আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সত্যি কি ফেঁসে যাবেন ব্যারোনেস পলা উদ্দিন !



না, খবরটা মোটেই সুখকর নয়। বৃটিশ লর্ড সভার সদস্য ব্যারোনেস পলা উদ্দিন ফেঁসে যাচ্ছেন দুর্নীতির অভিযোগে। বৃটেনে বাঙালির গর্বের প্রতীক ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এখন এন্তার অভিযোগ ! বৃটিশ মেইন স্ট্রীমের কাগজে রিপোর্ট ছাপা হবার পর শুরু হয় তোলপাড়। চলছে বিভিন্ন বিভাগীয় তদন্ত ।

এই রিপোর্ট টি পড়ুন ........ দৈনিক মানব জমিন / ২৯ জুন ২০০৯ সোমবার ফেঁসে গেছেন মনজিলা পলা স্টাফ রিপোর্টার: ব্যারোনেস উদ্দিন। পুরো নাম মনজিলা পলা উদ্দিন। বৃটিশ লেবার পার্টির রাজনীতিক। সমাজকর্মী। বৃটেনের রাজনীতিতে বাংলাদেশের এক গর্বিত নারী প্রতিনিধি।

অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পিয়ার হিসেবে অধিষ্ঠিত প্রথম মুসলিম নারী। ১৯৯৮ সালে টনি ব্লেয়ারের উদ্যোগে ওই মর্যাদায় অভিষিক্ত হন তিনি। কিন্তু এখন দুর্নীতির অভিযোগে ধূলায় মিশে যেতে বসেছে তা। সরকারি তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমপিরা যে সব অনিয়ম করেছেন তা তদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৃটিশ পুলিশ। বাসভবনের ভুয়া মর্গেজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এর মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে দু’জন এমপির বিরুদ্ধে।

একই সঙ্গে তদন্তাধীন রয়েছে ব্যারোনেস উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অনিয়মের অভিযোগও। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বসবাস না করা সত্ত্বেও একটি বাড়িকে প্রধান বাসভবন দেখিয়ে তিনি এক লাখ পাউন্ডের সংসদীয় ভাতা তুলেছেন। এ অভিযোগে এখন ফেঁসে যেতে বসেছেন তিনি। ব্যারোনেস উদ্দিনের জন্ম রাজশাহীর এক গ্রামে। ১৪ বছর বয়সে পিতামাতার সঙ্গে বৃটেনে তিনি যান ১৯৭৩ সালে।

বড় হয়েছেন লন্ডনের ইস্ট এন্ড-এ। ইস্ট হ্যাম-এর প্ল্যাশেট স্কুলে ও ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডনে পড়েছেন। ডিপ্লোমা নিয়েছেন সমাজকর্মে। তার স্বামী কমর উদ্দিন। বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।

তাদের চার পুত্র এবং এক কন্যা। সপরিবারে তারা থাকেন টাওয়ার হ্যামলেটস বরা’র ওয়াপিং-এর এক বাসায়। ব্যারোনেস উদ্দিনের দাবি, কেণ্ট-এর মেইডস্টোনেও বসবাস করেন তারা। সেখানকার বাড়িকে প্রধান বাসভবন দেখিয়ে তিনি ২০০৫ সাল থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার পাউন্ড করমুক্ত ভাতা নিয়েছেন। এ কারণে দ্বিতীয় বাসস্থান ভাতারও দাবিদার হন তিনি।

এ ভাতা তার লন্ডনে আবাসনের ওপর। অথচ লন্ডনের বাইরে থাকা রাজনীতিকদের পার্লামেন্টের কাছাকাছি থাকার জন্যই ওই ভাতা। মেইডস্টোন-এর ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা বলেন, ফ্ল্যাটটি কেনার পর সেখানে কোনদিন ব্যারোনেস উদ্দিনকে তো নয়ই তার পরিবারের কাউকে তারা থাকতে দেখেন নি। ফ্ল্যাটটিতে কোন আসবাবপত্র নেই। বসবাসের উপযোগী কোন ব্যবস্থাও নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে ব্যারোনেস উদ্দিনের স্বামী কমর উদ্দিন কেণ্ট-এ তাদের সম্পত্তি থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে তারা ভোট দিচ্ছেন লন্ডনের ঠিকানা থেকে। তাদের ফেসবুক পরিচয়-তথ্যেও উল্লেখ আছে ৩০ বছর ধরে লন্ডনের ইস্ট এন্ড-এ থাকার কথা। ২০০৭-০৮ সালে আবাসন বাবদ ব্যারোনেস উদ্দিন ভাতা তুলেছেন ২৯,৬৭৫ পাউন্ড। অথচ তখন সর্বোচ্চ ভাতা ছিল দৈনিক ১৬৫ পাউন্ড মাত্র।

তিনি ওই ভাতা নিয়েছেন সর্বোচ্চ সম্ভাব্য হিসেবে নির্ধারিত ১৭৯ দিনের জন্য। অথচ ওই বছর লর্ড সভা অতদিন বসেই নি অধিবেশনে। ২০০১ সালের পর থেকে লন্ডনে বাইরে থাকার কারণ দেখিয়ে তিনি অতিরিক্ত তুলেছেন ৮৩ হাজার পাউন্ড। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ২০০১-০৫ সালে তার প্রধান বাসভবন সম্পর্কে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি ব্যারোনেস উদ্দিন। এছাড়া লর্ড সভার সদস্যদের মধ্যে তিনিই তুলেছেন সর্বোচ্চ নৈশ ভাতা।

ওয়াপিং-এ ব্যারোনেস উদ্দিনের ভোটার ঠিকানার বাসাটি এক আবাসন সমিতির সম্পত্তি। এ সমিতি ২০০৮ সালে সরকার থেকে ভর্তুকি পেয়েছে তিন কোটি ৭৮ লাখ পাউন্ড। সেখানে বাসাগুলোর সাপ্তাহিক ভাড়া ১০৪ পাউন্ড, যা বাজারদরের এক-ষষ্ঠমাংশ মাত্র। ব্যারোনেস উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপনকারী টাওয়ার হ্যামলেটস-এর বিরোধী টোরি নেতা পিটার গোল্ডস বলেন, দুঃস্থদের জন্য সরকারি অর্থে নির্মিত একটি বাসা থেকে লেডি উদ্দিন বঞ্চিত করেছেন এক নিম্নবিত্ত পরিবারকে। ব্যারোনেস উদ্দিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে দ্য টাইমস পত্রিকা।

তারা তদন্ত-প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এসব বিষয়ে। ওই তদন্তে বেরিয়ে পড়েছে আরও থলের বিড়াল। বাংলাদেশে এক আলিশান মহলের মালিক ব্যারোনেস উদ্দিন। ইতালিয়ান মার্বেল পাথর, টাইলস, মোজাইকে নির্মিত সুদৃশ্য ব্যালকনি সমেত ওই প্রাসাদোপম বাসভবন নির্মিত হয়েছে ১৯৯৮ সালে তার পিয়ার হওয়ার পর। ছাতকের জাওয়া বাজারে নির্মিত ওই ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড।

ব্যারোনেস উদ্দিন অবশ্য সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, জাওয়া বাজারের ভবনটি তার শ্বশুর কিনেছেন ১৯৮০ সালে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.