আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সত্যিই কি গুজরাট দেশের মডেল? মোদি উন্নয়নের প্রতিক? কেন এই মিথ্যাচার ?

সবাইকে আমার নিজস্ব ব্লগ ভিজিট করার আমন্ত্রন রইলঃ www.islameraalo.wordpress.com

উন্নয়নের প্রতিক, দেশের অরিজিন্যাল মর্দ, মোদি লাও দেশ বাচাও আরো অনেক স্লোগানে স্যোসাল সাইট গুলো ভরে গেছে। শুধু ফেসবুক, টুইটার নয় দেশের বেশ কিছু মিডিয়া ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মোদির হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। মোদি প্রধানমন্ত্রী হলেই নাকি দেশের সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। দেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। মোদির ব্যাপারে যে সব প্রচার করা হয় তার অনেকটাই মিথ্যা।

প্রচলিত আছে যে, একটা মিথ্যাকে বারবার বললে তা সত্য অয়ে যায়। কিছু লোক বারবার মোদিকে উন্নয়নের প্রতিক বলে সত্যি সত্যিই তাকে হিরো বানিয়ে দিয়েছে। অথচ, সত্য সম্পুর্ণ আলাদা। ✰ গুজরাট কোন কৃষিপ্রধান রাজ্য নয়। এখানকার জমি উর্বর নয় তাই প্রথম থেকেই এখানে শিল্প গড়ে উঠেছে।

যেমন মহারাষ্ট্রে অনেক শিল্প গড়ে উঠেছে। নিতিশ কুমার যেমন বিহারকে দেশের সব থেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্য থেকে তুলে এনেছে তেমন কি মোদি গুজরাটকে করেছে? জ্বী নাহ! গুজরাট আগে থেকেই উন্নত ছিল। এখানে মোদি কিছুই করেনি। মোদির জায়গায় অন্য কেউ হলেও গুজরাট আজ যেখানে আছে সেখানেই থাকত। মানে শুধুই প্রপাগান্ডা! ✰ গুজরাট দেশের ১৪ তম উন্নত রাজ্য।

মানে গুজরাটের সামনে আরো ১৩ টি রাজ্য আছে। এই ১৩ টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উন্নয়নের প্রতিক বলা হয়না কিন্তু মোদিকে বলা হয়। কেন? শুধুই প্রপাগান্ডা! ✰ গুজরাটে ধনী যেমন আছে তেমনি ধনী গরীবের তফাতটাও অনেক। ৩২ % লোক দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে গুজরাটে। যা অনেক রাজ্যের থেকে খারাপ।

তারপরেও কেন গুজরাট দেশের মডেল রাজ্য? শুধুই প্রপাগান্ডা! ✰ দেশের সবথেকে শিক্ষিত রাজ্য কেরালা তারপর ত্রিপুরা। এই সব রাজ্যে ৯৮%+ শিক্ষিত। গুজরাট নয়। তবে কেন মোদি আসলেই দেশ শিক্ষিত হয়ে যাবে? কেরালা বা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এলে বা বামফ্রন্ট এলে কেন শিক্ষিত হবেনা? শুধুই প্রপাগান্ডা! ✰ গুজরাটের উন্নয়নের জন্য মোদি মিটিং গুজরাটে না করে গোয়াতে করেন। ফাইভ স্টার হোটেলে।

এতে ফালতু খরচ হয় প্রচুর। তারপরেও মোদিই স্টার? শুধুই প্রপাগান্ডা! ✰ কিছুদিন আগে মোদি তার সুরুক্ষার জন্য ১১৮ জন এন.এস.জি জাওয়ান রেখেছেন। এই ১১৮ জনের বেতন কত হবে ভাবতে পারেন? কমপক্ষে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা মাসিক। মানে ৫০০ টি পরিবারকে পোষা যাবে। যে রাজ্যে ৩২% গরীব, দুবেলা খাবার জুটেনা সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা এভাবেই উড়িয়ে দেন।

তারপরেও তিনিই হিরো। শুধুই প্রপাগান্ডা! এবার আসি মোদির কথায়। মোদির দু-হাতে লেগে আছে খুন। তিনি এমন একজন লোক যিনি প্রচন্ডভাবে মুসলিম, খৃষ্টান এবং আদিবাসী বিদ্বেষী। গুজরাটে এই তিন সম্প্রদায়ই ভয়ে, অত্যাচারে, নির্যাতিত হয়ে আছেন।

☛ মোদি গুজরাটের ২০০১ সালের দাঙ্গায় পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছেন। তিই পুলিশকে নির্দেশ দেন কোন এক্সান না নেবার। ☛ যারা গুজরাট দাঙ্গায় মুখ্য ভুমিকা নেন তাদের বেশিরভাগই মোদি ঘনিষ্ট ছিলেন। এদের কয়েক জন জেলেও আছেন। ☛ তিনি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে একের পর এক ভুয়া এনকাউন্টার করিয়েছেন।

যেমন, সমীর খান, ইসরাত জাহান, সোরাবুদ্দিন, তুলসী প্রজাপতি। এই ভুয়া এনকাউন্টারে জড়িত ১০-১২ জন আই.পি.এস অফিসার, পুলিশ, ডিজি জেলে আছেন। এদের মধ্যে একজন বানজারা। যিনি মোদির খুব কাছের লোক। কিছু দিন আগে জেল থেকে লেখা একটা চিঠিতে মোদির অনেক তথ্য ফাঁস করেছেন।

☛ মোদি এমন একজন ব্যক্তি যাকে আমেরিকা ভিসা দেয়না এই বলে যে তিনি একজন সাম্প্রয়িক ব্যক্তি। একজন দাঙ্গাকারী। এমন লোক প্রধানমন্ত্রী হলে সারা বিশ্বে ভারতের কি সুনাম হবে? ☛ সমাজসেবী, বুদ্ধিজীবি, লেখক, মানবাধিকার সংগঠন কর্মী বেশির ভাগই তো মোদি বিরোধী। যদি কোন দেশের সমাজসেবী, বুদ্ধিজীবি, লেখক, মানবাধিকার সংগঠন কর্মীরা কাউকে ঘৃণা করে অথচ সে প্রধানমন্ত্রী হয় তবে সেটা কতটা লজ্জার তা ভাবা যায়না! ☛ মোদিকে নিয়ে তো লেখায় শেষ হবেনা। উনি এমন জঘন্য লোক।

তার সম্পর্কে লেখক ও সাংবাদিক দীপাঞ্জন রায় লিখেছেন - 'সম্রাট-নবাব-বাদশাদের জমানা পেড়িয়ে ব্রিটিশ শাসন এবং পরবর্তীকালে স্বাধীন ভারতেও এতো নৃশংস প্রশাসক কতজন ছিলেন তার তালিকা তৈরি করলে সম্ভবত শীর্ষেই থাকবেন নরেন্দ্র মোদি'। মোদিকে নিয়ে প্রোপগান্ডা কেন এর উত্তর দিয়েছেন ইতিহাসবিদ তপন রায়চৌধুরী। তিনি বলেছেন - "উন্নয়নের জন্য নয়, মুসলিম-বিদ্বেষের কারণেই হিন্দুরা মোদীকে ত্রাতা মনে করে। ” আসলেই এটা সত্যি। মোদিকে যারা সাপোর্ট করে তারা মুসলিম বিদ্বেষী।

তার গণতন্ত্রী নয়, উদার নয়, ধর্মনিরপেক্ষ নয়। তারা সাম্প্রদায়িক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।