ি হঠাৎ করেই আমাকে থামার নির্দেশ দিল। অবশ্য আমি রিয়ার ভিউ মিররে অনেক আগেই মামুর গাড়ি দেখে স্পিড কমিয়ে দিয়েছিলাম। থামানোর পর মামু আসলেন; লাইসেন্স দেখে বললেন আর বি িট হবে। র্যানডম ব্রেথ টেস্ট। এই টেস্ট করে নিশ্চিত হয় ড্রাইভার মাল খেয়ে টাল হয়ে গাড়ি চালাচ্ছে কিনা।

যাইহোক বেঁচে গেলাম সে যাত্রা। এ ঘটনার পর যারপরণাই কনফিডেন্স তাল গাছে উঠে গেল। আর এরপরই ঘটলো অঘটন। সেদিন ছিলাম খোশ মেজাজে। মনের সাথে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চলছিল ।

মামু লুকিয়ে ছিল আশেপাশেই। বুঝতে পারি নি। খেলাম ধরা। সাধারণত মামুদের একজন স্পিডোমিটারে রিডিং নেয় আর অন্যজন সামনে ঘাপটি মেরে থাকে। ভিকটিম কিছু বুঝার আগেই সামনের মামু থামতে বলে।

আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না। সামনের মামু আমাকে থামালো। এরূপ স্পিডে গাড়ি চালানোর হেতু জানতে চাইল। আমি আর কি বলব? ভেবে দেখলাম সত্য কথাই বলি, তাতে যদি এই পাষাণ হৃদয়ের মানুষগুলোর বিবেকে যদি কোন সহানুভূতি জাগ্রত হয়। কিন্তু না...ছোটবেলায় আমার মা জননী আমার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বলেছিলেন আমার কষ্টে নাকি কুকুর-বিলাইও কাঁদবে না।

ব্যাপারটা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। মামুদের মন গলাতে পারলাম না। লিগ্যাল লিমিট ছিল 70 কিমি/ঘন্টা। আমার স্পিড ছিল 107 কিমি/ঘন্টা। ফলাফল: 650 ডলার জরিমানা আর লাইসেন্সের 12 পয়েন্টের মধ্যে 5 পয়েন্ট কর্তন।

স্লিপ ধরানোর পর মামু সান্ত্বনা দিলেন এই বলে যে স্পিড লিমিটের থেকে 40 কিমি/ঘন্টা ওভারস্পিডিং করলে লাইসেন্স সাসপেন্ড হয়ে যায় 6 মাসের জন্য। সেদিক থেকে নাকি আমি লাকি। মনে মনে বললাম "এমন লাকের গুষ্টি কিলাই" পুনশ্চঃ এখানে বাংলাদেশি সমপ্রদায়ের অনেকেই মামুদের হাতে ধরা খান। কিন্তু অজানা কারনে সেটা লুকিয়ে রাখেন। আবার কোন এক আজব উপায়ে সবাই সেটা জানেন।

ওপেন সিক্রেট আর কি? আমি যে কয়জন বাংলাদেশীকে একথা বলেছি তারা সবাই ছি ছি করেছেন। আমি মনে মনে বলি "শালা, তুই যখন ফাইন খেয়েছিলি তখন নীতি কি তোর প্যান্টের পকেটে ছিল? "

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।