আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তথ্য অনুসন্ধান ঃ প্লিজ, কিছু তথ্য জেনে নিন

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

আপনাকে কিছু সঠিক তথ্য দিচ্ছি। পারলে একটু আমার অফিসে এসে খোঁজ নেবেন। প্লিজ। আসা যাওয়ার সিএনজি ভাড়াটা আমিই দিয়ে দেবো। সে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।

আপনি যে অফিস এবং যার নাম উচ্চারণ করলেন- আমি সেই অফিসের তিনিই একমাত্র কর্মকতর্া। যার ঢাকাতে এক ছটাক পরিমাণ জায়গা জমি নেই। এমনকি সেই সংস্থা কর্তৃক জমি বরাদ্দের দরখাস্ত চাওয়া সত্ত্বেও জামানতের টাকার অভাবে জমির পাওয়ার সুযোগ থেকে সে বঞ্চিত হয়েছে। শুধু 50,000 টাকার জন্য সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে আবেদন করতে পারেনি। ঢাকা শহরে তার জমিতো দূরের কথা মাথা গুঁজবার কোন ঠাঁই নেই।

বর্তমানে যে ফ্লাটে সে থাকে সেটা সরকারী আবাসস্থল। চাকরি শেষে ছেড়ে দিতে হবে। আবার সেই আগের মতই তাকে ভাড়া বাসায় অথবা রাস্তায় যেয়ে দাঁড়াতে হবে। আপনি যার কথা বলছেন, তার বউ বিয়েসাদী কিংবা অন্য কোন জাঁকজমক অনুষ্ঠানে যেতে ভয় পায়। কারণ তার কোন দামি গয়না সেট বা তেমন কোন দামী শাড়ি কাপড় নেই।

শখ করে ইমিটেশন পরে। তার বাকি সাত বোন সবাই বড়লোক। তাই অনুষ্ঠানে যাবার আগে তাদের কাছে থেকে শাড়ী গয়না ধার করতে হয়। সৌজন্য রক্ষায় তাই নিয়মিত এটাই করে যেতে হচ্ছে। এতে তার বউয়ের কোন খেদ বা আফসোস নেই।

বরং গর্ব করে এই ভেবে যে তার ঘরে কোন অন্যায় বা হারামের পয়সা নেই। ধার করতে হয় মানুষের কাছে। প্রয়োজনে টাকা পয়সা নিতে হয় মানুষের কাছ থেকে। তা অবশ্যই পরিশোধ যোগ্য। সময় মত আবার ফিরিয়ে দেওয়াটা তাদেও কাছে অলিখিত একটা রেওয়াজ।

তবে ভিা করেনা কারও কাছে। ভিক্ষা নিতে তাদের অহংকারে, মর্যাদায় বাঁধে। তার বউ সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে তিনি অধ্যাপক বা প্রিন্সিপাল হয়ে যাবেন কোন কলেজের। একজন ভাল শিক্ষক হিসেবে তার আদর্শ ও জীবন যাপন নিয়ে সেই মানুষ গর্ব করে।

তিনি গর্বিত এমন একজনকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে। যে বিপদে আপদে, সময়ে অসময়ে, সংসারের অভাবের তাড়নায় ছেলেদের লেখাপড়া খরচের জন্য শশুর বাড়ীর গয়না, তার বাবার বাড়ীর গয়না সব এক এক করে বিক্রি করে দিয়েছে। সেই মানুষ আজও তা পূরণ করে দিতে পারেনি। এতে তার বউয়ের কোন দুঃখ নেই। এর চেয়ে বেশী একজন মানুষ আর কিই বা দিতে পারে? গত 30.07.2006 তারিখে সেই মানুষের প্রমোশন হবার কথা ছিল।

হয়নি। তার জুনিয়র এক কর্মকর্তাকে প্রমোশন দেয়া হলো। যে সবদিক থেকে তার চেয়ে জুনিয়র। যে কাজে যোগদান করেছে তার অনেক পরে- যে মেধা, কর্তব্য ও দায়িত্বে তার নখের যোগ্য নয়। সেই ব্যক্তি প্রমোশন পেয়েছে।

সেই মানুষটা মুখ বুঁজে সব মান অপমান সয়ে নিয়েছে। নায্য বিচারের আশায় সে শুধুমাত্র একটা আবেদন পত্র পেশ করেছে। জানে তাতে তার কোন লাভ হবে না। তবুও তার আপোষ করতে ইচ্ছে করে না। তার একটাই অপরাধ সে ঘুষ দিতে পারেনি, তৈল মর্দন করতে পারেনি, তোষামোদ করতে পারেনি।

