আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবির সর্ববৃহৎ স্থাপনা গুলো- সবচেয়ে উচু আকাশচুম্বি ভবন সমুহ

আমি যা শুনি এবং যা বুঝি তাই নিশ্বঙ্ক চিত্তে বলতে চাই।

আধুনিক যুগের একটি অন্যতম আবিস্কার হচ্ছে আকাশচুম্বি ভবন গুলো। একটা বিল্ডিং কত উচু পর্যন্ত নির্মান করা যায় এটা নিয়ে উনিশ শতকের শুরুতে বিস্তর গবেষনা শুরু হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাস্তবে এগুলো প্রয়োগ করা যাচ্ছিল না। ফলে এগুলো কাগজে কলমেই রয়ে যায়।

আইফেল টাওয়ার তৈরির পর ব্যাপারটা আর এক ধাপ এগোয়। সব চেয়ে বড় সমস্যা ছিল ভুমিকম্প, ভবনের নিজস্ব ওজন, বাতাসের প্রচন্ড চাপ, এর আকার আকৃতি এগুলো নিয়ে। আস্তে আস্তে নির্মান উপকরন এর উন্নতির ফলে সব গুলো সমস্যা এখন সমাধান হয়ে সৃস্টি হয়েছে বিষ্ময়কর সব স্থাপনা। মজার একটা তথ্য দেই। পৃথিবিতে প্রথম আকাশচুম্বি ভবন এর ডিজাইন করেন কে জানেন? আমাদের বাংলার এক মেধাবি সন্তান।

ফজলুর রহমান খান আসেন দেখি পৃথিবির সবচেয়ে উচু ভবন গুলো। ১০) Kingkey 100 KK100 এর অফিশিয়াল নাম। চিনের সেংজেং শহরে অবস্থিত। এটি একটি অফিস কাম হোটেল বিল্ডিং। এটি সম্পুর্ন ভাবে মিশ্র নির্মান সামগ্রী দিয়ে নির্মিত।

এগুলা একধরনের নতুন ধরনের নির্মান সামগ্রি। আমরা সাধারনত ইট, বালি, সিমেন্ট এগুলো চিনি। এর বাইরেও প্রচুর নির্মান সামগ্রি আছে। যেমন আমাদের দেশে কাঠের বিকল্প হিসেবে প্লাইউড নামক এক ধরনের মিশ্র নির্মান সামগ্রি ব্যবহার করা হয়। (আরো জানতে চাইলে এইখানে গুতা দেন ) ২০০৪ সালে এটির ডিজাইনের কাজ শুরু হয়।

২০০৭ এ এটির কনস্ট্রাকশন এর কাজ শুরু হয়। মোটামুটি ২০১১ তে এর কাজ শেষ হয়। Sir Terry Farrell এর আর্কিটেচারাল ডিজাইন ফার্ম TFP Farrells এর মূল ডিজাইন এ একটা চায়না কোম্পানি Huasen Architectural & Engineering Designing Consultants Ltd. কাজ করে। ( যারা নতুন আর্কিটেকচারাল ডিজাইন এ পরাশুনা করতেছেন বা করার ইচ্ছা আছে উনাকে এখনি গুরু মানা শুরু কইরা দেন। আমার জীবনে দেখা সেরা আর্কিটেক্ট দের একজন) স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করে Arup নামে একটা ব্রিটিশ স্ট্রাকচারাল ফার্ম।

১৪৪৯ ফিট উচ্চতা এবং ২৩৬৮০৬০ স্কয়াফিট ফ্লোর স্পেস নিয়ে দালানটি দারিয়ে আছে। সর্বোমোট ১০০ টি ফ্লোর আছে উপরে আর বেইজে আছে ৪টি। ৬৬ লিফট এর সাহায্যে আপনাকে উপরে তোলার ব্যবস্থা আছে। লিফট গুলার স্পিড ৯ মিটার/সেকেন্ড। ২০০০ গাড়ি পার্কিং এর ব্যববস্থা আছে।

প্রথম ৬৮ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় অফিস স্পেস হিসাবে, এর উপর ২২ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় ৬ তারা বিশিষ্ট লাক্সারিয়াস হোটেল এর জন্য। আর উপরের ৪ টি ফ্লোর ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট হিসাবে। একদম উপরে একটা বাগান আছে। অবাক লাগে এত উপরে কিভাবে এই বাগান টা করল আর ওই গোল শেইপটা আনল। (চিন্তা কইরেননা আমি জানি কেমনে করছে।

পোস্ট বেশি বড় হইহেছে দেইখা লিখলাম না। ) আমার কাছে ভাল লাগছে এ ঢোকার গেটটা। দেখেন কি চমৎকার একটা কাজ করছে। কোন কলাম ছারা শুধু টপ সাপোর্টের মাধ্যমে ঝুলাইয়া দিছে। ৯) Willis Tower (Formerly Sears Tower) পুরান মাল নতুন নামে আসছে।

