আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরবাসী যাযাবর জীবন : 1 :: ব্রুনসপার্কে বনভোজন

যদি নির্বাসন দাও.................................................................. আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো আমি বিষ পান করে মরে যাবো! বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ, প্রান্তরে দিগন্ত নির্নিমেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত তুমি।

সকাল সকাল আমরা রওনা দিলাম [গাঢ়] রনেবি ব্রুনসপার্কের [/গাঢ়]উদ্দেশ্যে। আমরা মানে আটজনের একটা গ্রুপ। সবাই বাংলাদেশী। আরেকজন আমাদের সাথে যোগ দিবেন রনেবি'তেই- তিনি নিপন ভাই- সেখানেই থাকেন।

আমাদের যাত্রাস্থল থেকে গন্তব্যে পৌঁছুতে সময় লাগবে প্রায় এক ঘন্টা। প্ল্যান হলো প্রথমে পার্কটায় একটু চক্কর দেয়া। দুপুরে ভুড়িভোজন। আর বিকেলে আবার পুরো পার্কটা পরিদর্শন। আমাদের পরিকল্পনানুযায়ী যথাযথ সময়ে আমরা পৌঁছে গেলাম [গাঢ়]রনেবি ব্রুনসপার্কে[/গাঢ়] ।

শুরু হলো পথচলা। বেশ কিছুটা পথ হেঁটে পার্কে যেতে হয়। পার্কের প্রবেশ পথে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড মার্কেট। সামারের সময় শুধু এই মার্কেটটা বসে তাও কয়েকদিনের জন্য। রকমারি জিনিসে ভরে ওঠে মার্কেট আর প্রচুর লোকের সমাগম হয় এ উপলক্ষ্যে।

অনেকটা আমাদের দেশের বিজয় মেলার মতো তবে তফাৎ হলো স্টলগুলো সব ওপেন, কোন ছাউনি নেই। আমরা মার্কেটে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জিনিস পত্তর দেখতে লাগলাম। নিপন ভাই এসে পৌঁছালে আমাদের অ্যাডভেঞ্চার শুরু হলো। সেই মজার দিনটির মজার কিছু ঘটনার কথাই বলবো। 1. ছোট একটা পাহাড় পেরিয়ে আমরা একটা সমতল জায়গায় এসে পড়লাম।

দু'পাশে ঘন সবুজ বনের বুক চিরে চলে গেছে একটা মেঠো পথ। পাতার ফাঁকে ফাঁকে সূর্যের আলো ঠিকরে পড়ছে পথে। আমাদের সহযাত্রী সাইদুল ভাইয়া গলা খুলে (হাতে নেয় নাই কিন্তু) গাইতে শুরু করেন- "আমার গায়ে যত দু:খ সয়। বন্ধুয়ারে কর তোমার মনে যাহা লয়। " এ পর্যন্ত গাইলে সব ঠিক ছিল কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো পরের প্যারায় গিয়ে।

সাঈদুল ভাই তখন হেভি মুডে। দরাজ গলায় গেয়ে চলেছেন, সাক্ষী রইলো চন্দ্র-সুরুজ, সাক্ষী লতাপাতা.....। নিপন ভাই সাথে সাথে ফাল (লাফ কিন্তু সেটাকে ফাল বলাই সঙ্গত মনে হয়) দিয়ে উঠলেন। 'ওই মিয়া গান গাইতাছেন ভালো কথা কিন্তু তাই বইলা আমার ফ্যামিলি লইয়া টানাটানি করেন ক্যান?' আমরাও একটু টাস্কি খাই। জিগাই- আপনার ফ্যামিলি লইয়া টান দিলো ক্যামনে? নিপন ভাই মুচকি হেসে বলেন, 'আরে আমার বউয়ের নাম লতা, আর শালীর নাম পাতা।

ওই মিয়া গান ধরছে সাক্ষী লতাপাতা। এইটা ফ্যামিলি লইয়া টানাটানি না?' দাদা (হিন্দোলদা এখানে সবাই দাদা বলেই ডাকে উনাকে) পাশ থেকে বলে ওঠেন, শালার নাম কি গুল্ম? আর আমি আফসোস করি- নিপণ ভাই, আপনার শালী আছে আগে বলবেন না? 2. ব্রুনসপার্কের মধ্যবতর্ী একটা অংশের নাম জাপানিস পার্ক। কেন এ নামকরণ তা আমরা জানি না। জাপানিস পার্কে ঢুকে একটু এগুলেই বড় একটা পাথর চোখে পড়ে। ইমরান ভাই বললেন, আমি পাথরটা জড়িয়ে ধরে একটা ছবি তুলবো।

আমি বললাম, ওকে। ছবি তোলা হলে নিপণ ভাই বলেন, আপনি যে পাথরটা জড়ায় ধরে ছবি তুললেন ঐটা আসলে কি জানেন? ইমরান ভাই জিজ্ঞেস করেন, কি? নিপণ ভাই হেসে বলেন ওটা একটা শিবলিঙ্গ। আপনি শেষে লিঙ্গ জড়ায় ধইরা ছবি তুললেন? আমাদের তো হাসিতে পেটে খিল ধরে যাওয়ার জোগাড়। হাসি একটু থিতিয়ে এলে ইমরান ভাই প্রশ্ন করেন, আচ্ছা বস- এই জায়গাটাতে কি আগে পানি ছিলো? নিপন ভাইয়ের উত্তর, 'পানি ছিলো মানে? মাছ পর্যন্ত ধরছি। ' না না, হেঁয়ালি না বস, সত্যি বলেন।

'ভাই পানি ছিল না ওই লিঙ্গটার হিসু ছিল তা জানি না তবে উইন্টারে গাদা গাদা বরফ দেখছি। ' আমি বলি, আর আপনি বরফের নীচ থেকে তখন বর্শি দিয়ে তিমি ধরেছিলেন। তাই না? নিপণ ভাই বিজ্ঞ হাসি দিয়ে বলেন- এই তো তুমি লাইনে এসে গেছ। আরো অনেক মজার কাহিনি আছে। সেসব আরেকদিন।

পাবলিক বড় পোস্ট পড়তে চায় না। অল্পতে বিলা করে!!!!! ** নীচে সেই পাথরটার ছবি

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।