আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিপস



নরকের দেবদূতরা খুব সমস্যায় আছেন, নিত্য নতুন শাস্তির ব্যবস্থা করতে করতে তাদের আইডিয়া বক্স খালি হয়ে গেছে। কত আর পারা যায়। যে ভাবে নরকের লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে কিছু দিন পর অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। মানুষ খুব বিচিত্র প্রাণী।

একই ধরনের শাস্তি একজনকে বার বার দেয়া হলে পরবতর্ীতে দেখা যাচ্ছে সে ঐ শাস্তিতে অভ্যস্থ হয়ে যাচ্ছে। যতটুকু কষ্ট তার পাওয়া উচিত ততটুকু কষ্ট সে আর পাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ঈশ্বরের কাছে শেষ পর্যন্ত মুখ দেখানোই মুসকিল হয়ে পড়বে। নরকের প্রধান দেবদূত গালে হাত দিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন। 'গুড মর্নিং'- বলে নরকের এক বাসিন্দা এগিয়ে আসে।

'জনাব, আমি কি আপনার কোন উপকারে আসতে পারি? প্রধান দেবদূত মুখ তোলে লোকটাকে পর্যবেক্ষণ করে খেঁকিয়ে উঠেন-'কি চাই?' 'আমি আপনার সমস্যা বুঝতে পারছি, আপনি যদি আমার সাথে একটা চুক্তিতে আসেন তবে আমি আপনার সমস্যার সমাধান করে দিতে পারি। ' দেবদূত প্রধান অবাক হন,'তুমি কে?, আর আমার সমস্যা সম্পর্কেই বা তুমি জানলে কি ভাবে?' 'অন্যের সমস্যায় নাক গলানোই আমার কাজ। আপনার শিস্যদের কাছ থেকে আমি আপনার সমস্যা সম্পর্কে জেনেছি। ' 'তোমার পরিচয়?' 'আমি ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী একটা দেশের প্রেসিডেন্ট, আমার নাম...' 'ব্যস ব্যস আর বলতে হবে না'- দেবদূত হাত উঠিয়ে লোকটাকে থামিয়ে দেন। ' এবার আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি, এ কারণেই তোমার চেহারাটা চেনা চেনা মনে হচ্ছিল।

' 'তোমার মতো কুচক্রি বুদ্ধির লোক আমরা আর দ্বিতীয়টা পাইনি। সত্রাস দমন, গণতত্র প্রতিষ্ঠার নাম করে তুমি অনেক দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছ। বৃদ্ধ-মহিলা এমন কি শিশুদের কেও তুমি রেহাই দাওনি। এক ফোঁটা তেলের জন্যে তুমি হাজার ফোঁটা রক্ত ঝরিয়েছ। তোমার কাজের ফিরিস্তি দিতে গেলে আমার ধারণা খোদ ইবলিশ শয়তানও লজ্জায় মুখ ঢাকবে।

শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলে গোপনে মিত্র দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছ। নরকে সম্ভবত তুমিই একমাত্র লোক যার শাস্তির মেয়াদ কখনই শেষ হবে না। সে যাই হোক তুমি আমার কাছে কি চাও?' 'নরকে বসে বসে আমি একটা বই লিখেছি, সহজ শাস্তির ১০০১ টি টিপস -এটাতে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির উপর টিপস দেয়া আছে। আমি আপনাকে বইটি দিয়ে সাহায্য করতে পারি, বিনিময়ে আমাকে স্বর্গে যাওয়ার পারমিশন দিতে হবে। ' দেবদূত কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলেন ঠিক আছে, 'তুমি আমাকে বইটা দাও আমি দেখি তোমার জন্যে কি করতে পারি।

' লোকটা হাত নেড়ে জানতে চায়- 'তার মানে আপনি আমার চুক্তি গ্রহণ করছেন। ' আগে আমি তোমার বইটা পড়ে দেখি, আর স্বর্গে পাঠানো না পাঠানোর ব্যাপারে আমি একক ভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। পরবতী মিটিং ডাকা পর্যন্ত কয়েকটা দিন তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে। ' কয়েকদিন পর। দেবদূত লোকটাকে তার বই ফেরত দেন-'তোমার আইডিয়া আমাদের পছন্দ হয়নি।

তাই তোমার সাথে আমরা কোন ধরনের চুক্তিতে যাচ্ছি না। আর তোমার সম্পর্কে আমরা যতটুকু জানি, অতীতে তোমার সাথে যে দেশেরই চুক্তি হয়েছে পরবতীতে তারা ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়েছে। অতএব আমরা একই ভুল করতে যাচ্ছি না। ' এর কিছুদিন পর। নরকে শাস্তির মাত্রা ভয়বহ আকার ধারণ করে।

প্রতিদিন নতুন নতুন শাস্তির মাত্রা যোগ হয়। এবার লোকটা সরাসরি নরক প্রধানের কাছে গিয়ে অভিযোগ করে-'আপনাদের এখানকার দেবদূত প্রধান আমার বই থেকে আইডিয়া চুরি করেছেন । আমাকে স্বর্গেতো পাঠাননি উপরন্ত আমার আইডিয়াই আবার আমার উপর প্রয়োগ করছেন । ' নরক প্রধান ম্ল্লান হেসে উত্তর দেন-'এখানে যা কিছুই ঘটে সব আমার র্নিদেশেই হয়ে থাকে। আমি থাকি পর্দার আড়ালে।

তুমি দেবদূত প্রধানের কাছে যে বইটা দিয়ে ছিলে আমরা এরই মধ্যে সেই বইটার অনেকগুলি কপি করে ফেলেছি। এর একটা কপি আমার কাছেও আছে। ' 'ও নো'- লোকটা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে। 'আপনারা তাহলে আমার সাথে চিটিং করেছেন। ' 'এটাও আমরা তোমার বই পড়েই শিখেছি, কি ভাবে বিভিন্ন দেশের সাথে বন্ধুত্ব করতে হয়, আবার চুক্তি ভঙ্গ করে কি ভাবে তাদের সর্বনাশ করতে হয়।

' লোকটা মাথার চুল ছিড়তে শুরু করে- 'ইস আমি এত বুদ্ধিমান লোক হয়ে কিভাবে এত বড় বোকামি করলাম। আমি বন্ধু ভেবে তোমাদের বিশ্বাস করে ছিলাম, আর তোমরাই আমার সাথে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করলে। ' নরকপ্রধান উচ্চ্চ স্বরে হাসতে শুরু করেন-'তুমি সবচেয়ে বড় ভুল কি করেছ জান? তোমার বইয়ের এক কোনে মনের ভুলে লিখে রেখেছ- আর যাকেই বিশ্বাস করো অন্তত আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানকে কখনও বিশ্বাস করো না। আর তোমার জন্যে আমার বিনামূল্যে টিপস হচ্ছে, আর যাকেই বিশ্বাস করো নরকের বাসিন্দাদের কখনই বিশ্বাস করো না। কারণ, বিনা কারণে কাউকে নরকে পাঠানো হয় না।

এখানকার পরিবেশের জন্যে উপযুক্ত লোকদেরকেই এখানে পাঠানো হয়ে থাকে। ' এই বলে নরকপ্রধান বিদায় নেন। নরকে প্রতিদিন নিত্য নতুন শাস্তি পুরোদমে চলতে থাকে। ====0==== যুদ্ধের প্রথম বোমাটা পড়ে হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে। গুড়িয়ে যায় সমস্ত মূল্যবোধ- মানবতা- প্রেম -ভালবাসা ।

- (লেখক এরিক মারিয়া রেমার্ক)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।