আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

... এ তো বড় রঙ্গ জাদু !

পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ

সার্কাসে খেলা দেখতে দেখতে বোর হয়ে গেলে স্টেজে চলে আসে জোকার। দর্শকদের হাসির ফোয়ারায় মাতিয়ে দেয়। নানা রং-তামাশা করে বিনোদন দেয় লোকেদের। সার্কাস দলের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে কিন্তু- ঠিক সময়ে জোকার-কে মঞ্চে নিয়ে আসার ওপর। অর্থাৎ- ঝোঁপ বুঝেই কোপটা মারতে হয়।

----------------------------- ঢাকা-10 এর এম.পি. তখন ডা:ইকবাল। বেশ সু(!)পরিচিত মুখ। একদিন সকালে পত্রিকা খুলে দেখি তার ছবি। হরতালবিরোধী বা ঐরকম কোন একটা মিছিলে তার পাশে দাঁড়িয়ে দু'জন দলীয় ক্যাডার প্রতিপক্ষ মিছিলের উদ্দেশ্যে গুলি ছুঁড়ছে! হৈ হৈ কান্ড! ব্যাপারও রৈ রৈ। বেশ কিছু পত্রিকা সমালোচনা করলো।

সরকার ও বিরোধী দলীয় প্রতিনিধিরা কাদা ছুঁড়ে ও চেটে যার যার ভূমিকা পালন করলেন। ডা: ইকবালের পক্ষ থেকেও বলা হলো, তিনি এসবের কিছুই জানেন না, কখন এসে তার পাশে দাঁড়িয়ে ঐ ক্যাডাররা "পোজ' দিয়েছে আর পত্রিকাওয়ালারা ছবি তুলেছে- তিনি নাকি টের পান নি। সে সময় প্রথম আলোয় কলাম লিখতেন গাফফার চৌধুরি। একুশ শতকের বটতলায়। অনবরত দলীয় প্রচারনা-টাইপ কলামের কারনে বহু আগেই তিনি আরো অনেকের মতই আমার কাছেও শ্রদ্ধার আসন হারিয়েছেন।

ইকবাল-কান্ডের পরেও তিনি কলম ধরলেন। একুশ শতকের বটতলায় লেখা হলো- ছবি সব সময় সত্য কথা বলে না। ঠিক মনে নেই, সম্ভবত ওখানে সরাসরি দাবী করা হয় নি যে ইকবালের ছবিটা সাজানো, কিন্তু বারবার নানা রকম ঘটনা ও পূর্বাপর ইতিহাসের উল্লেখ করা হয়েছিলো- যেসব ক্ষেত্রে ভুল ছবির কাহিনি ঘটেছে। তখনও গাফফার চৌধুরীর মোহ কাটেনি এমন একজন সহপাঠীর সাথে এই নিয়ে বেদম তর্ক হলো। আমি বললাম- এটা নির্লজ্জ সমর্থন।

সহপাঠী বারবার ডিফেন্ড করলো, দ্যাখ - উনি তো একবারো বলেননি এই ছবি ভুল, বলেছেন ছবি ভুল হতেই পারে। আমার কথা ছিলো- ঠিক এই সময়েই এমনটা বলার কারন কি? এই কলামটাই এক মাস আগে বা পরে লেখা হতে পারতো- কিন্তু ইকবাল-কান্ডের পরপরই এরকম কলামের মানে কি হতে পারে? মানে একটাই, জনাব চৌধুরী জানেন যে তাঁর একটা গ্রহনযোগ্যতা আছে, সেটা সুযোগ বুঝে কাজে লাগালেন। একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে পরোক্ষ সমর্থন দিলেন। নিজের ইমেজ কাজে লাগিয়ে এরকম কিছু করা- এটা ভন্ডামি নয়? তবু অবিচল সেই সহপাঠী। শেষমেষ বিরক্ত হয়ে বলেছিলাম, [গাঢ়]ঝোঁপ বুঝে কোপ মারা [/গাঢ়]বুঝিস? না বুঝলে এই বার বুঝে নে! ------------------- ব্লগে ইদানীং নানা রঙ্গ-তামাশা দেখা যাচ্ছে।

গোয়াল কিংবা খামার পলাতক একদল চতুষ্পদ এখানে এসে অশ্রাব্য চিৎকার করছে। এসমস্ত চিৎকার চিরকালই অসহ্য লাগে। রেগে গেলে নিজেও দিয়ে বসি মাঝে মাঝে, তবু- সমর্থন করি না। শুরুতে অনেক বলেছি। এখন আর গা করি না।

আশার কথা হচ্ছে- কয়েকজন এখনো এসবের প্রতিবাদ করছেন। কর্তৃপক্ষকে বলা হচ্ছে বারবার-এসবের প্রতিকারের উপায় বের করতে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- অতি বিবেকবান কেউ কেউ আবার আরো এক কাঠি উপরে গিয়ে সেসবের উৎস সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কে কোথায় কবে শুরু করলো- কে বেশি অবদান রেখেছে- এইসব আর কি! তা হতেই পারে। এরকম মহান দায়িত্ব কাউকে না কাউকে পালন করতেই হয়।

সঠিক সমালোচনা কিংবা প্রতিকারের জন্যে হলেও জানা দরকার আছে প্রত্যেকের অবদান। সবই ঠিক। শুধু ঝামেলা বাঁধিয়েছে সময়জ্ঞান। সময়,আগুপিছু ঘটনা এবং পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করে আমার কেন জানি সেই পুরোনো বাগধারাই মনে পড়ছে বারে বারে, [গাঢ়] ঝোঁপ বুঝে কোপ মারো [/গাঢ়] । --



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।