আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেঁসে যাচ্ছেন জাহিদ-জিমি

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফুটবলে ও এশিয়াকাপে হকির ব্যর্থতার তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অতীতে দায়িত্বহীনতার পরিচয় মিললেও এবারে দুই কমিটি দ্রুত কাজ শেষ করছে। কমিটি গঠনের পর থেকে তারা বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দায়িত্ব শুরু করেন। লোক দেখানো তদন্ত চলেছে এ অভিযোগও তোলার উপায় নেই। কারণ যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা প্রতিদিনই মিডিয়ার সামনে মুখোমুখি হচ্ছেন।

এ জন্য দুই কমিটিই ধন্যবাদ পেতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তদন্তে কি এমন কিছু পাওয়া যাবে যা ব্যর্থতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। দুই কমিটি স্পষ্টভাবেই বলেছে তদন্ত মানে কারও বিরুদ্ধে শাস্তি বা ব্যবস্থা নেওয়া না। আমাদের লক্ষ্য থাকবে কারণ বের করে সামনের জন্য সতর্ক হয়ে যাওয়া। মুখে তারা এ কথা বললেও তদন্তের মাধ্যমে কেউ দোষী কিনা তাও বের করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

ফুটবলে কোচ থেকে শুরু করে দলের বেশ কজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখানে ইনজুরিও দুর্ভাগ্যকে ব্যর্থতার প্রধান কারণ বলে চিহ্নিত করা হলেও কোনো খেলোয়াড়ের দায়িত্বহীনতা এমনকি আচরণ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে।

এক্ষেত্রে জাহিদ জামানের নামই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর কোচ ক্রুইফ সরাসরি যার বিরুদ্ধে পা বাঁচিয়ে খেলার অভিযোগ আনেন। মাঠে ও বাইরে জাহিদের আচরণ নিয়েও সন্তুষ্ট ছিলেন না ক্রুইফ।

কোচের অভিযোগ জানতে জাহিদকে তদন্ত কমিটি তলব করলেও তিনি সাড়া দিচ্ছেলেন না। অবশেষে সোমবার বাফুফে ভবনে হাজির হলেও সময়মতো না আসাতে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে পারেননি। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য ছিল জ্বরে আক্রান্ত হওয়াতে তিনি দেশের বাড়ি টাঙ্গাইলে অবস্থান করছিলেন। নেটওয়ার্কে ঝামেলা থাকায় সময়মতো তদন্ত কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। জাহিদের এ বক্তব্য কতটুকু সত্য তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

কারণ বিদেশ থেকে সেকেন্ডের মধ্যে মোবাইলে কথা বলা গেলেও টাঙ্গাইল থেকে কোনোভাবে যোগাযোগ করা যায়নি তা তদন্ত কমিটির কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। তাদের ধারণা ইচ্ছা করেই জাহিদ আত্দগোপন করেছিলেন।

কমিটির সামনে সময়মতো মুখোমুখি হতে পারেননি। অথচ বাইরে মিডিয়ার কাছে যতটুকু বক্তব্য দেন তা কোচ ক্রুইফের বিরুদ্ধে। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, কোচের কারণে নিজের খেলাটা খেলতে পারেননি।

তিনি এটাও বলেন, ক্রুইফ তাকে সারাক্ষণই মানসিক অস্থিরতার মধ্যে রাখেন। জাহিদের এসব বক্তব্য তদন্তে রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে না। তবে সময়মতো না এসেও বাইরে তিনি কোচের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে কমিটি রিপোর্টে শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগ আনতে পারেন। শুধু ক্রুইফ নন জানা গেছে কমিটির আরও অনেকে জাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। এসব অভিযোগ রিপোর্টে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হবে।

কথা হচ্ছে এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা? তদন্ত কমিটি কাজ রিপোর্টে জমা দেওয়া, জাহিদরা কাউকে শাস্তি দেওয়া হবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেবে বাফুফের নির্বাহী কমিটি। জানা গেছে, জাহিদের বিরুদ্ধে কমিটি যে ধরনের রিপোর্ট তৈরি করছেন তাতে করে তাকে কিছুদিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

শুধু তাই নয় আরও কজন খেলোয়াড়কে শেষবারের মতো সতর্ক করে দেওয়া হবে। তদন্ত রিপোর্টে ফিজিও ইয়ামালির দায়িত্ব পালন নিয়েও অভিযোগ দিতে পারে। আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ তো গেল ফুটবলের কথা। এশিয়াকাপ হকিতে ব্যর্থতার পেছনে তদন্ত কমিটি কী কারণ খুঁজে পেয়েছে? আজই তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও জানা গেছে এক্ষেত্রে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে কমিটি ব্যর্থতার মূল কারণ খুঁজে পেয়েছে বলে নামপ্রকাশ না করা শর্তে একজন উল্লেখ করেছে। কোচ নাভিদ আলম কিছুদিন আগে ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমত উল্লাহর কাছে যে রিপোর্ট জমা দেন সেখানে তিনি দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তারকা রাসেল খান জিমির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ধরেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, জিমিকে ঘিরে দলের সবচেয়ে আশা ছিল মাঠে কিনা তারই ভূমিকা ছিল রহস্যজনক।

এ ছাড়া তদন্ত কমিটির কাছে বেশ কজন খেলোয়াড়ও জিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। একজন খেলোয়াড় বলেছেন, জিমি নিজে যেমন খেলেননি, তেমনি সতীর্থদেরও মাঠে মনোযোগ নষ্ট করেছেন। তদন্ত কমিটির সামনে জিমিও মুখোমুখি হয়েছিলেন, সেখানে তিনি বলেন, কোচ তাকে বিভিন্ন পজিশনে খেলানোতে নিজেকে ঠিকমতো তুলে ধরতে পারেননি। তদন্ত কমিটি জিমির এ বক্তব্যসহ তার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ তুলেছেন রিপোর্টে তা উল্লেখ থাকবে। তদন্ত কমিটির কেউ মুখ না খুললেও জানা গেছে, জিমির বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ এসেছে তাতে তার শাস্তি অনিবার্য।

এখন তাকে শাস্তি দেওয়া হবে কি হবে না তার নির্ভর করবে ফেডারেশনের ওপর।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.