আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাজে গল্প

পচা কথা বলি। আবালেরা অফ যাও।

আইজুদ্দিন সাহেবের কী দুর্মতি হয়েছিলো, বেশ কয়েক বছর বিপত্নীক জীবন কাটিয়ে শেষে প্রৌঢ়ত্বের ধূসর এলাকা টপকে গিয়ে বিয়ে করলেন বেশ রগরগে এক তরুণীকে। রগরগে বিশেষণটি গল্পকাহিনীর আগে বসালে শুনতে ভালো লাগে (বিশেষণ আর কাহিনী দুটিই), কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে কিশোরী-তরুণী-যুবতীরাও রগরগে হয়ে উঠতে পারে বইকি। যারা আবারও জিজ্ঞেস করবেন, কিভাবে পারে, তাঁদের বলি, শিরোনাম দেখুন।

আইজুদ্দিন প্রথম স্ত্রীর ইন্তেকালের কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে করতে পারতেন। সবাই তাঁকে সেরকম পরামর্শই দিয়েছিলো। আইজুদ্দিন অন্যের কথা কানে নিতে চান না, নিজের বিচার বিবেচনায় চলেন। তাই দীর্ঘদিন একাকী সংবৃত জীবনযাপনের পর ঐ ধূসর এলাকা টপকে এসে তিনি অসংবৃত হবার পণ করলেন, এবং আলোচ্য রগরগে স্ত্রীকে ঘরে তুললেন। কয়েক মাস বেশ ফূর্তিতে কাটলো আইজুদ্দিনের।

এরপর একদিন ব্যবসার কাজে চিটাগাং গিয়েছিলেন, ঢাকায় ফিরে আসতেই এক নিন্দুক প্রতিবেশী দাঁত কেলিয়ে বললো, আইজুদ্দিন সাহেব দেখি ঢাকার বাইরে গেলে ঘরে অস্থায়ী আইজুদ্দিন রেখে যান! আইজুদ্দিন বুঝতে পারেন না, ব্যাপার কী? প্রতিবেশী ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দ্যান, মহল্লার আরেক ছোকরা, জিমি সরকার, এই দুদিন তাঁর বাড়িতে রাত্রিযাপন করেছে। আইজুদ্দিন চটে ওঠেন। ককখনো এইসব হতে পারে না, বলেন তিনি। তাঁর বউ রগরগে হলেও চরিত্রবতী (!), সে মোটেও ঐ রকম নয়। কিন্তু পড়শীরা শুধু হাসে।

এরপর আবারও ব্যবসার কাজে আইজুদ্দিনকে যেতে হয় খুলনায়। ফিরে এসে আবারও অস্থায়ী আইজুদ্দিন, সেই জিমি সরকারের কীর্তিকাহিনী শুনতে হয় তাঁকে পড়শীদের মুখে। সেদিন নাকি জিমি তাঁরই একটি লুঙ্গি পরে বাজার করে এনেছে। আইজুদ্দিন গালাগালি করে পড়মীদের হাঁকিয়ে দ্যান। কিন্তু ব্যবসা তো আর থেমে থাকে না।

তাঁকে যেতে হয় কলকাতা, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক। রগরগে বউটাকে সেখানে সাথে করে নিয়ে যেতে চাইলেও সম্ভব হয় না। আর কী আশ্চর্য, বউটারও তেমন গরজ নেই তাঁর সাথে যাবার। আইজুদ্দিন ঘুরে ফিরে আসেন, বীচে হাফপ্যান্ট পরা শ্বেতাঙ্গিনী, ড্যানস ক্লাবে মঙ্গোলয়েড নগি্নকা, ইত্যাদি দেখে উত্তেজিত হয়ে ঘরে ফেরেন। কিন্তু পড়শীরা সব স্পয়েলস্পোর্ট, তাঁর আবেগে ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়ে জিমি সরকারের কান্ডকারখানা বয়ান করতে থাকে, জিমি নাকি সেদিন তাঁর বউকে কোলে নিয়ে বারান্দায় বসে সিগারেট খেয়েছে, একসাথে সিনেমা দেখে এসে হাওয়াইমিঠাই খেতে খেতে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করেছে, এইসব।

আইজুদ্দিন প্রচন্ড ক্ষেপে ওঠেন পড়শীদের ওপর। যত্তোসব নোংরা মনের লোকজন। কিন্তু একদিন তিনি গ্যাসের বিল দিয়ে এসে ঘরে ফিরলে দরজা খুলে দেয় ... জিমি সরকার! আইজুদ্দিন হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন। জিমির পরনে তাঁরই একটা হাফপ্যান্ট, তাঁরই একটা সাদা গেঞ্জি। ওগুলো ব্যাংকক থেকে কেনা।

জিমি সরকার গলা খাঁকরায়। বলে, দেখুন, আমি বেশ কিছুদিন অস্থায়ী আইজুদ্দিনগিরি করেছি। কাজটা আমার ভালোই লেগেছে। আপনার স্ত্রীও আপত্তি করেননি। আপনার আপত্তি থাকলে আমার বালছাল কিছুই এসে যায় না।

আমার নাম জিমি সরকার! দেখুক লোকে, বলুক লোকে, আমি করি আমার যা মন চায়! তো. যা বলছিলাম, এখন থেকে আমি আপনার বাসাতেই থাকবো। আপনি যেমন আছেন তেমনই থাকুন, আমাকে আমার কাজ করে যেতে দিলেই হবে। ট্যাঁ ফোঁ করবেন তো পেঁদিয়ে খাল তুলে নেয়া হবে। আইজুদ্দিন কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ঘরের ভেতরে পা রাখেন। পড়শীরা এটা নিয়ে অনেক কথা বলে।

একই বাড়িতে একটা আইজুদ্দিনের পাশাপাশি আরেকটা অস্থায়ী আউজুদ্দিন? এটা কেমন কথা? এ কেমন ব্যাভার? এক ঘর মে দো পীর? আইজুদ্দিনের রগরগে বৌটার বক্তব্য কী, সেটা কিন্তু কেউ জানতেও চায় না।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।