আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিউইয়র্কে বাড়ছে হেট ক্রাইম, উদ্বিগ্ন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

hello i am মোসটোফা যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি হিসাবে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশির বসবাস। এরমধ্যে নিউইয়র্কেই বাস করছেন প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি। আর এই বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় দিন দিন বেড়ে চলেছে হেট ক্রাইম (জাতিগত হামলা)। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নিউইয়র্কের জাকসন হাইটসে আবারো হেট ক্রাইমের শিকার হল বাংলাদেশি মালিকানাধীন দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হাটবাজার ও ইত্যাদি গ্রোসারি। স্প্যানিশ সন্ত্রাসীদের হামলায় মারাত্মক আহত হয়েছেন হাটবাজারের কর্মচারি মিট কাটার দুলাল এবং আরেক বাংলাদেশি পথচারি সোহাগ।

পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একের পর এক হেট ক্রাইমের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে পুলিশ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটের বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি গ্রোসারির সামনের ফ্রুট স্টুপ থেকে ৭-৮ জনের একদল স্প্যানিশ সন্ত্রাসী ফল নিয়ে ছোড়াছুড়ি করতে থাকে। এসময় গ্রোসারির কর্মচারিরা বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের গালাগাল করে।

এরপরই ওই সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে চলে গিয়ে কাছেই আরেক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হাটবাজার গ্রোসারির সামনে থেকে একইভাবে সাজিয়ে রাখা ফল নিয়ে রাস্তায় ছুড়ে মারতে থাকে। এসময় হাটবাজারের কর্মচারিরা তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের দিকে ফ্রুট স্টুপ ছুড়ে মারে। এসময় সন্ত্রাসীরা হাটবাজারের কর্মচারি দুলালের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। মারাত্মক জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় ক্ষতস্থানে ৮টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাবার সময় সাবওয়ের (পাতাল রেল স্টেশন) কাছে বাংলাদেশি পথচারি সোহাগকে পেয়ে বেধড়ক মারপিট করে। তাকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট ও ব্রডওয়ের কর্ণারে হেট ক্রাইমের শিকার হয় বাংলাদেশি একটি পরিবার। কৃষ্ণাঙ্গ একদল সন্ত্রাসী রাস্তায় হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করে। এ ঘটনায় জাভেদ (২৫) নামে একজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নিউইয়র্ক পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি ইত্তেফাককে জানান, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই এলাকায় দুটি হেট ক্রাইমের ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। তাছাড়া হেট ক্রাইমের প্রতিবাদে কমিউনিটি যখন সোচ্চার তখনই এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবে কাম্য নয়। তিনি জানান, জেবিবিএ এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় বসবে।

তিনি জানান, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রিসিঙ্ক্ট-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে সবার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করবে জেবিবিএ। উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর নিউইয়র্কে ট্রেন স্টেশনে স্প্যানিশ এক নারী ট্রেনের নিচে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করে ভারতীয় বংশোদ্ভুত বাঙালী সুনন্দ সেনকে (৪৬)। এর আগে ২০১০ সালে হেট ক্রাইমের শিকার হন বাংলাদেশি ক্যাব চালক আহমেদ শরীফ। মাইকেল এনরাইট নামে এক যাত্রী তাকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা চালায়।

এসব ঘটনা ছাড়াও নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস ও কুইন্সে একাধিক হেট ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ঘটনা এড়াতে জনসাধারণকে সাবধানে চলার পরামর্শ দিচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বার বার কেন হেট ক্রাইমের শিকার হচ্ছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন জুডিশিয়াল ডেলিগেট ও এটর্নি মঈন চৌধূরী জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অগ্রসরমান অভিবাসী। মুলধারার রাজনীতিসহ ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। এসব কারণে স্প্যানিশ ও কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায় বিষয়গুলো মেনে নিতে পারছেন না।

তাছাড়া ধর্মীয় বিষয় সামনে এনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতীয় বাঙালী সুনন্দ সেনকে মুসলমান ভেবেই ট্রেনের নিচে ধাক্কা মেরে হত্যা করেছে স্প্যানিশ এক নারী। গ্রেপ্তার হবার পর সে পুলিশের কাছে তা স্বীকারও করেছে। এ ধরনের হেট ক্রাইম প্রতিরোধে সতর্ক হওয়া ছাড়াও বাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধ হবার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এটর্নি মঈন চৌধুরী। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.