আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রদলের হুমকিতে পিছু হটলেন ঢাবি উপাচার্য

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

ছাত্রদলের হুমকিতে ছাত্রলীগ নেতৃত্বাধীন সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ থেকে সরে এলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সংগ্রাম পরিষদের লাগাতার ধর্মঘটের কারণে ক্যাম্পাসে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে উপাচার্য ওই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রদল নেতাদের হুমকিতে শেষ পর্যন- তা বাতিল করা হয়। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে 19 নভেম্বর থেকে ক্যাম্পাসে লাগাতার ধর্মঘট চলছে।

উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ ও প্রক্টর অধ্যাপক আকা ফিরোজ আহমদের পদত্যাগ, হলে ও ক্যাম্পাসে সহাবস্থানসহ বিভিন্ন দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটে পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কোন বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না। এমনকি প্রথম বর্ষ অনার্সের ভর্তি পরীক্ষাও হয়নি। অফিসিয়াল কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ ও প্রক্টর অধ্যাপক আকা ফিরোজ আহমদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাত্রলীগসহ সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে যোগাযোগ করেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য ও প্রক্টর হল ক্যাম্পাসকে অস্ত্র এবং বহিরাগত মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। ছাত্রদলের কোন নেতার কাছে এবং কোন রুমে অস্ত্র থাকে তা অতি গোপনে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। চিহ্নিতদের গ্রেফতার করে আনার প্রতিশ্রুতি দেন তারা। যেসব হলে বা রুমে ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীরা থাকতে পারছেন না, সে তালিকা দেয়ার আহ্বান জানান উপাচার্য ও প্রক্টর।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা দেয়া এবং ছাত্রদলকে দেখার আশ্বাস দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে রোববার বিকালে সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হন। কিন' ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসার উদ্যোগে ক্ষিপ্ত হয় ছাত্রদল। ছাত্রদলের সিনিয়র নেতারা উপাচার্যকে নিজ দায়িত্বে ছাত্রলীগসহ সংগ্রাম পরিষদ নেতাদের ক্যাম্পাসে আসতে বলেন।

এমনকি এ নিয়ে রোববার দুপুরে উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে ছাত্রদলের এক শীর্ষ নেতার একাধিকবার মোবাইল ফোনে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ছাত্রদলের দু'জন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, কয়েকজন সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সিনিয়র নেতারা উপাচার্যের ভূমিকাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, বিএনপির টিকিটে উপাচার্য হয়ে এখন নিরপেক্ষ সাজার চেষ্টা করছেন। তারা উপাচার্যকে পদত্যাগী উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর ভাগ্যবরণের জন্য প্রস'ত থাকতে বলেন। ওদিকে ছাত্রলীগ নেতারা জানান, লক্ষাধিক ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীর কথা বিবেচনা করে তারা কতর্ৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে বসার সিদ্ধান- নেন। কিন' উপাচার্য পুরোপুরি ছাত্রদলের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছেন বলে তারা দাবি করেন।

ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক কারও নিরাপত্তা নেই। হলে-ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বহিরাগত অস্ত্রধারীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের বিষয়টি সামনে রেখে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রস'ত। ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগ গুলি ও বোমাবাজি করেছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নেতাদের নামে থানায় মামলাও হয়েছে।

কিন' কতর্ৃপক্ষ তাদের গ্রেফতার করাচ্ছে না। উল্টো পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ বলেন, কে নাখোশ আর কে নাখোশ না, সেটা তার দেখার ব্যাপার নয়। তিনি পরিবেশ পরিষদের সভা ডাকবেন। এজন্য গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.