আম্রিকার ইলিনয়স অঙ্গরাজ্যের বিখ্যাত সিকাগো শহরে অবস্থিত। ১৯৭০ সালে এটার নির্মান কাজ শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে শেষ হয়। পুরাটাই অফিসিয়াল কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। মজার ব্যপার হল এটা নির্মানের পর হতে ২৫ বছর একটানা বিশ্বের এক নাম্বার সবচেয়ে উচা দালান ছিল।

আর্কিটেকচারাল এবং স্টাকচারাল ডিজাইন করে Skidmore Owings & Merrill নামের একটা ডিজাইন ফার্ম। ( আর্কিটেক্টরা দেইখা লইয়েন বসদের কাজ ) সর্বোমোট উচ্চতা ১৪৫১ ফিট এবং ৪৪৭৭৭৮৭ স্কয়ারফিট ফ্লোর স্পেস আছে। ফ্লোর আছে ১০৮ টি আর বেইজমেন্ট আছে ৩ টি ফ্লোর। ১০৪ টা লিফট আছে যাদের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮ মিটার/ সেকন্টে। ৮) Zifeng Tower চায়নারা একটা মাল।

যা বানায় এক একটা বিস্ময় হয়ে থাকে। পুরা নাম Nanjing Greenland Financial Center চিনের নানজিং শহরে অবস্থিত। পুরো ভবনটি হোটেল এবং অফিস এর জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে কম্পোজিট নির্মান সামগ্রি ব্যবহার হয়েছে। ২০০৪ সালে ডিজাইন এর কাজ শুরু হয়।

২০০৫ এ নির্মান কাজ শুরু হয়। ২০১০ এ নির্মান কাজ শেষ হয়। ডিজাইন করেছে Skidmore Owings & Merrill। এই আর্কিটেক্ট ফার্মটা বিশ্বে আকাশ চুম্বি ভবন বানানোর জন্য সেরা। স্ট্রাকচারাল ডিজাইনও এরা করেছে।

ভবটির উচ্চতা ১৪৮০ ফিট আর ফ্লোর স্পেস আছে ১,৪৮০,৩৫০ স্কয়ার ফিট। মাটির উপরে মোট ৬৬ টি ফ্লোর আছে আর বেইজমেন্টে আছে ৫ টি। ৫৪ টা লিফট আছে যাদের গতি ৭ মিটার/সেকেন্ট। গাড়ির জন্য আছে ১২০০ টি কার পার্কিং এর ব্যবস্থা। ৭) Petronas Towers এইদুইটারে চিনেনা এমন পাবলিক খুব কম আছে।

তার পরও বলি মালেয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এই ভবনটি। ভবনটি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম ছিল। মোট ৮৮ টি ফ্লোর এবং ৪,২৫২,০০০ স্কয়ার ফিট ফ্লোর স্পেস নিঢে ভবনদুটি দারিয়ে আছে। পুরো উচ্চতা ১৪৮৩ ফিট। ৭৮ টা লিফট দিয়া এটি কার্যক্রম চালায়।

আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছেন César Pelli । বস আর্কিটেক্ট। এত চমৎকার সব ডিজাইন করেছেন যা বলে শেষ করা যাবেনা। আর স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে Thornton Tomasetti নামের একটা স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ফার্ম। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ফার্ম গুলার মধ্যে অন্যতম।

মজার ব্যপার হচ্ছে এর চুরায় অবস্থিত দুইটা স্টিল বার। এক একটার উচ্চতা ২৪১ ফিট এবং ওজন ১৭৬ টন। একটা চুড়া ৫০ টা অংশে বিভক্ত এবং বানাতে সময় লেগেছে প্রায় ১৯ সপ্তাহ। এখন প্রশ্ন হল এত ওজনের একটা চুরা এত উপরে কেমনে তুলল আর শুধু শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই কি এগুলা করা হয়েছে। উত্তর হল না।

এগুলা ভুমিকম্প বা যে কোন কারনে ভবনের কম্পনের সময় এর ভারসম্য বজায় রাখতে সহযোগিতা করে। ৬) International Commerce Centre আবার চায়না। এইবার হংকং এ। এটাও একটা হোটেল কাম অফিস টাইপ বিল্ডিং। ডিজাইন শুরু হয় ২০০০ সালে।

মুল কাজ শুরু হয় ২০০২ তে আর শেষ হয় ২০১০ তে। আর্কিটেকচারাল ডিজাইন করেছে Kohn Pedersen Fox Associates । এরা বর্তমানে পৃথিবীর সেরা কিছু আর্কিটেকচারাল ফার্ম এর মধ্যে অন্যতম। স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করেছে আবার সেই Arup । ইউনিক এক একটা কাজ করছে তারা।

খুব চমৎকার সর্বোমোট উচ্চতা ১৫৮৮ ফিট। গ্রাউন্ডের উপরে ১০৮ টি ফ্লোর আর নিচে বেইজমেন্ট ফ্লোর আছে ৪টি। ১৭০০ গাড়ি পার্কিং এর সুব্যবস্থা আছে ভবনটিতে। ফ্লোর স্পেস হল ২,৯৫০,০০০ স্কয়ার ফিট। ৮৩ টি লিফট রয়েছে যাদের গতি প্রতি সেকেন্টে ৯ মিটার।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.