তারা জানে সেই মানুষ তাদের কোন ঘুষের ভাগ দিতে পারবে না কারণ সে নিজেই ঘুষ খায় না। তাই সে তাদের কাছে সম্পূর্ণ অথর্ব, মূল্যহীন। তার যতই যোগ্যতা থাকুক। তবে কী লাভ বলুন মেধা তালিকায় প্রথম হয়ে? ভাল ছাত্র হয়ে। যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা হয়ে ।

কে করবে এর বিচার। আপনি? পারলে করুন। দোয়া পাবেন এ ব্যপারে নিশ্চিত থাকুন। এবার অনেক তথ্য দিলাম আপনাকে মিঃ তথ্য অনুসন্ধানী। আমার জন্য একটু কিছু করুন।

কিছু কথা শুনুন। হ্যাঁ আপনার কাছেই সাহায্য চাইছি। আপনিতো আমাকে চেনেন। নির্ভয়ে একটু এগিয়ে আসুন। আপনি কি জানেন আমার ছেলে ভাসির্টির ফী ঠিক মত দিতে পারবে না বলে নর্থ সাউথ ইউনি থেকে মুখ নীচু করে ফিরে এসেছে।

অন্য এক কম খরচের কলেজে ভর্তি হয়েছে। ওকে ওর সম্মানটা পারলে ফিরিয়ে দিন। নতুবা আমাকে অথর্ব বলে গালি গালাজ করুন। কারণ আমি একজন অপদার্থ পিতা। আপনি আমাকে অভিশম্পাত করুন।

আচ্ছা আপনি কি বাজার থেকে দুটো লিচ-ু হ্যাঁ শুধু মাত্র দুটো লিচু কিনেছেন কখনও? নিজের ছেলেকে কিনে খাইয়েছেন কখনও? আমি একদিন দুটোর বেশী লিচু কিনে খাওয়াতে পারিনি। তাও আমার বউ কিনেছিল। ছেলেকে নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে ছেলের লিচু খেতে শখ হয়েছিল। ছেলে মায়ের মুখের দিয়ে চেয়ে বলেছিল, "আম্মু ওরা কি দুটো লিচু বিক্রি করে"? আমার বউ দুই ছেলের হাতে দু'টাকা দিয়ে দুটো লিচু কিনে দিয়েছিল। দোকানদার অবাক চোখে হা করে তাকিয়েছিল।

নাহ্। তবুও সে কারো কাছে ভিক্ষা করেনি। বিকেলে নাস্তা খাবে দুই ছেলে- হাতে মাত্র দুটাকা। বিস্কিট কিনতে যেয়ে আমার বড় ছেলে মুড়ি কিনে এনেছে। কারণ দু'টাকার মুড়ি সবাই খেতে পারবে।

আমার 4/5 বছরের বাচ্চাও বুঝতো অভাবে পরলে কী করতে হয়। অথচ আমার শশুরের কোটি টাকার বিষয় সম্পদ। আমার বউ একবারের জন্যেও হাত পাতেনি। কারণ আমি। আমাকে সে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল।

তাই আমার জন্য মা বাবার কাছে কখনও ছোট হতে পারেনি। কিছুতেই পারেনি। অথচ বউয়ের জন্য আমি কিছুই করতে পারিনি। তাকে কিছুই দিতে পারিনি। সে শুধু আমাকেই অকাতরে দিয়ে গেছে তার সবকিছু।

আমাকে ভিক্ষা করতে দেয়নি। সে শুধু আমার কাছেই ভিক্ষা চাইতো- এতোটুকু ভালবাসা। বলুন আমি কি না দিয়ে পারি ? মিঃ তথ্য অনুসন্ধান। আপনাকে আমি কি দিতে পারি বলুন ? আপনিতো আমার কেউ নন। তবুও আমি আপনার শত্রু।

তবে শত্রু হয়েও আপনাকে কিছু দিতে পারি। নেবেন ? দিতে পারি। আমার খুব প্রিয় কিছু। তা হলো ভালবাসা। আপনি চাইলে তাও দিয়ে দিতে পারি।

আপনি আমাকে চিনেন না। বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি। আপনি সত্যিই আমাকে চেনেন কি না। কারণ মানুষ চেনার চোখ আল্লাহ্ আপনাকে দেননি। দিলে দেখতে পেতেন আপনার চার পাশে কত ভাল মানুষ রয়েছে।

ভাল থাকুন। ভাল থাকতে শিখুন। ভাল ভাবতে শিখুন। যদি সত্যিই মানুষের রক্ত আপনার শরীরে থাকে তবে মানুষের মতই থাকতে শিখুন। ধন্যবাদ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.